, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

অবশেষে অবাঞ্চিত শমী কায়সার

প্রকাশ: ২০১৯-০৪-২৫ ১৭:৪১:১৪ || আপডেট: ২০১৯-০৪-২৫ ১৭:৪১:১৪

Spread the love

সাংবাদিকদের সঙ্গে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ ও কটূক্তি করায় অভিনেত্রী শমী কায়সারকে সব ধরনের গণমাধ্যমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠন দুটির নেতারা এই ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে তাঁরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শমী কায়সারকে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম দেন।

ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আমিন রুকন, সহসভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহসভাপতি শাহীন হাসনাত, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে কদম ফোয়ারা হয়ে তোপখানা রোড ও পল্টন মোড় প্রদক্ষিণ করে।

গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ই-কমার্সভিত্তিক পর্যটন বিষয়ক সাইট ‘বিন্দু৩৬৫’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি ও এফবিসিসিআইর পরিচালক শমী কায়সার। তিনি ই-ক্যাবের সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে শমী কায়সার জানান, তাঁর মোবাইল ফোন দুটি খুঁজে পাচ্ছেন না। এতে উপস্থিত অর্ধশতাধিক সাংবাদিক হতভম্ব হয়ে পড়েন। এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

একপর্যায়ে শমী কায়সারের নিরাপত্তাকর্মীরা মিলনায়তনের মূল গেট বন্ধ করে দেন। শমী কায়সার উপস্থিত সবার দেহ তল্লাশি করার কথা বললে সাংবাদিকরা তাতে সম্মতি দেন। দেহ তল্লাশি শেষে সাংবাদিকরা বের হতে চাইলে শমী কায়সারের নিরাপত্তাকর্মীরা সাংবাদিকদের ‘চোর’ বলে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। এতে সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকরা ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করার উদ্যোগ নেন। এতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের লাইটিংয়ের দায়িত্ব পালনকারী এক কর্মী মোবাইল দুটি নিয়ে বের হয়ে যান। ওই দৃশ্য দেখার পর সাংবাদিকদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন শমী কায়সার।

শমী কায়সার বলেন, “সাংবাদিকদের সঙ্গে অনিচ্ছাকৃত ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছে। মুঠোফোন আমাদের সবার জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

সাংবাদিকদের হেনস্তা করার ঘটনায় গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংবাদিক, সাংবাদিক নেতাসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন। তাঁরা বলেন, শমী কায়সার যে আচরণ করেছেন, তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। তাঁরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং সাংবাদিক সমাজের কাছে শমী কায়সার ক্ষমা চাইবেন বলে আশা করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে শমী কায়সারের অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ থেকে সব শ্রেণির নাগরিক আসেন। এখানে এসে এর আগে কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেননি। শমী কায়সার যত ক্ষমতাশালীই হোন আর যত জনপ্রিয়ই হোন, তাঁর এ কাজটি করা সঠিক হয়নি। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।’

সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘শমী কায়সার শহীদ-কন্যা। তাঁর বাবাও দেশের একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ছিলেন। তাঁর প্রতি আমাদের আলাদা একটি মমত্ববোধ ও শ্রদ্ধাবোধ আছে। কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা এর আগে কেউ জাতীয় প্রেসক্লাবে করেনি। আমি আশা করব তিনি প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইবেন। উৎসঃ এনটিভি।

Logo-orginal