, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

আজ ৫৩ বছরে পদার্পণ করল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ: ২০১৮-১১-১৮ ১২:৫৭:২৪ || আপডেট: ২০১৮-১১-১৮ ১২:৫৭:২৪

Spread the love

আজ ৫৩ বছরে পদার্পণ করল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম: ৫২ পেরিয়ে ৫৩ বছরে পা রাখলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর কিছু শিক্ষানুরাগী মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিবেদন বাংলানিউজের ।

মাটির সড়ক আর একটি অনুষদে ৪টি বিভাগের (বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও অর্থনীতি) মাত্র ৮ জন শিক্ষক, ২০৪ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিল এ বিদ্যাপীঠের। যত সময় এগিয়েছে, বেড়েছে পড়ুয়ার সংখ্যা। পরিবর্তন ঘটেছে এক সময়ের মাটির সেই সড়কের। কয়েকটি ভবনের বদলে আজ সেখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে শতাধিক ভবন।

৫২ বছর পথ চলতে গিয়ে কতো মানুষ তৈরি করে ফেলেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়, তার কোনও ইয়ত্তা নেই। দেশের একমাত্র নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তার গ্রামীণ ব্যাংক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রাম থেকেই যাত্রা শুরু করে।

প্রখ্যাত গণিতবিদ, পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ ড. জামাল নজরুল ইসলামও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। সাহিত্যিক আবুল ফজল ও বর্তমান ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য। এছাড়া সাবেক বিচারপতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ঢাকা উত্তরের সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত আনিসুল হকের মত বিশেষ ব্যক্তিরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।

সাহিত্যিক সৈয়দ আলী আহসান, একুশে পদক জয়ী সাহিত্যিক আনিসুজ্জামান, আহমদ শরীফ, চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর, চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরী, সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদের মত ব্যক্তিরাও এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।

আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোকচিত্র শিল্পী ফয়সাল আজিমও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। সর্বশেষ ২০১১ সালে ব্যাঙের নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তরুণ বিজ্ঞানী সাজিদ আলী হাওলাদার। তিনিও ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬টি বিভাগ ও ৭টি ইনস্টিটিউটে আছে প্রায় ২৮ হাজারের মত শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের (৮টি ছেলেদের ও ৪টি মেয়েদের) জন্য রয়েছে সর্বমোট ১২টি আবাসিক হল। নগরের বাদশা মিয়া রোডে আছে চারুকলা ইনস্টিটিউটের জন্য একটি হোস্টেল।

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন বাসা ও কটেজে থাকছে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী। বাকি ১৭ হাজার শিক্ষার্থী থাকছে শহরের বিভিন্ন বাসা ও মেসে। নগরের এসব শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে চলছে একজোড়া শাটল ও একটি ডেমু ট্রেন।

প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার শিক্ষার্থী শাটল ট্রেন ব্যবহার করে। তাই শিক্ষার্থীদের নানান স্মৃতি মিশে আছে এই শাটল ট্রেনটিকে ঘিরে। শাটল ট্রেনের বগির দেয়াল চাপড়ে গাওয়া গান, প্রিয় ক্যাম্পাস, কাটা পাহাড়ের রাস্তা, ঝুপড়ি, ঝুলন্ত ব্রীজে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি আজও তাড়িয়ে বেড়ায় সাবেক শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত স্টিকার ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিতে ব্যবহার করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আসহাবুল রহমান শোয়েব বাংলানিউজকে বলেন, এইতো সেদিন বন্ধুদের নিয়ে ক্লাস করেছি, আড্ডা দিয়েছি। সেই ক্লাস, শাটল ট্রেন, ঝুপড়ি-এখনো মনে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিনে সবাইকে শুভেচ্ছা। ভালো থাকুক, ভালোবাসার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

চবির ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। রোববার (১৮ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে নানা অয়োজনের মধ্যদিয়ে।

Logo-orginal