, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি” হবিগঞ্জের দুই যুবকের বাড়ীতে উৎকণ্ঠা

প্রকাশ: ২০১৯-০৫-১৩ ১৪:০৮:২৪ || আপডেট: ২০১৯-০৫-১৩ ১৪:০৮:২৪

Spread the love

লিবিয়া থেকে নৌপথে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় হবিগঞ্জের দুই যুবক নিখোঁজ হয়েছেন।

তারা হলেন- সদর উপজেলার লোকড়া গ্রামের হাজী আলাউদ্দিনের ছেলে আবদুল কাইয়ুম (২২) ও আবদুল জলিলের ছেলে আবদুল মোক্তাদির (২২)।

এদিকে নিখোঁজদের পরিবারের লোকজন শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। নাওয়া-খাওয়া নেই। উৎকণ্ঠার মধ্যে তাদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে।

নিখোঁজদের পরিবার জানায়, কাইয়ূম, মুকতাদির, নুরুল আলম ও মামুন মিয়া ইতালি যাওয়ার জন্য ৬-৭ মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়। দালালের মাধ্যমে তারা প্রথমে লিবিয়া যায়। তাদের সঙ্গে সিলেট, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও লোকজনকে একত্রিত করে দালাল।

গত ৮ মে রাতে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দুটি নৌকায় তোলা হয় তাদের। আবদুল কাইয়ুম, আবদুল মোক্তাদির ও মামুন মিয়া এক নৌকায় ছিলেন। ওই নৌকায় যাত্রী ছিল ৭৫ জন। অপর নৌকায় ছিলেন নুরুল আলম। এ নৌকাটি সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছে যায়।

ইতালি গিয়ে নুরুল আলম পরিবারকে তার পৌঁছার খবর নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে কাইয়ুম, মুক্তাদির ও মামুনকে বহনকারী নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে যায়। মামুনের নিকট বড় বেলুন থাকায় তিনি পানিতে ভাসতে থাকে। এ সময় মুক্তাদিরও তার হাতে ধরা ছিলেন। সাগরে সাঁতরানোর একপর্যায়ে মামুন নিজেকে রক্ষায় মুক্তাদিরকে ছেড়ে দেন। এর পর মুক্তাদির মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন এর কিছুই বলতে পারেননি মামুন।

এদিকে প্রায় ৮ ঘণ্টা সাগরে ভাসমান অবস্থায় থাকার পর মাছ ধরার একটি ট্রলারের লোকজন দেখতে পেয়ে মামুনকে উদ্ধার করে। ডুবে যাওয়া নৌকাতে ৭৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা যায়।

লোকড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহির মিয়া জানান, উদ্ধার হওয়া মামুন মিয়া তার ভাগ্নে।

মোবাইলে মামুন মিয়া জানায়, নৌকাডুবির পর মোক্তাদিরের সঙ্গে তার হাত ধরে সাঁতার কেটেছে অনেকক্ষণ। হাত ছেড়ে দেয়ার পর আর মোক্তাদিরকে দেখা যায়নি।

আবদুল কাইয়ুমের বাবা হাজী আলাউদ্দিন জানান, গত বুধবার তার ছেলে বাড়িতে ফোন করে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বলে জানায়। নৌকাডুবির পর থেকে তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুক্তাদিরও রওনা দেয়ার আগের দিন বাড়িতে ফোন করেছে বলে জানিয়েছেন তার চাচা আবদুল খালেক।

কাইয়ুমের ভাই আলতাব হোসেন জানান, কাইয়ুম গত বছর বৃন্দাবন সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাস করেছেন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদে মাস্টাররোলে চাকরি করতেন। ৬-৭ মাস আগে কাইয়ুম, মোক্তাদির, নুরুল আলম ও আষেঢ়া গ্রামের মামুন ইতালি যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়।

তারা দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পৌঁছে। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দালালের মাধ্যমে গত ৯ মে নৌকায় ওঠে। নৌকাডুবির পর তাদের আর খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মুক্তাদির যে মামুনের হাত ধরেছিল সেটা মামুন জানিয়েছেন। এ ছাড়া আর কোনো খবর তারা পাচ্ছেন না। দালালের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে দালালও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লুকড়া ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন আব্বাস জানান, তাদের নিখোঁজের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। সার্বক্ষণিক তাদের পরিবারের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখছেন। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ দুজনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তারা জীবিত না মারা গেছে তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। উৎসঃ যুগান্তর।

Logo-orginal