, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

admin admin

চট্টগ্রামে বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা অসীম নিহত

প্রকাশ: ২০১৮-১০-১২ ১৩:৩৮:৪৬ || আপডেট: ২০১৮-১০-১২ ১৩:৩৯:২৫

Spread the love

চট্টগ্রামে বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা অসীম নিহত
ছবি, সংগৃহীত ।
চট্টগ্রামঃ নগরের পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর রেলক্রসিং এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অসীম রায় বাবু নামে এক যুবলীগ নেতে নিহত হয়েছেন।

র‌্যাব জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুপক্ষের গুলাগুলিতে র‌্যাবের দুই কর্মকর্তা ও দুই সদস্য আহত হয়েছেন।
নিহত অসীম রায়ের স্থায়ী ঠিকানা বাঁশখালীর পূর্ব চাম্বল গ্রামে হলেও বর্তমানে তিনি নাজিরপাড়ার তুলা ফ্যাক্টরি রোডের এসকে ম্যানশনে থাকতেন।

র‌্যাব জানিয়েছে, নিহত অসীমের বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। তিনি একজন মাদকবিক্রেতা।
অসীম রায় বাবু ইয়াবাসহ একাধিক মাদক মামলার আসামি। চট্টগ্রামে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল।

পাল্টাপাল্টি গোলাগুলিতে র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের একজন উপ-অধিনায়কসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন, র‌্যাবের উপ-অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়াত জামিল ফাহিম, র‌্যাব কর্মকর্তা মেজর হাসান, ল্যান্স কর্পোরাল শহীদ ও আবু।
তাদের চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।

সুত্রে প্রকাশ, প্রাইভেট কারে চড়ে অসীম রায় বাবু বিবিরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। র‌্যাবের চেকপোস্টে গাড়ি থামানোর সংকেত দিলে অসীম তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় র‌্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি ছোড়ে। পাল্টাপাল্টি গুলিতে অসীম গুলিবিদ্ধ হয়। র‌্যাবেরও চার সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়।

ছবি, সংগৃহীত ।

ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ঘটনার সময় অসীম রায় বাবুর মাদক ব্যবসার সহযোগী গাড়িচালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে জানান মিমতানুর।

ঘটনার পর র‌্যাবের একজন সদস্যকে কড়া প্রহরায় অসীম রায় বাবুর গাড়িটি চালিয়ে নিতে দেখা গেছে। গাড়ির চালকের বামপাশে যাত্রীর সিটের সঙ্গে লাগোয়া কাচ ভাঙ্গা দেখা গেছে। তবে গাড়ির অন্য কোথাও তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দেখা যায়নি।

অসীম রায় বাবু নগর পুলিশের তালিকায় ডাইল বাবু হিসেবে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল গ্রামের গুরুসদয় রায়ের ছেলে। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের মোহাম্মদীয়া প্লাজায় তার একটি দোকান আছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ৫ মার্চ ও ১৩ মার্চ অসীম রায় বাবুর বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মাদক আইনে দুটি মামলা দায়ের হয়। ১ মার্চ মারামারি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল।

চলতি বছরের ৫ মার্চ মধ্যরাতে নগরীর নন্দনকাননে কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের বাসা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে অসীম রায় বাবু। এই ঘটনায় বাবরের ভাই বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ ও অসীমের ঘনিষ্ঠজনদের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে এমইএস কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন অসীম। তখন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের ক্যাডার হিসেবে পরিচিতি পান। ওই বছরই অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর তার সাত বছরের জেল হয়।

যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে দীর্ঘদিন নগরীর নন্দনকানন, রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ আশপাশের এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে তোলেন। ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগরীর আলকরণ ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

তিন বছর আগে বাবরের গ্রুপ ছেড়ে যান অসীম রায় বাবু। এর আগেই অসীম ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে।

সূত্রমতে, মূলত বাবরের বন্ধু কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য গাজী জাফরউল্লাহ’র সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে অসীম রায় বাবু আলাদা একটি বলয় তৈরি করেন। নিজেকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। নিজেকে যুবলীগ নেতা হিসেবেও পরিচয় দিতে থাকেন। এরপরই অসীম রায় বাবু আরও বেপরোয়া আচরণ শুরু করেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

Logo-orginal