, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

কুয়েতে আজ বাবা শেখ জাবেরের স্বপ্ন দৃষ্টিনন্দন সেতুর উদ্ভোধন

প্রকাশ: ২০১৯-০৫-০১ ১০:৩৯:২২ || আপডেট: ২০১৯-০৫-০১ ১১:২৬:৪৪

Spread the love

আবুল কাশেম, কুয়েতঃ মাত্র ১৭৮২০ বর্গ কি.মি.আয়তনের দেশ কুয়েতের সফল রূপকারের নাম বাবা মরহুম শেখ জাবের আল সাবাহ।
তার স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন হবে আজ।

আজ বুধবার (১ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় কুয়েতের আমীর ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট উদ্ভোধন করবেন বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু “শেখ জাবের কসওয়ে”।

কুয়েতি নাগরিকদের বাবা শেখ জাবের আপাদমস্তক ছিলেন জনগণের খাদেম।

তার চিন্তা চেতনায় সমৃদ্ধ কুয়েত গড়ার স্বপ্নে ভরপুর ছিল।

কুয়েতের উন্নয়নের রূপকার জনপ্রিয় শাসক শেখ জাবের আল-আহমেদ আল-সাবাহ ( GCB (Hon), GCMG -Hon) জন্ম ২৯ জুন ১৯২৬ সাল।

মরহুমের আরবী নাম الشيخ جابر الأحمد الجابر الصباح‎‎।
কুনিয়াত নাম আবু মোবারক।

শেখ জাবের ছিলেন আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর তৃতীয় পুত্র সন্তান।

জাবের আল-মুবারাকিয়া স্কুল, আল-আহমেদিয়া স্কুল এবং আল-শারকিয়া বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং পরবর্তীতে ধর্ম, ইংরেজী, আরবি এবং বিজ্ঞান-এ বেসরকারী শিক্ষা লাভ করেন।

তাঁর ছোট ভাই ফাহাদ আল-আহমেদ আল জাবের আল-সাবাহ ১৯৯০ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাকী বাহিনীর হাতে দাসমান ভবনের সম্মুখে মৃত্যবরন করেন।

আল-সাবা রাজবংশের স্বাধীনতা পরবর্তী কুয়েতে তৃতীয় আমির ছিলেন তিনি এবং কুয়েতের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন।

৩১ ডিসেম্বর ১৯৭৭ থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০০৬ সাল পর্যন্ত ধনাঢ্য কুয়েতের আমীর ছিলেন শেখ জাবের।

ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর কুয়েতে শাসন করা তৃতীয় রাজা জাবের ১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত অর্থ ও অর্থনীতির মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন, যেখানে তিনি কুয়েতের শাসক হওয়ার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

১৯৬২ সালে, তিনি কুয়েতের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন, এই পদে অধিষ্ঠিত থেকে তিনি নতুন কুয়েতি দিনার প্রচলন এবং কুয়েতি মুদ্রা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন,এবং তিনি মুদ্রা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।

তেল সমৃদ্ধ কুয়েতের আয় দিয়ে গঠিত “কুয়েতি ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট” গঠন একটি মাইলফলক।
কুয়েতি ফান্ডের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের পাশে দাঁড়িয়েছিল শেখ জাবের।

উন্নয়নশীল দেশগুলির আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে; বর্তমানে এটি ১০৩ টি দেশের সাহায্য ও সহযোগিতা করেছে কুয়েতি ফান্ড।

তেল বিক্রি কুয়েতের রাজস্ব খাতের একটি অন্যতম স্থান দখল করে আছে।

শেখ জাবের আল-আহমেদ আল সাবাহ ইন্তেকাল করেন ১৫ জানুয়ারী ২০০৬ সালে।

ইতিহাসের পাতায় কুয়েতি জনগণের নিকট বেদনাময় দিন দুইটি, ২ আগস্ট ১৯৯০ যেদিন সাদ্দাম কতৃক কুয়েত দখলে নেওয়া এবং ১৫ জানুয়ারী ২০০৬ সাল সেদিন কুয়েতিদের জনপ্রিয় মানুষ বাবা শেখ জাবেরের ইন্তেকাল।

কুয়েতের উন্নয়ন ও সৌন্দর্য্য বর্ধনে সুব্বাইয়া, বুবায়াইন ও ফাইলকা দ্বীপকে মুল কুয়েতের সাথে সংযুক্ত করার গুরুত্বের বিবেচনায় ৯০ এর দশকে ব্রীজ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন শেখ জাবের।

আপাতত মুল কুয়েত থেকে সুবাইয়া ও বুবাইয়ান নামে দেশটির উপকূলীয় শহরের সঙ্গে যুক্ত হবে বিশ্বের সর্বোচ্চ দীর্ঘ এ সেতুটি।

বিশ্বের দীর্ঘতম এই সেতু নির্মাণে খরচ হচ্ছে ২.৬ বিলিয়ন ডলার।

সেতুর দুই পাশে দুই বন্দর, প্রশাসন ভবন ও দর্শক কেন্দ্র সব মিলে ১৫ লাখ বর্গমিটার জমির উপর এটি নির্মিত । 

সেতুটির নাম দেয়া হয়েছে শেখ জাবের কসওয়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই ইঞ্জিনিয়ারি এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এটি নির্মাণ করছে। ৬ বছর লাগছে সেতুটি নির্মাণ করতে। সেতুটির মোট দৈর্ঘ হচ্ছে ৪৮.৫৩ কিলোমিটার যা চীনের কিনডাওয়ের হাইওয়ান সেতুর চেয়ে ৭ কিলোমিটার বেশি দীর্ঘ। 

আশাকরা হচ্ছে সেতুটি কুয়েতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখিবে।

#তথ্যসুত্র কুয়েত উইকিপিডিয়া।
#লেখক কুয়েত প্রবাসী।

Logo-orginal