, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

যেভাবে ক্রিকেট তারকা হয়ে উঠে রিক্সাচালক বাবার ছেলে মিরাজ

প্রকাশ: ২০১৯-০২-১০ ২৩:৪৮:০৭ || আপডেট: ২০১৯-০২-১০ ২৩:৪৮:০৭

Spread the love

ক্রিকেটার মিরাজকে- আমরা তুলে আনার চেষ্টা করি খবরের পেছনের লুকিয়ে থাকা সুপ্ত খবরগুলো। আজ আপনাদেরকে জানাবো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এমন একজন তারকা আর কথা। যার জীবন অন্য আর দশটা পরিবারের মতো কাটেনি। ছোটবেলা থেকে শিশু-কিশোর কৈশোর পর্যন্ত কেটেছে অনেক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে।

এমন ঘটনা পৃথিবীতে অনেকেই আছে তবু বাংলাদেশ এই ঘটনাগুলো রয়েছে অনেক। কখনো আমাদের চোখে সেটা পরে আবার কখনো আমাদের চোখে সেটা পড়ে না আড়ালেই রয়ে যায়। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়ার মেহেদি হাসান মিরাজ। যার জন্ম খুলনায় 25 শে অক্টোবর 1997 সালে।

বাবা ছিলেন একজন গাড়িচালক। কষ্ট করে গাড়ি চালিয়ে সংসারটা টেনে টেনে নিবেন সামনের দিকে মেহেদী হাসান মিরাজের বাবা। আর দশটা ছেলেদের মতই যেন বড় হয় নিজের ছেলে সে স্বপ্ন দেখতেন মেহেদী হাসান মিরাজের বাবা। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই মেহেদী হাসান মিরাজের ক্রিকেটের প্রতি ছিল অনেক ভালোবাসা ও টান।

বাবা নিষেধ করলেও নিষেধের বাণীগুলো মেহেদী হাসান মিরাজের কানে ঢুকতো না। ব্যাট আর বলের টানে ছুটে যেত খেলার মাঠে। সেখানে খেলত মন প্রাণ উজাড় করে। মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাছোড়বান্দা। মনে মনে ভেবে নিয়েছিলেন ভালো তো বেসেছি ক্রিকেটকে আর আমার এই ভালোবাসা রেখে দেব সারা জীবন বল আর ব্যাটের জন্য।

ছোটবেলা থেকেই মিরাজ খুব সুন্দর ক্রিকেট খেলতেন এটা গ্রামের এবং প্রতিবেশী গ্রামগুলোতে সবাই জানত। রুপসা পারের এই মেহেদী হাসান মিরাজ তার জীবনে ছিল না সৌখিনতা কারণ বাদ দিয়ে একজন ড্রাইভার।

ক্রিকেটের ম্যাজিক বয় মেহেদি হাসান মিরাজ এর বাবা জালাল হোসেন তিনি এখন বলছেন, মেহেদি যখন বাসায় থাকতো না খেলার মাঠে ছুটে যেত তাকে অনেক সময় মারধর করেছি তাকে বাসায় থাকতে বললে থাকতো না কেমন যেন একটা মাঠের প্রতি খেলার প্রতি ব্যাট-বলের প্রতি নেশা ছিল তার।

আর প্রথম থেকেই আমি তার ক্রিকেট খেলা সমর্থন করতাম না কারন আমি একজন গরীব মানুষ আমাকে কষ্ট করে গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। যাদের নুন আনতে পানতা ফুরোয় তাদের আবার খেলাধুলা কি ফের এমনটাই মনে করতাম। মূলত আমি চাইতাম আমার ছেলে পড়ালেখা করে অন্তত ছোট্ট একটা চাকরি করে ভালো ভাবে সংসার চালান।

কখনো আমি কল্পনা করতে পারিনি মিরাজ এত ভালো ক্রিকেট খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে নিজের মুখ উজ্জ্বল করবে পুরো পৃথিবী জুড়ে থাকে চিনবে। এভাবেই বলছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজের বাবা জালাল হোসেন।

বিরাট যখন এখানে সেখানে খেলাধূলা করে বেড়াচ্ছিলেন। একটা সময় স্থানীয় কোচ আল মাহমুদের চোখে পড়ে যায় মেরাজ। একটি মাঠে বসে খেলা দেখছিলেন কোচ কিভাবে শিক্ষা দেয় সেগুলো দূর থেকেই দেখছিলেন। হঠাৎ একটা বল অনেক উপর দিয়ে এসে মিরাজের পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিল। ক্রিকেটপাগলছেলে নিজের দিকে খেয়াল না করে উড়ন্ত ড্রাইভ দিয়ে বলটি এক হাতে আটকে ফেললেন।

এই ক্যাচ ধরা টা দেখে। কোচ আল মাহমুদ মিরাজ কে ডাকলেন। জিজ্ঞেস করলেন তোমার নাম কি তুমি কোথায় থাকো তোমার বাবার নাম কি। এমন কথা জিজ্ঞেস করতেই মেরাজ ভয় পেয়ে যায় কেন যেন তাদের কাঠের বল ধরে বিপদে পড়লেন নাকি এমনটাই মনে মনে ভাবছিলেন। কিন্তু অন্য ভাবনা ততক্ষণে গজ আল মাহমুদের মস্তিষ্কে কাজ করছিল।

মিরাজকে কোচ আল মাহমুদ বলেন তুমি কি আমাদের সাথে প্র্যাকটিস্ করবে খেলতে চাও। খেলতে তো মন চায় কিন্তু বেড পাব কোথায় অত ভালো গ্লাভস ক্রিকেট খেলা আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি গুলো পাব কোথায়। এসব চিন্তাগুলো খোলাখুলি আল মাহমুদকে বলে দিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তারপর কোচ আল মাহমুদ সবকিছু মিরাজকে কিনে দিয়ে প্র্যাক্টিসে ঢুকিয়ে নেয়।

প্র্যাকটিসের প্রথম দিন থেকেই মেহেদী হাসান মিরাজ ভালো করে চলেছেন পিছনে আর তাকে তাকাতে হয়নি এভাবে খেলেছেন জাতীয় পর্যায়ের ম্যাচ গুলো গুলো অনূর্ধ্ব 19 অনূর্ধ্ব 17। এভাবে খেলতে খেলতে চলে আসে বাংলাদেশে ক্রিকেট নির্বাচকদের চোখে।

আর শুরু হয়ে যায় জাতীয় দলে খেলার সুযোগ। বাংলাদেশ জাতীয় দলে প্র্যাকটিস করার সময় সবার চেয়ে ভালো করতেন। সবাইকে সম্মান দেখিয়ে প্র্যাকটিস করতেন’ চলাচল করতে। যখন সবকিছুই মেহেদী হাসান মিরাজের ভালো চলছিল ঠিক ওই সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচন মেহেদী হাসান মিরাজ কে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য নির্বাচন করেন।

আর তখন থেকেই ভাগ্য চাকা ঘুরতে থাকে মিরাজের পক্ষে। এখনো বুঝি অনেক ম্যাচ খেলেছেন অনেক উইকেট পেয়েছেন রান করেছেন ভালো। যে কারণে বাংলাদেশ একজন ফুটন্ত তারকাদের মধ্যে তিনিও জল জলে জলে থাকা একজন তারকা। আর এভাবেই স্বপ্ন পূরণ হয় একজন মেহেদি থেকে মেহেদী হাসান মিরাজের।

এই লেখাটা পোস্ট করার একটাই কারণ। যারা মনে মনে ভাবছেন আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না তাদের জন্য। সৃষ্ঠি কর্তা প্রত্যেকটা মানুষকে কোন না কোন স্কিল দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।

সবার মধ্যে কোন না কোন দক্ষতা রয়েছে। তাই আমি বলব আপনাকে আপনি যে কাজটা ভালো পারেন সে কাজটা করার চেষ্টা করুন দেখবেন সফলতা কে আপনার খুঁজতে হবে না সফলতা একদিন আপনার বাড়ির দুয়ারে আসবে।
#সংগৃহীত ফেইচবুক থেকে।

Logo-orginal