, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

আপনারাতো দেননি, এই লেন হাইকোর্টের কাগজ

প্রকাশ: ২০১৮-১২-১২ ১০:২৯:৪৯ || আপডেট: ২০১৮-১২-১২ ১০:২৯:৪৯

Spread the love

নির্বাচন কমিশন ভবনের প্রবেশপথের ঠিক সামনে মোটরসাইকেল থেকে নেমে সোজা চলে গেলেন অভ্যর্থনা ডেস্কে। গিয়েই আলোচিত প্রার্থী হিরো আলম বলে উঠলেন, ‘আপনেরা তো দেননি, এই লেন হাইকোর্টের কাগজ! খুব ভোগান্তি দিলেন আপনেরা।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা হিরো আলমের প্রার্থিতা অবৈধ বলে ঘোষণা করেন। তারপর তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। আপিল শুনানিতেও হেরে যান তিনি।

এর পর ইসি থেকে রায়ের সার্টিফায়েড কপি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন হিরো আলম। উচ্চ আদালত থেকে রায়ের কপি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে আসেন তিনি।

অভ্যর্থনা ডেস্কের কর্মকর্তা হিরো আলমের রায়ের কপি যাচাই করেন। পরে তিনি জমা না নিয়ে হিরো আলমকে ওপরে গিয়ে জমা দিতে বললেন। দেরি না করে দ্রুতই দ্বিতীয়তলায় চলে যান হিরো আলম। সেখানে যাওয়ামাত্র ইসির এক কর্মকর্তা বলে ওঠেন, ‘আরে হিরো আলম ভাই, কেমন আছেন? আপনি এলে লোকজনে ভরে যায়, অথচ অন্য কারো সঙ্গে এত লোক আসে না।’ উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘সবই আপনাদের ভালোবাসা ভাই। দ্রুত সই করে লেন, ভালো করে দেখেশুনে সই করে লেন!’

তখন পাশ থেকে ইসির আরেক কর্মকর্তা হিরো আলমকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনার সাহস আছে ভাই, আপনি পারবেন।’ উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘সাহস আছে বলেই তো আমাকে সিংহ মার্কা দিল ইসি। এখনই মরে গেলেও আমার আর কোনো কষ্ট থাকবে না। জীবনে যা পাওয়ার, সব পাইছি। বাকিটুকু বেঁচে থাকব সাধারণ জনগণের জন্য।’

ডেসপ্যাচে রায়ের কপি দেওয়ার পর এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন হিরো আলম। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজ রাতেই বগুড়ায় চলে যাব। কাল থেকে প্রচার শুরু করব। আমার আর সইতেছে না! ঢাকায় থেকে আমার কোনো কাজ নেই। নির্বাচন কমিশন আমাকে খুব প্যারা দিল। শুনানিতে যখন ইসি আমাকে বাদ দিল, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম হাল ছেড়ে দেওন যাবে না। বহুত লোকের কথা সহ্য করে এই পর্যন্ত এসেছি। থেমে থাকা যাবে না, হাইকোর্টে যেতে হবে। শেষমেশ তো ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়েই ছাড়লাম।’

‘আমি সাধারণ মানুষের নেতা হতে চাই। আল্লাহ আমাকে তৌফিক দিয়েছেন ভোটের লড়াই করতে। আমি আশা করি, আল্লাহ আমাকে সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবেন। অনেক কথার জবাব আল্লাহ কিন্তু এরই মধ্যে দিয়ে দেছেন। আমি কিছুই বলব না। যারা আমাকে থামাতে চেষ্টা করে যাচ্ছে, আমি তাদের কিছুই বলব না। ৩০ তারিখে আমার ভোটাররা জবাব দিয়ে দেবে।’

ভোটাররা আপনার পক্ষে কতটা সাড়া দেবেন বলে ধারণা—এমন প্রশ্নে হিরো আলম বলেন, ‘আমি তো জানি না, কতজন ভোটার আমাকে ভোট দেবে। তবে আমার অনেক ভক্ত আছে। আমাকে অনেকে ফোন দিচ্ছে গ্রামে যাওয়ার জন্য। সবাই আমার সঙ্গে কাজ করবে বলে ডাকছে আমাকে। আর আমি সবার দোয়ায় জিতে যাব বলে মনে করছি এখন পর্যন্ত।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোট নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার ব্যাপারে ইন্টারনেট দুনিয়ায় বাংলা ভাষাভাষি মানুষের কাছে আলোচিত হিরো আলম বলেন, ‘আমাকে অনেকে অনেক বাজে কথা বলেন ফেসবুকে। সামনে তো বলার সাহস পায় না। তবে আমি এসবে মন দেই না। কারণ আমি জানি, আমি অনেকের মতো সুদখোর না, ঘুষ খাই না, আমি মার্ডার করি না, ব্যাংকের টাকা মারি না, আমি কাউকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়েও দেই না। বরং আমি এমপি নির্বাচিত হলে এসব বন্ধ করার চিন্তা করব। আমি একা তো পারব না, কিন্তু অনেক এমপিকে এসব নিয়ে চিন্তা করতে বলব। একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। যদি আমরা চাই।’

হিরো আলম আরো বলেন, ‘আমি যদি হেরেও যাই, তবুও আমি চেষ্টা করব সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করার। এইবারই যে শ্যাষ, তা তো না। আগামীতে বেঁচে থাকলে আবারও দাঁড়ানো যাবে এমপি পদে। তবে ফেলের কথা আমি ভাবছি না এখন।’

Logo-orginal