admin
প্রকাশ: ২০১৮-১০-১৯ ১২:৪৪:৫৩ || আপডেট: ২০১৮-১০-১৯ ১২:৪৪:৫৩
চট্টগ্রামঃ জেলার রাউজানের গহিরা চৌমুহনী এলাকায় ফখরুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবককে জবাই করে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ফখরুল গহিরার মোবারকখীল গ্রামের জনৈক তাজুল ইসলামের পুত্র।
স্থানীয় জনাধারণ ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যেই বাসায় ফখরুলকে জবাই করার চেষ্টা হয়েছিল, সেই বাসাটিতে থাকতো ফখরুলের তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী উম্মে হাবিবা মায়া ও তার মা রাশেদা বেগম। মায়া গহিরা ইউনিয়নের দলইনগর গ্রামের প্রবাসী আবু বক্কর বাবুলের কন্যা। জানা যায়, গত রমজানের আগে ফখরুলের সাথে মায়ার বিয়ে চূড়ান্ত হয়। কিন্তু কনের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। পরে তারা প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দুজন বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর মায়া শ্বশুড়বাড়ি কাটিয়ে এক সময় বাপের বাড়িতে যায়। তখন বিভিন্ন অজুহাতে তিনি আর স্বামীর ঘরে আসেনি। এই নিয়ে তাদের মধ্যে তিক্ততার সৃষ্টি হয়। দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে।
এক সময় স্বামীকে তালাক দেয় মায়া। স্বামীর কাছ থেকে দেন মোহর আদায় করতে আটকে রাখে স্বামীর ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট। এই নিয়ে হয় শালিস দরবার। পরে সামাজিক বৈঠকে দেন মোহর পরিশোধের সমঝোতায় ফখরুলের পক্ষে মায়ার দেন মোহর বাবদ একটি ব্যাংক চেক প্রদান করে। এরপর দুই পক্ষে চুক্তিপত্র হলে পাসপোর্ট ফেরত দেয়। পাসপোর্ট পেয়ে ফখরুল ওমানে চলে যায়। মায়ার পরিবারের দাবি ওই চেকে তারা টাকা উত্তোলন করতে পারেনি।
কিছুদিন আগে ফখরুল দেশে ফিরলে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাথে তার আবার যোগাযোগ বাড়ে। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মায়াদের বাসায় যায়। সেখানেই তিনি এই ঘটনার শিকার হন। খবর নিয়ে জানা যায়, মায়ারা গহিরার আবু তাহের ভবনের তৃতীয় তলার ভাড়া বাসায় রয়েছে প্রায় দুই বছর থেকে। সন্ধ্যায় ওই বাসায় উঠার কিছুক্ষণ পর প্রতিবেশিরা শুনে বাসার ভিতর হৈ চৈ। প্রতিবেশিরা ছুটে গেলে জানানো হয় কয়েকজন বাসায় এসে তাদের আগুনে পুড়ে মারার চেষ্টা করছিল। এই বক্তব্য পেয়ে প্রতিবেশিদের কেউ কেউ এগিয়ে গিয়ে দেখে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় ফখরুল পড়ে কাতরাচ্ছে। এসময় মায়ার মার হাতে সামান্য পোড়া চিহ্ন দেখা যায়।
এলাকার লোকজন আহত ফখরুলকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিক ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এলাকার লোকজন ঘটনা জানিয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মায়া ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে রাউজান থানার এসআই নুরুন নবী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন দুই পক্ষের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে।