, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Avatar rtm

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু আর নেই

প্রকাশ: ২০১৮-১০-১৮ ১১:২৯:১৭ || আপডেট: ২০১৮-১০-১৮ ১১:২৯:১৭

Spread the love
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু আর নেই

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম: রূপালি গিটার ফেলে বহুদূরে চলে গেলেন ব্যান্ডসংগীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু। যেখান থেকে ফেরা যায় না কখনও। বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে মৃত্যুবরণ করেছেন গুণী এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর খবরে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সংগীতাঙ্গনের অনেকে হাসপাতালে ভিড় করেন। কণ্ঠশিল্পী সামিনা চৌধুরী, দলছুট ব্যান্ডের বাপ্পা মজুমদার, উপস্থাপক হানিফ সংকেত, অভিনেতা শংকর সাঁওজাল, আর্টসেল ব্যান্ডের লিংকনকে দেখা গেছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাতে এলআরবি ব্যান্ড নিয়ে রংপুরে সংগীত পরিবেশন করেছেন আইয়ুব বাচ্চু। বৃহস্পতিবার সকালে তারা ঢাকায় ফেরেন। কিন্তু আইয়ুব বাচ্চু অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সকাল ৮টার দিকে বাসায় স্ট্রোক করেন তিনি। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আনুমানিক সকাল ৯টায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর ফুসফুসে পানি জমার কারণে স্কয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হয়েছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে আবারও গানে ফেরেন। কিন্তু এবার হুট করেই নিভে গেলো তার জীবনপ্রদীপ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক। গিটারের জাদুকর হিসেবে আলাদা সুনাম ছিল তার। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত। আইয়ুব বাচ্চুর নিজের একটি স্টুডিও আছে। ঢাকার মগবাজারে অবস্থিত এই মিউজিক স্টুডিওটির নাম এবি কিচেন।

১৯৭৮ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে সঙ্গীতজগতে আইয়ুব বাচ্চুর যাত্রা শুরু হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ বাজারে আসে ১৯৯২ সালে। এটাই দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম। এলআরবির অন্য অ্যালবামগুলো হলো ‘সুখ’ (১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘ফেরারী মন’ (১৯৯৬), ‘স্বপ্ন’ (১৯৯৬), ‘যুদ্ধ’ (২০১১), ‘স্পর্শ’ (২০১৩)।

আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘চলো বদলে যাই’। এর কথা ও সুর তারই। শ্রোতাপ্রিয় গানের তালিকায় আরও রয়েছে ‘শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’, ‘সুখ’, ‘চলো বদলে যাই’, ‘রূপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু।

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ হলো তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। তার সাফল্যের শুরুটা হয় দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’র (১৯৮৮) মাধ্যমে। ১৯৯৫ সালে বাজারে আসে তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। এর প্রায় সব গানই জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, ‘আমিও মানুষ’ গানগুলো।

তার অন্য একক অ্যালবামগুলো হলো ‘সময়’ (১৯৯৮), ‘একা’ (১৯৯৯), ‘প্রেম তুমি কি’ (২০০২), ‘দুটি মন’ (২০০২), ‘কাফেলা’ (২০০২), ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ (২০০৮), ‘বলিনি কখনো’ (২০০৯), ‘জীবনের গল্প’ (২০১৫)।

রক ঘরানার গানের এই শিল্পী আধুনিক আর লোকগীতিতেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন আইয়ুব বাচ্চু। বেশকিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া প্রথম গান ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’। এছাড়া ‘আম্মাজান’ ছবির শিরোনাম গানও জনপ্রিয়।

Logo-orginal