, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার ঘোষণা ইসরাইলের

প্রকাশ: ২০১৯-০৭-০৪ ১৫:৫৫:৪৩ || আপডেট: ২০১৯-০৭-০৪ ১৫:৫৬:০২

Spread the love

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্ভাব্য যুদ্ধে সম্পৃক্ত হতে সামরিক প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসরাইল। এদিকে তেহরানের বিরুদ্ধে পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলো। তারা দেশ দু’টিকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে তাদের মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির সাথে পরমাণু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়া হয়। কিন্তু গত বছর ইউরোপীয় মিত্রদের বাধা সত্ত্বেও ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, চুক্তিতে অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। ইরানকে নতুন চুক্তিতে বাধ্য করাতে চান তিনি। কিন্তু তেহরান তাতে রাজি হয়নি।
দুই দেশের উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় গত সোমবার (১ জুলাই) ইউরেনিয়াম মজুদের সীমা বাড়ানোর কথা জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ। ২০১৫ সালে সই হওয়া পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী ইরান ৩০০ কেজি পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করতে পারতো।

তবে ওই সমঝোতার ২৬ ও ৩৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, অপর পক্ষ এ সমঝোতা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে তেহরান এর কোনো কোনো ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখতে পারবে। সে অনুযায়ী ইরান এ পদক্ষেপ নেয়। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান আগুন নিয়ে খেলছে। মঙ্গলবার জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরানবিষয়ক দূতের এক যৌথ বিবৃতিতে ইরানের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানানো হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ইরানকে এই পদক্ষেপ প্রত্যাহারের আহ্বান জানাই এবং পারমাণবিক চুক্তিকে অবজ্ঞা করে এমন অন্য পদক্ষেপ থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানাই।

পরমাণু চুক্তি নিয়ে মতানৈক্যের পর ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে সম্প্রতি উপসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই আরব উপসাগরে ট্যাংকার বিস্ফোরণের ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত সেনা পাঠান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরইমধ্যে গত ২০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলে আসছে, দুর্ঘটনাবশতও শুরু হয়ে যেতে পারে তেহরান-ওয়াশিংটন যুদ্ধ। আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর করতে ট্রাম্প প্রশাসনকে উৎসাহিত করে আসছে ইসরাইল।

গত ১ জুলাই ইরানি পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কমিশনের প্রধান মোজতবা জলনৌর ইসরাইলকে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালালে আধঘণ্টার মধ্যে মার্কিন মিত্র ইসরাইলকে ধ্বংস করে দেয়া হবে। মঙ্গলবার এক নিরাপত্তা সম্মেলনে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটজ জানান, ইরানের শাসকগোষ্ঠী ভুল করে বসলে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে তার দেশ। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এর জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আর উত্তেজক পরিস্থিতির জবাব দিতেই ইসরাইল সামরিক্ত পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সূত্র : রয়টার্স সুত্রে নয়া দিগ্নত।

Logo-orginal