, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

অমিত মুহুরী শীর্ষ সন্ত্রাসী, জানতেন না খুনি রিপন

প্রকাশ: ২০১৯-০৬-০৯ ১৩:০৭:১২ || আপডেট: ২০১৯-০৬-০৯ ১৩:০৭:১২

Spread the love

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে বন্দি থাকা অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী খুন হওয়ার ঘটনায় রিমান্ডে থাকা আসামি রিপন নাথ বারবার একই তথ্য দিচ্ছেন। সূত্র জানায়, পাঁচ দিনের রিমান্ডে থাকা এই আসামি জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, অমিত মুহুরী যে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী এটা তিনি জানতেন না।

সেলের ভেতরে তিনটি বিছানার জায়গা থাকা সত্ত্বেও অমিত তাঁর পায়ের পাশের দুই ফুটের মতো জায়গায় তাঁকে ঘুমাতে বলার কারণেই দুজনের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। আর তাই রাতে অমিত মুহুরী ঘুমিয়ে পড়লে তাঁর মাথা ইটের আঘাতে থেঁতলে দেন তিনি।

গতকাল শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের তৃতীয় দিনে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে এসব কথা বলেছেন রিপন। তাঁর দাবি, অমিত মুহুরীকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন না তিনি। ২৯ মে তাঁকে ৩২ নম্বর সেলের ৬ নম্বর কক্ষে নেওয়া হয়। তিনি দেখেন, সেলের ভেতরে তিনটি বিছানা আছে। কারা সেলে কম্বল বিছিয়ে ঘুমায় বন্দিরা। সেলে আগে থেকে দুজন বন্দি আছে। তিনিসহ তিনজন হলেন।

রিপন নাথ জানান, কিন্তু সেলে প্রবেশের পর অমিত মুহুরী তাঁকে তিনটি বিছানার বাইরে ফ্লোরে অবশিষ্ট থাকা দুই ফুটের মতো জায়গায় ঘুমাতে বলেন, যা অন্য দুই বন্দির পায়ের কাছে ঘুমানোর মতো। এই নিয়ে অমিতের তর্ক শুরু হয় রিপন নাথের। এই সময় সেলের তৃতীয় বন্দি বেলাল ‘জিতো’ ‘জিতো’ শব্দ করেন। এতে রিপন নাথ মনে করেন, তর্কে জয়ী হওয়ার জন্যই ‘জিতো’ শব্দ উচ্চারণ করেছেন বেলাল। এই বন্দি বেলাল মা-সন্তান খুনের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি।

তর্কের পর তাঁরা তিনজনই ঘুমাতে যান। বেলাল মাঝখানের বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। অমিত ও রিপন নাথ বেলালের দুই পাশে শুয়ে পড়েন। কিন্তু রিপনের ঘুম আসছিল না। অমিতের সঙ্গে তর্কের বিষয়টি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর রিপন বিছানা ছেড়ে ওঠেন। সেলের ভেতরে থাকা রান্নার চুলার তৈরিতে ব্যবহৃত একটি ইট নিয়ে অমিতের মাথার পেছনের অংশে আঘাত করতে শুরু করেন। ইটের আঘাতে অমিত চিৎকার দেন। তাঁর চিৎকারে ঘুম ভাঙে বেলালের। তখন বেলাল এগিয়ে আসে অমিতকে রক্ষায়। রিপনকে বাধা দেয়। কিন্তু রিপন ক্রমাগতভাবে অমিতের মাথায় ইটের আঘাত করে যান। এ রকম অবস্থায় বেলালের চিৎকার শুনে সেলে প্রবেশ করেন কারারক্ষীরা। সুত্র জানায়, তিন দিন ধারাবাহিক জিজ্ঞাসাবাদে রিপন নাথ বারবার একই কথা বলছেন।

তবে রিপন নাথের এমন তথ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজ আহমেদ সন্তুষ্ট নন। তিনি ঘটনার নেপথ্যে অন্য কিছু আছে কি না তা জানতে চান। বাইরে থেকে কেউ পরিকল্পনা করে শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরীকে হত্যা করিয়েছে কি না।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) আসিফ মহিউদ্দীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শনিবার পর্যন্ত তিন দিনে আসামি গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য দিয়েছে। ঘুমানোর জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে তর্ক এবং তর্কের পর রাগের মাথায় ইটের আঘাত করেছে বলে দাবি করছে রিপন নাথ। কিন্তু এর বাইরে হত্যাকাণ্ডের আরো কোনো কারণ আছে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ’

গত ২৯ মে রাতে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী, হত্যাসহ ১৭ মামলার আসামি অমিত মুহুরীর মৃত্যুর পর ৩০ মে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সেলটি পরিদর্শন করেন। সুত্রঃ কালের কন্ঠ।

Logo-orginal