admin
প্রকাশ: ২০১৮-১২-০৪ ২৩:১৬:৪৬ || আপডেট: ২০১৮-১২-০৪ ২৩:১৬:৪৬
দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরুতে কয়েক হাজার গরিব বাংলাভাষীকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে শহরের পৌর কর্তৃপক্ষ, যেখানে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। সংবাদ বিবিসি বাংলার।
সোমবার বিবিসি বাংলা’তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্ছেদ-আতঙ্কে থাকা এই বাঙালিদের বেশিরভাগই মুসলিম এবং তারা নিজেদেরকে পশ্চিমবঙ্গেরই লোক বলে দাবি করেছেন। তাদের কাছে নিজেদেরকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করার মতো পরিচয়পত্র থাকলেও বিজেপির নেতা-বিধায়করা বলছেন, সেগুলো বেশিরভাগই জাল এবং তাদের কর্ণাটক থেকে উচ্ছেদ করতেই হবে।
এদিকে এই বাঙালিদের বেঙ্গালুরু থেকে উচ্ছেদ করতে সোমবার পর্যন্ত চূড়ান্ত সময়সীমা থাকলেও বামপন্থীদের আন্দোলনের মুখে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়েছে। ভারতের আসামে এনআরসি’র চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর থেকেই দেশটিরর বেশকিছু অঞ্চলের অবৈধ বিদেশিদের উচ্ছেদের যে হিড়িক পড়েছে, সেই তালিকায় সবশেষ যোগ দিয়েছে বেঙ্গালুরু।
আরও পড়ুনঃ ৭ বছরের শিশুর ইউটিউব থেকে আয় শত কোটি টাকা
তিন মাস আগে ভারতের প্রথম সারির একটি টিভি চ্যানেলের খবরে বলা হয়, বেঙ্গালুরুর নানা বস্তিতে হাজার হাজার ‘বাংলাদেশি’ অবৈধভাবে বাস করছেন এবং তারা প্রায় প্রত্যেকেই বেআইনিভাবে জুটিয়ে নিয়েছেন ভারতীয় পরিচয়পত্র। এই চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে একজন বাঙালিকে বলতে শোনা যায়, বাংলাদেশে জমি ও কাজ নেই বলেই তারা বাধ্য হয়ে সপরিবারে ভারতে চলে এসেছেন, পয়সা দিয়ে জোগাড় করে নিয়েছেন ভারতের আইডি।
এরপর থেকেই বেঙ্গালুরুতে ‘বাংলাদেশি’ উচ্ছেদ অভিযান ধীরে ধীরে তুঙ্গে ওঠে। আর এর নেতৃত্ব দিতে থাকেন মহাদেবপুরার বিজেপি এমএলএ এবং রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী অরবিন্দ লিম্বাভালি। আরএসএসের এই প্রচারক কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসেবেই বরাবর পরিচিত।
লিম্বাভালি সম্প্রতি এক টুইট-বার্তায় ঘোষণা করেন, ‘অবৈধ বাংলাদেশিরা’ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিরাট হুমকি। কোনও শিল্প মালিক তাদের কারখানায় বা সাইটে কাজে লাগালে কড়া শাস্তি পেতে হবে। এদের উচ্ছেদ করার জন্য শহরের সোনডেকোপ্পাতে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম এমপি মহম্মদ সেলিম বলেন, এরা আসলে নদীয়া, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার লোক। যখন থেকে বিজেপি সভাপতি উইপোকার মতো ফ্যাসিস্ট ভাষা ব্যবহার করে বাঙালিদের আক্রমণ করা শুরু করেছে, তখন থেকেই এদের ওপর বিপদ নেমে এসেছে। ছোটবড় বিজেপি নেতারাও চরম উৎসাহে বাঙালি উচ্ছেদে নেমে পড়েছে।
তবে বিজেপির দাবি, কর্ণাটক রাজ্যে নাকি অন্তত চার লাখ ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ বাস করছেন ও স্থানীয় মানুষের রুটিরুজিতে ভাগ বসাচ্ছেন। তাই এই ইস্যুতে আপোষ করা সম্ভব নয়।