, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

থাইল্যান্ডে আটক বাহরাইনী ফুটবলারকে ফেরৎ চায় অস্ট্রেলীয়া

প্রকাশ: ২০১৯-০২-০৬ ১৬:১৪:৪০ || আপডেট: ২০১৯-০২-০৬ ১৬:১৪:৪০

Spread the love

থাইল্যান্ডের কাছে শরণার্থী ফুটবলার হাকিম আল আরাবিকে মুক্তি দিতে ফের আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলীয় সরকার। এর আগে থাই সরকার কৌঁসুলি স্বীকার করেছেন, প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া সত্ত্বেও আরাবিকে মুক্তি দেয়ার ক্ষমতা তার সরকারের রয়েছে।

সোমবার মেলবোর্নের ২৫ বছর বয়সী ফুটবলারকে আরও দুই মাস কারাগারে রাখার কথা বলেছেন থাইল্যান্ডের একটি ফৌজদারি আদালত। প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তাকে আত্মরক্ষার সুযোগ দিতেই এমনটি করা হয়েছে।

শুনানির পর থাই কৌঁসুলি বলেন, দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্বাহী ক্ষমতার বিবেচনায় তাকে মুক্তি দিতে পারেন এবং আল আরাবিকে যে কোনো মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত পাঠাতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিস পেইন এক বিবৃতিতে বলেন, আল আরাবিকে বর্তমান আটকাদেশ নিয়ে অস্ট্রেলীয় সরকার গভীর উদ্বিগ্ন। তাকে মুক্তি দিতে থাইল্যান্ড ও বাহরাইনের সর্বোচ্চপর্যায়ে তদবির করে যাচ্ছে তার দেশ।

তিনি বলেন, হাকিম আল আরাবির প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার শুনানি শেষে বন্ধু ও পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার সুযোগ দেয়ার আহ্বান থাইল্যান্ডের কাছে পুনর্ব্যক্ত করেছে তার সরকার।

এর আগে থাইল্যান্ডের কারাগারে আটক শরণার্থী ফুটবলার হাকিম আল আরাবি বলেন, তাকে যদি নিজ দেশ বাহরাইনে ফেরত পাঠানো হয়, তবে সেখানে তিনি নির্যাতনের শিকার হবেন। এমনকি তাকে হত্যা করেও ফেলতে পারে।

ব্যাংককের রেম্যান্ড কারাগার থেকে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, তিনি খুবই আতঙ্কিত। তার অবস্থা ক্রমে খারাপের দিকে যাচ্ছে।

বাহরাইন থেকে পালিয়ে আসার পর ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় পান আল আরাবি। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে নিজ দেশে তিনি নিপীড়ন, আটক ও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। বাহরাইনে তার বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা রয়েছে।

আল আরাবি বলেন, বাহরাইনে আমি কিছু করিনি, থাইল্যান্ডেও না- এমনকি অস্ট্রেলিয়ায়ও আমার বিরুদ্ধে কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। কাজেই আমাকে এভাবে কেন আটক রাখা হয়েছে?

‘বাহরাইনে আমার মতো মানুষের জন্য কোনো মানবাধিকার কিংবা নিরাপত্তা নেই,’ বললেন এ ফুটবলার।

গত বছরের নভেম্বরের শেষ দিকে স্ত্রীকে নিয়ে থাইল্যান্ডে মধুচন্দ্রিমায় যান ২৫ বছর বয়সী আল আরাবি। এর আগে পাঁচ বছর ধরে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে একটি ক্লাবে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে খেলতেন।

দেশের বাইরে তার ভ্রমণ নিরাপদ কিনা তা জানতে অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার আগে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হন তিনি। তখন বাহরাইন ছাড়া যে কোনো দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল।

যদিও তার বোন বাহরাইন থেকে তাকে ঝুঁকির ব্যাপারে হুশিয়ারি করেছিলেন। কিন্তু বোনকে তিনি সান্ত্বনা দিয়েছিলেন এই বলে- ‘আমি এখন অস্ট্রেলিয়ায় সুরক্ষায় আছি। তারা আমার কিছু হতে দেবে না।’

কিন্তু থাই বিমানবন্দরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে। বাহরাইনের অনুরোধে নিয়মের বাইরে গিয়ে ইস্যু করা ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে।

বিধিমালা অনুসারে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে রেড নোটিশ জারি করতে পারে না ইন্টারপোল। পরে গত ৪ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে জারি করা নোটিশ তুলে নেয় বিশ্ব পুলিশ সংস্থাটি।

এর পর তাকে মুক্তি দিতে অস্ট্রেলীয় সরকারের চাপ দিলে তার আটকাদেশ ৬০ দিন বাড়িয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নিবর্তনমূলক আইনের জন্য বিখ্যাত থাইল্যান্ড। তাকে প্রত্যর্পণে আদালতের রায়ও স্থগিত করা হয়েছে।

Logo-orginal