, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহর দাফন সম্পন্ন

প্রকাশ: ২০১৯-০৪-২৮ ২১:০৫:৫৯ || আপডেট: ২০১৯-০৪-২৮ ২১:০৫:৫৯

Spread the love

ঢাকাঃ সাংবাদিক মাহফুজউল্লাকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার দাফন সম্পন্ন হয়।

দাফনের সময় মাহফুজউল্লাহ বড় ভাই মাহুববউল্লাহ, মাহফুজউল্লাহর স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ আত্মীয়স্বজনরা এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাহফুজউল্লাহের মরদেহ আনা হলে সাংবাদিকসহ রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীরা ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।

জাতীয় প্রেস ক্লাব, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, নোয়াখালী সাংবাদিক ফোরাম, জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্মচারী ইউনিয়ন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিএনপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বরেণ্য সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ গতকাল গভীর রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।

শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানে করে তাঁর মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে এসে পৌঁছায়।

বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করেন মাহফুজ উল্লাহর বড় মেয়ে মুসাররাত হুমায়রা অঙ্গনা, ছেলে মুজতবা হাবীবসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরা।

বিমানবন্দর থেকে মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ মোহাম্মদপুরের আল মারকাজুলে গোসল শেষে তাঁর গ্রিন রোডের বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয় তাঁর লাশ।

মরহুমের প্রথম জানাজা আজ রোববার বাদ জোহর গ্রিন রোড ডরমিটরি জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। পরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা হয়। সেখানে তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।

মাহফুজ উল্লাহকে তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয় ।

গতকাল শনিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

কিডনি, ফুসফুস ও হার্টের বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন মাহফুজ উল্লাহ। গত ২ এপ্রিল সকালে ধানমণ্ডির গ্রিন রোডের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে মাহফুজ উল্লাহকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখা‌নে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। প‌রে শারী‌রিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ১০ এপ্রিল রাত ১১টা ৫২ মি‌নি‌টে মাহফুজ উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককের হাসপাতালে নেওয়া হ‌য়।

মাহফুজ উল্লাহ ১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের ১১ দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্ররাজনীতির কারণে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে তাঁকে ঢাকা কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ছাত্রাবস্থাতেই মাহফুজ উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশের একসময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই তিনি এ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মাঝে চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন তিনি। রেডিও ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেছেন।

মাহফুজ উল্লাহ আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন সক্রিয় পরিবেশবিদ এবং বাংলাদেশে তিনিই প্রথম পরিবেশ সাংবাদিকতা শুরু করেন।

Logo-orginal