, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

Avatar rtm

১০দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে জেএসডি

প্রকাশ: ২০১৮-১২-০৬ ১৯:৪৪:২৩ || আপডেট: ২০১৮-১২-০৬ ১৯:৪৪:২৩

Spread the love

১০দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে জেএসডিআসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি। আজ ৬ ডিসেম্বর, বিকেল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জ-৩ এ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলটি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন জেএসডি সভাপতি জনাব আ স ম আবদুর রব। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেএসডি সাধারণ সম্পাদক জনাব  আবদুল মালেক রতন। সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ গোফরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সহ-সভাপতি এ্যাড. কে এম জাবির, আবদুল জলিল চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আনছার উদ্দিন, এ্যাড. সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল, মোশারফ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক রাজাসহ দলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল মালেক রতন উপস্থাপিত লিখিত নির্বাচনী ইশতেহার নিম্নরূপঃ

প্রিয় দেশবাসী ভাই ও বোনেরা
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
দীর্ঘ সংগ্রাম-আন্দোলন আর রক্তদানের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হলেও আজ পর্যন্ত শোষণ, নির্যাতন-নিপীড়নের উপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামো বিলোপ করে গণতান্ত্রিক-মানবিক-ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মানে কোন কার্যকর উদ্যোগই নেয়া হয়নি। বরং উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও আইন প্রণয়ন ব্যবস্থা পূর্নবহাল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে রাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। গত ৪৭ বছরে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় স্বাধীন দেশের উপযোগী কোন পরিবর্তন  আনা হয়নি। পরাধীন আমলের অনুকরণেই পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে পাকিস্তানী আমল আর স্বাধীন বাংলাদেশ আমলের উল্লেখযোগ্য কোন পার্থক্য চোখে পড়ে না। উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা না বদলিয়ে কেবল শাসক বদল-এক ধরণের পরাধীনতার নামান্তর। ১৮৬১ সালের বৃটিশ প্রনীত উপনিবেশিক আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনার কারণে স্বাধীনতার নামে অভ্যন্তরীন পরাধীনতার শৃংখলেই জাতিকে আবার আবদ্ধ করা হয়েছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের কাংখিত আদর্শ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন  ব্যাহত হয়েছে।

প্রিয় দেশবাসী
উপনিবেশিক ভাবধারা থেকে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল বা নিয়ন্ত্রণের রাজনীতি দেশকে সংঘাত-জিঘাংসা ও নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ভোট বিহীন গণতন্ত্র চালু হওয়ায় প্রজাতন্ত্রের স্বীকৃত জনগণের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়েছে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনআকাংখা এবং ভোটাধিকারের মর্যাদা সুরক্ষার জন্যই ১৯৭১ সালে একটি সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে  বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে জনগণের ভোটাধিকারকে হরণ, লুন্ঠন করে রাষ্ট্র ক্ষমতা অবৈধভাবে দখলে রাখছে সরকার। শুধুমাত্র ভোটারবিহীন নির্বাচন করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না সরকার বরং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আবারও নিয়ন্ত্রণ, কারচুপি, কেন্দ্র দখলের জন্য বীরত্ব প্রদর্শন শুরু করেছে। তাদের এই বীরত্ব হচ্ছে জনগণকে ক্রীতদাসে পরিনত করা, প্রশাসন পুলিশসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীকে অবৈধ, নিষ্ঠুর ও বেআইনী কর্মকান্ড দ্বারা কলুষিত করা, আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে বিদেশীদের হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেয়া। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর অবৈধ, অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা সংহত ও দীর্ঘস্থায়ী করতে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যে পুলিশ বাহিনী জনগণের অধিকারকে সুরক্ষা দেয়ার কথা সেই পুলিশ বাহিনীকে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। জনগণের অধিকারকে গুলি ও বুটের তলায় পিষ্ট করা হয়েছে। ভোটার বিহীন, গণতন্ত্র বিহীন রাষ্ট্রে সাধারণ মানুষ প্রজা হিসেবে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে-নাগরিক হয়ে উঠতে পারেনি। গণতন্ত্রের প্রসার-বিকাশ ও অংশীদারিত্বই জনগণকে প্রজা থেকে নাগরিকে পরিনত করে।

জনগণ আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, প্রতিকারবিহীন গুম-খুন-অন্যায়ের শিকার হচ্ছে। অমানবিকতা, নিষ্ঠুর পাশবিকতাই রাষ্ট্রের স্থায়ী ব্যবস্থা হয়ে যাচ্ছে। মানবিক মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবক্ষয় ঘটেছে ভয়ংকরভাবে। বিদ্বেষ-প্রতিহিংসা-জিঘাংসার রাজনীতি সমগ্র জাতিকে আতংকিত করে ফেলছে। সামাজিক-অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করছে। অথচ রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক মুক্তির চেতনাই ছিলো রাষ্ট্রের মৌল ভিত্তি। দেশে সংবিধান বিদ্যমান অথচ সাংবিধানিক শাসন বিন্দুমাত্র নেই। নতুন নতুন কূটকৌশলে সংবিধানের আওতায় রাষ্ট্রকে অসাংবিধানিক পন্থায় পরিচালিত করা হচ্ছে।

প্রিয় দেশবাসী
দেশে এখনও ২ কোটি ৩৮ লাখ লোক বেকার, অর্ধ বেকার ৭৯ লাখ, দিন মজুর ২১ লাখ, প্রান্তিক কৃষক ৪ কোটি ও শিশু-কিশোর ৭ কোটি, আর কয়েক বছর পর লোক সংখ্যা দাঁড়াবে ২৫ কোটি। তখন বেকারের সংখ্যা দাড়াবে ৬ কোটি। সেসব বিবেচনায় বেকারত্বের অবসানসহ অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা না করে উন্নয়নের নামে বিপুল অপচয় করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতে ।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা
জনগণের ভোটাধিকার প্রশ্নে সংকট চুড়ান্ত আকার ধারণ করছে। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে সরকারের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে দায়িত্ব পালন করে। ফলে নির্বাচনে ধন-সম্পদের প্রাচুর্য স্তরে স্তরে পরিবারতন্ত্র ও পেশী শক্তির জুলুম-জবরদস্তি প্রদর্শনী হয়, জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়, কিন্তু জনগণের অভিপ্রায় প্রকাশিত হয় না। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের সকল প্রকার অন্যায় নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিকারহীন অবস্থায় জনগণ অসহায় হয়ে পড়েছে, আইনের সুরক্ষা নিতে পারছে না। এসব প্রশ্নে জনগণ খুবই উদ্বিগ্ন। জামিনের অধিকার খর্ব, রিমান্ডের নামে বর্বরতা, গায়েবি মামলা, রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তিকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। অন্যদিকে জনগণের অধিকার, আর্থ-সামাজিক সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, জাতীয় সংহতি ও রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য সময় উপযোগী রাজনীতির অভাব ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় জনগণের রাজনৈতিক অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা

কোনটাই রক্ষিত হচ্ছে না। ফলে বিশ্ব ও আঞ্চলিক রাজনীতির প্রভাব বলয় যথাযথভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং পরাশক্তির দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে রাষ্ট্রকে চরম সংকটে ফেলে দিয়েছে। বিদ্যমান সরকার জনবিচ্ছিন্ন ও তার বৈধতার নৈতিক সংকটে পড়ে পরা শক্তিসমূহের সাথে আপোষ-সমঝোতার পথ গ্রহণ করছে। এই বিপদগামী রাজনীতি থেকে দেশকে উদ্ধার করা-পুনর্গঠিত করা-পুনঃনির্মান করা জরুরী।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা
এখন আমাদের প্রয়োজন অভ্যন্তরীন পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে দেশ উপযোগী শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। যে শাসন ব্যবস্থায় শ্রম-কর্ম-পেশাজীবি জনগণের সকল অংশ উৎপাদন-উন্নয়ন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত হতে পারে-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানে অবদান রাখতে পারে। এই শ্রম-কর্ম-পেশার জনগণের অংশীদারিত্বপূর্ন রাজনীতির রাষ্ট্রকাঠামো ও শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে বিদ্যমান দলতান্ত্রিক-গণতন্ত্র সম্প্রসারিত গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটবে। দেশ শাসনের অধিকার-ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি শ্রমজীবি-পেশাজীবিদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হবে। জনগণের সকল অংশের প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান বা কাঠামো নির্মান না হলে স্বাধীনতা-গণতন্ত্র কোনদিন অর্থবহ হতে পারে না। একুশ শতকের উপযোগী দেশজ রাজনৈতিক মডেল নির্মানে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছেঃ

১। কেন্দ্রীয় সরকার হবে ফেডারেল পদ্ধতির-
ক) রাষ্ট্রপতি থাকবেন রাষ্ট্র প্রধান।
খ) সংসদীয় ব্যবস্থা থাকবে, প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান ও নির্বাহী প্রধান থাকবেন।
গ) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন।
ঘ) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দুই মেয়াদে নির্দিষ্ট করা।

২। ‘নিম্নকক্ষ’ ও ‘উচ্চকক্ষ’ সমন্বয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হবে-
ক) নিম্ন কক্ষ হবে ৩০০ সদস্য বিশিষ্ট ও উচ্চকক্ষ হবে ২০০ সদস্য বিশিষ্ট। উচ্চকক্ষে শ্রম-কর্ম-পেশা ও নারীদের প্রতিনিধি, ক্ষুদ্রজাতি নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠির প্রতিনিধি ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।
খ) জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন।

৩। বাংলাদেশে ৯টি প্রদেশ গঠন করা। প্রদেশে নির্বাচিত ‘প্রাদেশিক পরিষদ’ ও ‘প্রাদেশিক সরকার’ থাকবে-
ক) ক্ষুদ্রজাতিসত্ত্বার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান।
খ) উপজেলা ব্যবস্থাকে নির্বাচিত ও কার্যকর স্বশাসিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় রূপদান করা।
গ) মেট্রোপলিটন এলাকায় মেট্রোপলিটন সরকার গঠন।
ঘ) সকল স্তরের স্থানীয় সরকার নির্বাচন অদলীয়ভাবে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। স্থানীর সরকার ব্যবস্থা মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত করা।

৪। ক) জাতীয় সংসদের ‘উচ্চকক্ষ’ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা।
খ) প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।

৫। ক) স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন।
খ) নির্বাচন কমিশন হবে পৃথক ও পুর্নাঙ্গ।
গ) আস্থা-অনাস্থা ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
ঘ) প্রার্থী প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা (রি-কল চালু করা)।

৬। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
ক) সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনকরা।
খ) সাংবিধানিক প্রশ্নে যে কোন ধরণের জটিলতা নিরসনে ‘সাংবিধানিক আদালত’ গঠন।
গ) প্রতিটি প্রদেশে হাইকোর্ট গঠন করা।
ঘ) সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহের গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, সৎ-যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দানের জন্য ‘সাংবিধানিক কমিশন’গঠন করা।
ঙ) ন্যায়পাল নিয়োগ করা এবং দুর্নীতি বিরোধী কার্যকর আইন প্রণয়ন করা।

৭। ক) গণমূখী প্রশাসন গঠন, বৃটিশ প্রনীত শাসন-শোষণের উদ্দেশ্যে যেসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল তা বাতিল করে যুগোপযুগী আইন প্রণয়ন করা, বৃটিশ প্রনীত প্রথম-দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা ও  কর্মচারীর অমর্যাদাকর বিভাজন বিলোপ করা, তবে কাজের সুবিধার্থে স্তর বিন্যাস নির্ধারণ করা।

খ) পুলিশ বিভাগে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজনে :
১. মেধা ভিত্তিক নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ২. চাকুরী ক্ষেত্রে অন্যায়ের শিকার ও ক্ষতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্যদের নিজ চাকুরীতে পুনঃনিয়োগ ও আর্থিক ক্ষতিপুরণ প্রদান ৩. গুম ও খুনের মত গুরুতর মানবাধিকার লংগনকারীদের আইনী প্রক্রিয়ার অধীনে বিচারের আওতায় আনা ৪. মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আবাসিক অর্ডারলি প্রথা বিলোপ এবং ‘জবাবদিহীতা বোর্ড’ গঠন করা।

গ) বিচারবহির্ভূূত ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টারের নামে হত্যাকাণ্ডসহ গুম-খুন বন্ধ করা।

৮। ক) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা; সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বাক্ ব্যক্তির স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
খ) নারীর অধিকার ও সমমর্যাদা নিশ্চিত করা।
গ) বিজ্ঞান ভিত্তিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা।
ঘ) গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি ও ঔষধনীতি প্রণয়ন করা।
ঙ) পরিবেশ রক্ষায় উপযোগী নীতি প্রণয়ন করা, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা।
চ) কৃষি পন্যের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ, গার্মেন্টস্ শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরী ১৬,০০০ টাকা নির্ধারণ করা।
ছ) নদী ভাংগন রোধে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
জ) সরকারী চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা যুক্তিসংগতভাবে বৃদ্ধি করা ও যুক্তিসংগত কোটা সংস্কার নীতি প্রণয়ন করা। এছাড়াও তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার, নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা, আধুুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা।
ঝ) নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা।

৯। ক) জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করা।
খ) আধুনিক সমরাস্ত্র ও প্রশিক্ষনসহ দক্ষ প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন।
গ) স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন ও অনুসরণ করা।

১০। ক) অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে গতিশীল করার লক্ষ্যে উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোট গঠন করা।
খ) জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল ও উপজেলা শিল্পাঞ্চল গঠন করা।
গ) মাইক্রো ক্রেডিট ও সামাজিক ব্যবসা চালু করা এবং বেকারদের প্রযুক্তিনির্ভর করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
ঘ) গ্রামীন ক্ষেত মজুর, বস্তিবাসী ও অতি দরিদ্র মানুষের জন্য রেশনিং চালু করা।

প্রিয় দেশবাসী
আমাদের রাষ্ট্রীয় রাজনীতি, দেশ পরিচালনার পদ্ধতি এবং রাষ্ট্র কাঠামোর মৌল পরিবর্তণ করতে না পারলে আমরা কেবল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকবো। ১০ দফা বাস্তবায়ন হলে শ্রম-কর্ম-পেশাজীবিদের রাষ্ট্রীয় রাজনীতি ও উৎপাদন-উন্নয়নে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নতুন সমাজ শক্তির উদ্ভব হবে, উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা বিলোপের এবং সার্বিক মুক্তির রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হবে। রাজনীতি শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নির্মানের ভিত্তি স্থাপিত হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্রমাগতভাবে গণতান্ত্রিক, নৈতিক ও মানবিক রাষ্ট্র হয়ে উঠবে।

রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার রূপান্তরই হবে ত্রিশ লক্ষ শহীদের বেদিতে নৈবদ্য দান। আসুন রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার রূপান্তরের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা একুশ শতকের বাংলাদেশ বিনির্মানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবি, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, বুদ্ধিজীবিসহ দেশবাসীর পূর্ণ সমর্থন ও ভোট প্রত্যাশা করছি।

Logo-orginal