admin
প্রকাশ: ২০১৮-১২-১৪ ১৩:৩৬:৪৫ || আপডেট: ২০১৮-১২-১৪ ১৩:৩৮:১৮
ঘুম থেকে ডেকে তুলে এক নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার পুলিশ। তিনি ওই মামলায় জেল খাটছেন।
আটক ফেরদৌস জোয়ারদার (৪০) দেওড়া গ্রামের মৃত পরেশ জোয়ারদারের ছেলে। তাঁকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় গত ৯ ডিসেম্বর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৮ ডিসেম্বর রায়কালী বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজের পূর্ব পাশে নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ৪০ থেকে ৫০ জন নেতাকর্মী নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। এমন খবর পেয়ে থানার পরিদর্শক কিরণ কুমার রায়ের নির্দেশে রাত ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। টের পেয়ে নাশকতার পরিকল্পনাকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় দৌড়ে গিয়ে পুলিশ ফেরদৌসকে আটক করে। মামলায় রায়কালী ও তিলকপুর ইউনিয়নের ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বিবরণীতে আরো উল্লেখ রয়েছে, উপস্থিত সাক্ষীর সামনে আটক ফেরদৌসের দেখানো স্থান থেকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা আটটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
রায়কালী বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজের পূর্ব পাশের লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, ওই রাতে এ এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফেরদৌস জোয়ারদার রায়কালী ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক। পুলিশের এজাহারের তালিকায় ৯ নম্বর আসামি রায়কালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হান্নান। তাঁকে গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ৪০ থেকে ৫০ জন লোক তাঁর বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। পরদিন তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। আব্দুল হান্নানের স্বজনদের অভিযোগ, ওই দিন সন্ধ্যায় ২০ থেকে ২৫ জন যুবক হাসপাতালে এসে হুমকি-ধমকি দেয়। প্রাণভয়ে আব্দুল হান্নান সেখান থেকে চলে এসে অন্যত্র চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফেরদৌসের স্ত্রী তারাবানু বলেন, ‘৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে ১০ থেকে ১৫ জন লোক আমাদের বাড়িতে আসে। এর মধ্যে কয়েকজন পুলিশের পোশাক পরেছিল। বাকিরা পোশাক ছাড়া ছিল। তারা আমাকে কোনো কিছু না জানিয়ে ঘর থেকে স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন আমি থানায় গিয়ে জানতে পারি, তাকে পুলিশের বানানো নাশকতার মামলায় জড়ানো হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশ এজাহারে উল্লেখ করেছে, ওই দিন রাতে আমার স্বামী নাকি ৫০ থেকে ৬০ জন লোক নিয়ে নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তার কাছে নাকি আটটি ককটেল পেয়েছে। কিন্তু ওই দিন আমার স্বামী সন্ধ্যা থেকেই ঘরে ছিল। আমি স্বামীর মুক্তি চাই।’
এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে বিএনপিকে গায়েবি মামলা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। আর এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুলিশকে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কমল বলেন, ‘গায়েবি মামলা দিয়ে ভোটের মাঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের চাপে রাখা হয়েছে। এটা মোটেও উচিত নয়। এ উপজেলায় সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হলে বিএনপির প্রার্থী আবু ইউসুফ খলিলুর রহমান বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।’ এ সময় তিনি পুলিশকে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি না করার আহ্বান জানান।
আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার বাদী তারেক হোসেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
থানার পরিদর্শক কিরণ কুমার রায় বলেন, ‘ফেরদৌস জেয়ারদারকে বিস্ফোরক আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় ওই স্থান থেকে আটটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উৎসঃ কালেরকন্ঠ ।