, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

স্বপ্নের চাকুরী না পেয়ে খুবি শিক্ষার্থী সৈকতের আত্নহত্যা

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-২২ ১৯:১০:১৮ || আপডেট: ২০১৮-০৯-২২ ১৯:১০:১৮

Spread the love

স্বপ্নের চাকুরী না পেয়ে খুবি শিক্ষার্থী সৈকতের আত্নহত্যা চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকে সুইসাইড নোট লিখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সৈকত রঞ্জন মন্ডল নামের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক প্রাক্তন ছাত্র। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি মেসের রুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

সৈকত রঞ্জন খুবির খাজা গেটের পূর্ব দিকের ইসলামনগর জামে মসজিদ গলির ডান হাতের একটি দোতলা ভবনের মেসে থাকতেন। তিনি ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে খুবির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজির ছাত্র ছিলেন।

সৈকতের সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, ‘অনেক স্বপ্ন ছিলো চাকরি করবো মার মুখে হাসি ফুটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেল।’

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সৈকতের মেসের পাশের বিল্ডিংয়ের প্রতিবেশী তার জানালা দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে একজনকে ঝুলতে দেখেন। তিনি বিষয়টি আশপাশের লোকজনকে জানান। খবর পেয়ে সৈকতের রুমমেট, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ পৌঁছে দরজার হাতল ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত সৈকতকে উদ্ধার করেন।

দ্রুত সৈকতকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সৈকতের বাবার নাম কৃষ্ণ মন্ডল, মায়ের নাম রানী মন্ডল। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নে।

তার ডায়েরির লেখা থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচেছ, আরো দুই বছর আগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেও চাকরি না পাওয়াতে হতাশার কারণ থেকে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার রুমে বিসিএস প্রস্তুতির বই ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পাওয়া গেছে।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, সৈকত রঞ্জন মন্ডল দুইবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
তার টেবিলের ড্রয়ার থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, তিনি সম্প্রতি হতাশার কবল থেকে বাঁচতে ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছিলেন।
সম্প্রতি সময়ে সৈকত নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরিতে হতাশার কথা লেখা শুরু করেন।

তার রুম থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির একটি পাতায় লেখা রয়েছে- ‘অনেক স্বপ্ন ছিলো চাকরি করবো মার মুখে হাসি ফুটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেল। মার শরীর খুব খারাপ। তবুও আমি খুলনা থেকে পড়ার কথা ভাবছি। বাড়িতে যেতে গেলে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই। না আছে টিউশনি যার উপর নির্ভর করে খুলনাতে চলতেছিলাম। কোনো চাকরিতেও ভয় পাচ্ছি। আজ এতো কঠিন অবস্থা তৈরি হয়ে গেল। আমি শুধু বন্ধুদের কে কি করছে সেই দিকে খেয়াল করে চলছি। আমরা এক মেসে চার বন্ধু থাকতাম। এর মধ্যে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। অন্য তিনজন চাকরি পেয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি কাজ করতে করতে সেটা ছেড়ে দিয়ে খারাপ এর দিকে যাওয়ায় হঠাৎ চাপ বেড়ে যায়। সে জন্য আমি আরো অ্যাবনরমাল বিহ্যাভিয়ার প্রদর্শন করছি। প্রজেক্টের কাজে চাপ থাকায় শরীরটা গড়তে পারিনি। সে জন্য অতিরিক্ত চাপ সহ্য হয়নি।’

নগরীর হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির খান বলেন, সৈকতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।উৎসঃ পরিবর্তন ডটকম।

Logo-orginal