, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Avatar rtm

বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট স্কুল হোস্টেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় ৫ ছাত্রকে নির্যাতন

প্রকাশ: ২০১৮-১২-১২ ০৭:৫০:১৯ || আপডেট: ২০১৮-১২-১২ ০৯:৪৯:৪৪

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম: মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের আবাসিক হোস্টেলের ৯ম শ্রেণির ৫ ছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে একই প্রতিষ্ঠানের ১০ম শ্রেণির ছাত্ররা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ ছাত্রকে বহিষ্কার করা হযেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে।

নির্যাতনের শিকার ছাত্ররা জানায় তাদের বেঁধে বেল্ট ও রশি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় এবং এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্যও তাদের শাসিয়ে দেয়া হয়। এদিকে এ ঘটনার পর অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতিত ছাত্ররা হলো সাইদুল হাসান বিপু, অন্তর ধর, বায়েজিদ, মেহেদী হাসান হৃদয় ও সাদনান রাজিম ইবান। এরা সবাই ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯ম শ্রেণির ছাত্র।
অভিভাবক ও ছাত্ররা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় ক্যান্টিনে নাস্তা করতে যাওয়ার সময় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইদুল ইসলাম ইফতি মোবাইল ফোন হোস্টেলের ডেস্কে জমা দিয়ে নাস্তা করতে যায়। পরে ফিরে এসে ডেস্কে মোবাইল না পেয়ে তাদের আগে হোস্টেলে প্রবেশ করা সাইফুল হাসান বিপু, অন্তর ধর, বায়েজিদ, মেহেদী হাসান

হৃদয়, সাদনান রাজিম ইবানকে মোবাইল ফোনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারা মোবাইল ফোনের বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানালে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সোমবার গভীর রাতে তামীমের নেতৃত্বে জিসফাকুল হায়দার, সাইদুল ইসলাম ইফতি ও আকিল হোস্টেলের ৪০৪ নং কক্ষে প্রবেশ করে সাইদুল হাসান বিপু, অন্তর ধর, বায়েজিদ, মেহেদী হাসান হৃদয়, সাদনান রাজিম ইবানকে গোল করে ফ্লোরে বসিয়ে ব্যাল্ট ও রশি দিয়ে বেদম প্রহার করে। এসময় ছাত্ররা যাতে চিৎকার করতে না পারে তাদের মুখে কাপড় গুঁজে দেয়া হয়। রাত ১২ থেকে ৩টা পর্যন্ত মধ্যযুগীয় কায়দায় তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয় এবং মারধর শেষে এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেয়া হয়।

পরে সাইদুল হাসান বিপু ঘটনার বিষয়ে তার পরিবারকে জানালে পরিবারের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষকে জানানো হয়। এদিকে অধ্যক্ষ অভিযুক্ত ৪ ছাত্রকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নির্যাতনের শিকার ছাত্র সাইফুল হাসান বিপুর অভিভাবক রিফাত আলাউদ্দিন জানান, হোস্টেলে নিরাপদে পড়ালেখার জন্য আমরা আমাদের সন্তানকে দিয়েছি। কিন্তু এমন ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। কর্তৃপক্ষ যদি দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।

এদিকে ঘটনার বিষয় নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ হোস্টেলের হোস্টেল সুপার আশরাফ কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং অভিযুক্ত ছাত্রদের হোস্টেল থেকে বের করে হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে দিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখব।

কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল রেজাউল ইসলাম রেজা জানান অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা।

সূত্র: দৈনিক পূর্বকোণ

Logo-orginal