admin
প্রকাশ: ২০১৮-১১-০৯ ০৯:০৪:১৬ || আপডেট: ২০১৮-১১-০৯ ০৯:১০:২৬
চট্টগ্রামঃ ফেসবুকে সঙ্গীত শিক্ষিকা মনিকা বড়ুয়া রাধার (৪৫) সাথে পরিচয় হয় ভারতের নাগরিক ব্যবসায়ী কমলেশ কুমার মল্লিকের (৩৫) সাথে। পরিচয় প্রেমে রূপ নিলে দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। নিজের ইচ্ছায় ভারত গিয়েছিলেন মনিকা। বাংলাদেশে স্বামী ও দুই সন্তান ফেলে ভারতে গিয়ে বিয়ে করে নাম বদলে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন তিনি।
চট্টগ্রামে আলোচিত মনিকা বড়ুয়া রাধা (৪৫) নিখোঁজ ও অপহরণ নাটকের রহস্য উদঘাটন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর দামপাড়া পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মনিকা রাধার কথিত অপহরণ নাটকের বিস্তারিত তুলে ধরেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।
চট্টগ্রামের সাংবাদিক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবুর স্ত্রী মনিকা গত ১২ এপ্রিল নগরীর লালখান বাজারের হাই লেভেল রোডের বাসা থেকে গান শেখানোর জন্য বের হয়েছিলেন, এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ বিষয়ে দেবাশীষ গত ১৩ এপ্রিল নগরীর খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১২ এপ্রিল শ্যামলী পরিবহনের গাড়িতে মনিকাকে নিয়ে বেনাপোল সীমান্তে যান কমলেশ। পাসপোর্ট-ভিসা না থাকায় সেখানে থেকে অবৈধভাবে তাকে সীমান্তের ওপারে ভারতে নিয়ে যান। কলকাতায় একটি মন্দিরে বিয়ে করেন তারা। পরে সিদ্ধেশ্বরী এলাকার একটি ফ্যাটে সংসার পাতেন। মনিকা নাম বদলে নেন অনামিকা মল্লিক। স্বামীর সূত্রে স্থানীয় আধার কার্ডও পান তিনি।
তদন্তের সূত্র ধরে কমলেশের খোঁজ পান বলে জানান আমেনা বেগম। জানা যায়, ব্যবসায়ের কাজে ৩ নভেম্বর বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। পরে গত ৪ নভেম্বর ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দেন তিনি। কমলেশের মাধ্যমে মনিকাকে কৌশলে সাতীরা সীমান্ত দিয়ে ৬ নভেম্বর বাংলাদেশে আনা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম আরো জানান, মনিকা অপহরণ হয়েছেন অভিযোগ করে তার খোঁজ পেতে যে বোনেরা এতদিন মানববন্ধন করেছেন তারা সবই জানতেন বিষয়টি। ভারত থেকে বোনদের সাথে যোগাযোগ করতেন মনিকা। এমনকি বাড়ি ছাড়ার আগে দুই মেয়েকে বলেও যান তিনি। কিন্তু পুরো তদন্তে মনিকার মেয়ে বা বোনরা কেউ পুলিশকে কোনো সহযোগিতা করেননি।
তিনি বলেন, মনিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, অপহরণ নয়, তিনি স্বেচ্ছায় ভারতে গিয়েছিলেন। যেহেতু তার খোঁজে অপহরণ মামলা হয়েছে, সেহেতু মনিকা এখনো পুলিশের কাছে ভিকটিম। একই সাথে তিনি আসামি। সংবাদ সম্মেলনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার উত্তর মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত উপকমিশনার উত্তর মো: কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মনিকা রাধা চট্টগ্রামের সঙ্গীতাঙ্গনেও একজন পরিচিত মুখ। তিনি সাংবাদিক দেবাশীষ বড়ুয়া স্ত্রী এবং চট্টগ্রাম লিটল জুয়েলস স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষক। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জননী। বড় কন্যা একাদশ শ্রেণিতে ও ছোট কন্যা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
মনিকা পুলিশের কাছে ভিকটিম ও আসামি হওয়ায় তাকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়নি।