, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশ মামলার রায় ২৮ সেপ্টেম্বর

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-২৪ ২৩:৫৪:৪৭ || আপডেট: ২০১৮-০৯-২৪ ২৩:৫৪:৪৭

Spread the love

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশ মামলার রায় ২৮ সেপ্টেম্বর
ফাইল ছবি, ভারতের শিলং হাসপাতাল,
ঢাকা : বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলার রায় জানা যাবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার। শিলংয়ের বিচারিক হাকিম ডি জি খারশিংয়ের আদালত গত ১৩ আগস্ট শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখেছিল। সেই রায় ঘোষণার জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে দেওয়া হয়েছে বলে সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এপি মহন্তে জানান।
তিনি বলেন, “আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেছেন। আমার মক্কেলের পক্ষে আমি এই মামলায় ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি । দেখাযাক সেদিন কী হয়।”

বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে ঢোকার অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারায় তিন বছর ধরে এ মামলা চলছে সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণ হলে এ আইনে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের দাবি, তাকে বাংলাদেশ থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। আর কোন পথে কীভাবে তিনি শিলংয়ে পৌঁছেছিলেন, সে তথ্যও ভারতীয় পুলিশ উদঘাটন করতে পারেনি।

সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহ উদ্দিন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং ২০০১-০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের টেলিকম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও সংসদ সদস্য ছিলেন।

নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে ২০১৫ সালের শুরু থেকে বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা অবরোধ-হরতালের মধ্যে সালাহ উদ্দিনের অন্তর্ধান নাটকীয়তার জন্ম দেয়। সে সময় তিনি ছিলেন দলের পাঁচ যুগ্ম মহাসচিবের একজন।

রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে অজ্ঞাত স্থান থেকে এক মাসের বেশি সময় ধরে বিএনপির নামে বিবৃতি পাঠিয়ে কর্মসূচি দিচ্ছিলেন সালাহ উদ্দিন। এরই মধ্যে ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী।

স্বামীর খোঁজ চেয়ে পরদিন গুলশান থানা ও উত্তরা থানায় জিডি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি বলে সে সময় অভিযোগ করেন হাসিনা আহমেদ। সরকারের ‘নির্দেশে’ আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই সালাহ উদ্দিনকে ‘নিয়ে গেছে’ বলে সে সময় বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে সে অভিযোগ তখন নাকচ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তাকে আটক করতে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

স্বামীর খোঁজ চেয়ে উচ্চ আদালতে যান সাবেক সাংসদ হাসিনা আহমেদ। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, তারাও এই বিএনপি নেতার কোনো খোঁজ জানে না।

ঢাকা থেকে ‘উধাও’ হওয়ার দুই মাস পর ২০১৫ সালের ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে হদিস মেলে সালাহ উদ্দিনের।

ওই ব্যক্তি পুলিশকে বলেন, তার নাম সালাহ উদ্দিন আহমেদ; তিনি বাংলাদেশি। কিন্তু ভ্রমণের কাগজপত্র দেখাতে না পারায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

কিছুদিন কারাগার ও হাসপাতালে কাটানোর পর স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায় জামিন পান সালাহ উদ্দিন। কিন্তু ভারত ছাড়ার অনুমতি না থাকায় স্ত্রী ও কয়েকজন স্বজনের সঙ্গে শিলং শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন।

২০১৬ সালে অসুস্থতার কারণে দিল্লি গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আসেন এই বিএনপি নেতা। পরিবার তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিতে চাইলেও তাতে শিলংয়ের আদালতের সায় মেলেনি।

ফরেনার্স অ্যাক্টের মামলার তদন্ত শেষে মেঘালয় পুলিশ ২০১৫ সালের ৩ জুন সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।

সেখানে বলা হয়, ভারতে এই বিএনপি নেতার আকস্মিক উপস্থিতি ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অভিযোগের বিচার এড়াতে তিনি ভারতে এসেছেন

ওই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ২২ জুলাই শিলংয়ের আদালত সালাহ উদ্দিন আহমেদকে অভিযুক্ত করে তার বিচার শুরু করে।

শিলংয়ের আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আই সি ঝাকে উদ্ধৃত করে নাগাল্যান্ড পোস্টের খবরে বলা হয়, আদালত সালাহ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য রেকর্ড করে এবং তাকে পরীক্ষা করা দুই চিকিৎসকসহ দশজনের সাক্ষ্য শোনে।

সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এপি মহন্তে বলেন, “আমার মক্কেল অসুস্থ। সাড়ে তিন বছরে রায়ের তারিখ চার বার পেছানো হয়েছে। এ আইনের মামলায় এত সময় নেওয়ার ঘটনা বিরল।”
সুত্রঃ শীর্ষ নিউজ।

Logo-orginal