, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

প্রকাশ: ২০১৯-০৩-২৬ ১১:২৭:৪৬ || আপডেট: ২০১৯-০৩-২৬ ১১:২৭:৪৬

Spread the love

আজ ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালে আজকের দিনে শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা পৃথক বাণী দিয়ে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সেই সাথে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের প্রতি। দিবসটিতে সারা দেশে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

২৫ মার্চের কালরাতে পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক নেতৃত্ব মুক্তিকামী নিরস্ত্র জনতার ওপর যে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড চালায় তাতে চূড়ান্ত হয়ে যায় আমাদের স্বাধীনতার পথচলা। পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে আর নয়। ২৫ মার্চের গণহত্যা পরিচালনার সময় পুলিশ, তৎকালীন ইপিআর এবং বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে বাঙালি সৈনিক ও অফিসাররা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। পরের দিন থেকে শুরু হয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ। যে যার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে চূড়ান্ত সেই যুদ্ধে।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিপাগল সচেতন শ্রেণী পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ইঙ্গিত লাভ করে। এরপর সমস্যা সমাধানে ১৬ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ আলোচনা ব্যর্থতার দিকে গড়াতে থাকায় অনেকেই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। মার্চের সেই উত্তাল দিনগুলোতে এভাবে প্রস্তুত হতে থাকে যুদ্ধের ক্ষেত্র ।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকদের কাছ থেকে পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পর পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিভিন্নভাবে নিপীড়িত হতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক শ্রেণীর হাতে। বঞ্চনার নতুন অধ্যায়ের মুখোমুখি হতে লাগল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। তখন পাকিস্তান নিয়ে মোহভঙ্গ হতে থাকে এ অঞ্চলের মানুষের। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে বারবার রাজপথে নামতে বাধ্য করা হয়। এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি শাসক শ্রেণীর উদাসীনতা এবং বঞ্চনার জবাব দেয়া হয় ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে। এতে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু শাসক শ্রেণী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা না দিয়ে তাদের হাতেই ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ফলে আবার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে রাজপথে নামতে বাধ্য করা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের শোষিত মানুষের ন্যায্য দাবি আদায় এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন ১৫ মার্চ আলোচনার জন্য ঢাকা আসেন প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। ১৬ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা শুরু করেন তিনি। মূলত আলোচনার নামে এটি ছিল সময়ক্ষেপণ মাত্র। পশ্চিম পাকিস্তানি নেতারা প্রতিদিন সমস্যা সামাধানের আশ্বাস দিয়ে গোপনে অস্ত্র এবং সৈন্য জমা করতে থাকে পূর্ব পাকিস্তানে। ২৪ মার্চ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা ঢাকা ত্যাগ করেন আন্দোলন দমনে গণহত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করে।

২৫ মার্চ রাতে গণহত্যার নির্দেশ দিয়ে রাতে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করাচির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন ইয়াহিয়া খান। রাত ১১টায় তিনি করাচি পৌঁছার খবর ঢাকায় পাঠানোর পরপরই শুরু হয় গণহত্যা অভিযান। রাজপথে নেমে আসে ট্যাংক এবং সশস্ত্র সৈন্য। পূর্ব পাকস্তানের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য শুরু হয় ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ড। আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয় অন্যায় যুদ্ধ। শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের সেই রক্তক্ষয়ী লড়াই আর অশেষ ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় প্রিয় স্বাধীনতা।

রাষ্ট্রপতির বাণী : রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ করতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।’
ঐতিহাসিক এই দিনে তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। তিনি সশ্রদ্ধচিত্তে মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের স্মরণ করেন, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। উৎসঃ নয়া দিগন্ত।

Logo-orginal