, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

পায়েলের খুনের খবর থানায় গিয়ে জানতে পারেন মা

প্রকাশ: ২০১৯-০৪-২৮ ২১:২১:৩৪ || আপডেট: ২০১৯-০৪-২৮ ২১:২৩:২৬

Spread the love

পায়েল হত্যা: তিন আসামির বিচার শুরু

রোববার চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আবদুল হালিমের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। পরে তাকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। খবর বিডিনিউজের ।

আদালতে কোহিনূর বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজে উঠে পায়েল তার সঙ্গে ফোন করে কখা বলেছিলেন। কিন্তু সকালে তিনি পায়েলের ফোনে কল করলে সেটি ধরে পায়েলের বন্ধু আদর।

কোহিনূর বলেন, “আদার আমাকে জানিয়েছে পায়েল প্রশ্রাব করতে নেমে আর বাসে উঠেনি। কাউন্টার থেকে বাস চালক ও সুপারভাইজারের নম্বর সংগ্রহ করে খোঁজ নিতে শুরু করি এবং তারাও জানিয়েছে পায়েল আর বাসে উঠেনি।

“পরে গজারিয়া থানায় গেলে পুলিশ জানায় বাসচালক, হেলপার ও সুপারভাইজার মিলে পায়েলকে খুন করেছে।”
বাম থেকে আসামি বাসচালক জামাল হোসেন, তার সহকারী ফয়সাল হোসেন ও বাসের সুপারভাইজর জনি
বাম থেকে আসামি বাসচালক জামাল হোসেন, তার সহকারী ফয়সাল হোসেন ও বাসের সুপারভাইজর জনি

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আইয়ূব খান বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হয়ে গেছে। আর কয়েকজন আছে। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগে বিচার কাজ শেষ হবে এবং আসামিরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে।”

গত বছরের ২১ জুলাই রাতে দুই বন্ধু আকিবুর রহমান আদর ও মহিউদ্দিন শান্তর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পর নিখোঁজ হন পায়েল।

২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জ উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ।

এরপর হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাম থেকে আসামি বাসচালক জামাল হোসেন, তার সহকারী ফয়সাল হোসেন ও বাসের সুপারভাইজর জনি বাম থেকে আসামি বাসচালক জামাল হোসেন, তার সহকারী ফয়সাল হোসেন ও বাসের সুপারভাইজর জনি আদালতে তাদের জবানবন্দির বরাতে পুলিশ জানায়, গজারিয়া এলাকায় গাড়ি যানজটে পড়ায় প্রশ্রাব করার কথা বলে বাস থেকে নেমেছিলেন পায়েল। বাস চলতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে এসে ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা লেগে সংজ্ঞা হারান। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে দায় এড়াতে ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে বাস নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন চালক ও সুপারভাইজার।
পায়েলকে অচেতন অবস্থায় সেতু থেকে খালে ফেলে দেওয়ার আগে পরিচয় লুকাতে বাসের চালক তার মুখ থেঁতলে দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

সাইদুর রহমান পায়েলের বাবা গোলাম মাওলা ও বড় ভাই গোলাম মোস্তফা কাতার প্রবাসী। বড় ভাইয়ের সন্তান হওয়ার খবরে জুলাই মাসে চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন পায়েল। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার পথেই ঘটে ওই ঘটনা।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র পায়েলের বাসা চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকায়।

পায়েলের মৃত্যুর পর তার মামা গোলাম সরোয়ার্দী বিপ্লব বাদী হয়ে চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায় ওই হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গজারিয়া থানার পুলিশ ওই তিনজনকে আসামি করে ৩ অক্টোবর অভিযোগপত্র জমা দেয়। মুসিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।

পরে পায়েলের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ মামলাটি চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে।

গত ২ এপ্রিল তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিয্গে গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই বিচারক।

এরপর ৮ এপ্রিল মামলায় প্রথম সাক্ষ্য দেন বাদী পায়েলের মামা গোলাম সরোয়ার্দী বিপ্লব। আর পায়েলের বাসযাত্রার সঙ্গী তার দুই বন্ধু আকিবুর রহমান আদর এবং মহিউদ্দিন শান্ত ১৬ এপ্রিল আদালতে সাক্ষ্য দেন।

Logo-orginal