, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

কবরে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবেনা যেসব মুমিনের

প্রকাশ: ২০১৯-০১-০৪ ১২:২১:২৪ || আপডেট: ২০১৯-০১-০৪ ১২:২১:২৪

Spread the love

ইসলামী ডেস্কঃ কবরে সাত শ্রেণির মানুষকে- মহান আল্লাহর অনুগ্রহে কিছু মানুষ এ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবেন যে, তাকে কবরদেশে সুওয়াল জাওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে না। এ বৈশিষ্ট্যের অধিকারীদের মধ্যে প্রথমে আসবে শহিদদের নাম। রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শহিদদেরকে কবরে প্রশ্ন করা হবে না।

কেননা মাথায় তরবারির আঘাত কবরের বিপদ হতে কম নয়। যদি তার অমত্মরে আল্লাহর ভয় না থেকে মুনাফেকি থাকতো তাহলে সে তরবারির ভয়ে পালিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু সে এমনটি করেনি। কাজেই প্রমাণিত হলো, সে তার ঈমানের ক্ষেত্রে সত্যিই মুখলিস বা নিষ্ঠাবান ছিলো।

কবরের সুওয়াল হতে মুক্তিপ্রাপ্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি হলো, সীমান্তরক্ষী সৈনিক; যাকে প্রতিনিয়ত শত্রুদলের সঙ্গে সংগ্রাম ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যেতে হয়। এ ব্যক্তির আলোচনা কুরআনে কারিমেও এসেছে, হাদিসে রাসুলের মাঝেও এসেছে। যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করছেন,

يَاأَيُّهَاالَّذِينَآمَنُواْاصْبِرُواْوَصَابِرُواْوَرَابِطُواْ

তৃতীয় ব্যক্তি হলো, যিনি মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, কেননা সহিহ হাদিসের ভাষ্যমতে সেও শহিদদের মিছিলের একজন।

চতুর্থ ব্যক্তি হলো, আপাদমস্তক আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর সত্যনিষ্ঠ আস্থা ও বিশ্বাসের অধিকারী সত্যবাদী সিদ্দিক। যাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কোথাও মিথ্যার লেশমাত্র নেই। নবিদের পরই তাঁদের স্থান। ইমাম তিরমিযি ও ইমাম কুরতুবি [রহ.] এভাবে সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন।

উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে অকাট্যভাবে প্রতিভাত হয় যে, আল্লাহর প্রেরীত সকল নবি রাসুলও কবরে সুওয়াল জাওয়াবের সম্মুখীন হবেন না। কেননা তাঁদের স্থান তো সিদ্দিক থেকে কত সহস্র ঊর্ধ্বে।

পঞ্চমজন হলো, অপ্রাপ্ত বয়সে কোনো শিশু মারা গেলে তাকে সুওয়ালের সম্মুখীন হতে হবে না। প্রখ্যাত আকাইদবিদ আল্লামা নাসাফি [রহ.] দৃঢ়তার সঙ্গে বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন। ইমাম নববি [রহ.]ও অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইবনে সালাহ [রহ.] বলেন, শিশু মারা গেলে তাকে কালিমায়ে শাহাদাতের তালকিন করার দরকার নেই।

আর পাগল ও বোকা লোকদের কবরে সুওয়াল জওয়াব করা হবে কিনা এ বিষয়ে ইমাম ফাকেহানি [রহ.] মৌনতা অবলম্বন করেছেন। তদ্রুপ যে ব্যক্তি দুই নবির পৃথিবীতে আগমনের মধ্যবর্তী যুগে মারা গেছেন, তাকেও কবরে সুওয়াল করা হবে কিনা? এ বিষয়েও কোনো মত প্রকাশ করেননি। রওযা নামক কিতাবে এ বর্ণনা এসেছে, যে ব্যক্তি শরিয়তের দৃষ্টিতে মুকাল্লাফ [যার ওপর শরিয়তের হুকুম-আহকাম বর্তিত হয়] বা তার সমগোত্রীয়, একমাত্র তাকে সুওয়াল করা হবে। এছাড়া অন্য কাউকে নয়।

ষষ্ঠ ব্যক্তি হলো, ওই ব্যক্তি যে জুমার দিনে বা রাতে মারা যাবে তাকেও কবরে সুওয়াল করা হবে না। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার ফজিলত সম্পর্কিত একটি হাদিসে তা উল্লেখ করেছেন।উক্ত হাদিসটিকে ইমাম তিরমিযি ও ইমাম বাইহাকি [রহ.] হাসান স্তরের হাদিস রূপে অভিহিত করেছেন এবং বিভিন্ন সনদে তার স্বপ্ন শাহিদ রেওয়ায়েতও পেশ করেছেন।

কবরের সুওয়াল হতে পরিত্রাণপ্রাপ্ত সপ্তম ব্যক্তি হলো, যে প্রতি রাতে আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির প্রত্যাশায় সুরা তাবারাকাল্লাযি তিলাওয়াত করবে।এ সম্পর্কিত আরো কিছু হাদিস রয়েছে; যা সুনানে আবু দাউদ, তিরমিযি, নাসায়ি এবং ইবনে মাযাহ প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে। কোনো বর্ণনায় এ সুরার সঙ্গে সুরা সাজদাকেও সংযুক্ত করা হয়েছে।
মূল : আল্লামা ইদরিস কান্ধলভি [রহ.] অনুবাদ : মাওলানা মিরাজ রহমান

যে দোয়া পড়লে শরীর ও হার্ট ব্যথা মুক্ত থাকবে

মানুষের শরীরে অনেক সময় নানা ব্যথা বেদনা অনুভব হয়ে থাকে। এ ব্যথা বেদনা থেকে পরিত্রাণ পেতে হাদিসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল ও দোয়া করার জন্য বলা হয়েছে।

হজরত ওসমান ইবনে আবুল আছ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একবার তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট তার শরীরের ব্যথার কথা জানালেন। জবাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তুমি তোমার বেদনার জায়গায় হাত রাখ এবং তিন বার বিসমিল্লাহ বল এবং সাত বার এই দোয়া পড়-

উচ্চারণ : আউজু বিইযযাতিল্লাহি ওয়া ক্বুদরাতিহি মিন সাররি মা আঝিদু ওয়া উহাজিরু। (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : আল্লাহ প্রতাপ ও তার ক্ষমতার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি এবং ঐ বস্তু হতে, যা অনুভব করছি ও আশংকা করছি, তার অনিষ্ট হতে।
সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো এ দোয়া এবং আমলটি করে ব্যথা থেকে আরোগ্য লাভ করতে পারি।

এছাড়া হার্ট বা হৃদপিণ্ড মানুষের শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হৃদপিণ্ড সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, শরীরে একটি গোস্তের টুকরো আছে, যার এ টুকরোটি সুস্থ থাকবে, তার পুরো শরীরই সুস্থ থাকবে। আর যার এ গোস্তের টুকরোটি অসুস্থ হয়ে যাবে, তার পুরো শরীরই অসুস্থ হয়ে যাবে। আর তা সুস্থ রাখার উপায় হলো আল্লাহর জিকির।

মানুষের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি হার্ট বা হৃদপিণ্ড বর্তমান সময়ে অনেক বেশি রোগ-ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। হার্ট বা হৃদপিণ্ডের ব্যথা বা যে কোনো রোগের সম্মুখীন হলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

কুরআনে এই হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে ও ব্যাথামুক্ত রাখতে আয়াত রয়েছে। যারা নিয়মিত কুরআনের আমল করবে আল্লাহ তাআলা তাদের হৃদপিণ্ডের ব্যথাসহ যাবতীয় রোগ-ব্যধিগুলো দূর করে দেবেন। আয়াতটি হলো-

উচ্চারণ : আল্লাজিনা আমানু ওয়া তাত্বমাইন্নু ক্বুলুবুহুম বিজিকরিল্লাহি আলা বিজিকরিল্লাহি তাত্বমাইন্নুল ক্বুলুবু।’ (সুরা রাদ : আয়াত ১৩)

যে ব্যক্তি সুরা রাদের উল্লেখিত আয়াত নিয়মিত ৪১ বার পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার হার্ট বা হৃদপিণ্ডের ব্যথা ও রোগ-ব্যাধি দূর করে দেবেন। #সংগৃহীত ঢাকাররিপোর্ট থেকে।

Logo-orginal