, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

Avatar rtm

‘গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ’ বিলুপ্ত হচ্ছে

প্রকাশ: ২০১৮-১২-২৫ ১১:৩০:৪৩ || আপডেট: ২০১৮-১২-২৫ ১১:৩০:৪৩

Spread the love

‘গোল্ডেন জিপিএ-৫’ বলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে যে স্বীকৃতি চালু হয়েছিল তা আর থাকছে না। এবারের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি)পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় লক্ষাধিক কমে গেছে। এ বছর থেকে চতুর্থ বিষয় বাদ দেওয়া এমনটা হয়েছে বলে জানা যায়।

গত কয়েকবছরে পরিপ্রেক্ষিতে জিপিএ-৫ নিয়ে দুই ধরণের স্বীকৃতি মুখে মুখে চালু হয়। একটি গোল্ডেন জিপিএ এবং আরেকটি সাধারণ জিপিএ-৫। যারা চতুর্থ বিষয় ছাড়াই সব বিষয়ে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেত, গোল্ডেন জিপিএ হিসেবে তাদের মূল্যায়ন করা হতো। আর যারা একটি বা দুটি বিষয়ে ৮০ নম্বরের কম নম্বর পেত তারা চতুর্থ বিষয়ের নম্বর নিয়ে সাধারণ জিপিএ-৫ পাওয়ার সুযোগ পেত। যদিও শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ‘গোল্ডেন জিপিএ’ নামে কোন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্ত এ বছর চতুর্থ বিষয় না থাকায় জিপিএ-৫ এর মধ্যে আর কোনো বিভাজন থাকছে না।

ফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে গতকাল সোমবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, আগে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়ের নম্বর ধরেই ফলাফল হিসাব করা হতো। মূল্যায়ন পদ্ধতির ধারাবাহিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে এবার তা করা হয়নি। এ কারণেই জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।

তবে একাধিক অভিভাবক বলেন, নিয়ম পরিবর্তন হওয়ায় জিপিএ-৫ কমেছে, এর শিকার হয়েছে তাঁদের সন্তানেরা।

জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, অভিভাবকদের কেউ কেউ সাময়িক অসন্তষ্ট হলেও এটা ঠিক হয়ে যাবে, আগামী বছর সবাই অভ্যস্ত হবে। তা ছাড়া চতুর্থ বিষয় বাদ দেওয়ায় প্রকৃত মেধাবী চিহ্নিত করা সহজ হবে।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরও জানান, তিনটি বিষয় কমে গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চালু করা এই নিয়ম সহসা পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। করণ বই পাঠ্যক্রম, নম্বর বিভাজন সবকিছু এই পরিকল্পনার অংশ।

এ বছর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ বছরের মধ্যে সবেচেয়ে কম। এ বছর ৬৬ হাজার ১০৮ জন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৭। তার আগে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ছিল ২ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯ শিক্ষার্থী।
এবার পাসের হার প্রায় ২ শতাংশ বাড়লেও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমায় অভিভাবকদের একাংশ ক্ষুদ্ধ। এর একটিই কারণ, চতুর্থ বিষয় পুরোপুরি তুলে দেওয়া।

গত বছর পর্যন্ত জেএসসিতে বিষয় ছিল ১০টি, নম্বর ছিল ৯৫০। এবার জেএসসিতে সাতটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, মোট নম্বর ছিল ৬৫০। শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে চাপ কমাতে বাংলা দুই বিষয়ের পরিবর্তে একটি বিষয় করা হয়। এ ছাড়া চতুর্থ বিষয় তুলে দেওয়া হয়। চতুর্থ বিষয় অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়। পাবলিক পরীক্ষায় হয় না। এত দিন জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখে এসেছিল চতুর্থ বিষয়। কোনো পরীক্ষার্থী একটি বিষয়ে ৮০ শতাংশের কম নম্বর পেলে চতুর্থ বিষয়ের নম্বর যুক্ত হয়ে সে জিপিএ-৫ পেত। প্রেডিং পদ্ধতিতে চতুর্থ বিষয়ের জন্য পাঁচ নম্বরের দুই বাদ যেত। বাকি দুই বা তিন যুক্ত হত মোট জিপিএর সংঙ্গে, যা একজন পরীক্ষার্থীকে জিপিএ ৫ পেতে সহায়তা করত।

সূত্র: দৈনিক শিক্ষা

Logo-orginal