, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

যে কারণে হজ আদায় করা ফরজ

প্রকাশ: ২০১৯-০৭-২৬ ১১:৪৮:৩৬ || আপডেট: ২০১৯-০৭-২৬ ১১:৫০:৫৮

Spread the love

আলহামদুলিল্লাহ” ও্য়াচ্ছালামু আলা রাসুলল্লাহ (সঃ) ।
হজ্ব কোন সালে ফরজ হয়েছে এ ব্যাপারে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। কারো কারো মতে, পঞ্চম হিজরীতে। কারো কারো মতে, ষষ্ঠ হিজরীতে, কারো কারো মতে দশম হিজরীতে। অপেক্ষাকৃত শুদ্ধ অভিমত হচ্ছে- শেষের দুইটি অভিমত। অর্থাৎ হিজরী নবম সালে অথবা দশম সালে হজ্ব ফরজ হয়েছে। দলিল হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার বাণী:
وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا
(অর্থ- আরএঘরেরহজ্বকরাহলোমানুষেরউপরআল্লাহরপ্রাপ্য; যেলোকেরসামর্থ রয়েছেএপর্যন্তপৌছার।) এ আয়াতের ভিত্তিতে হজ্ব ফরজ হয়। এই আয়াতে কারীমা আমুল ওফুদ (প্রতিনিধিদল আগমনের বছর) তথা নবম হিজরীর শেষ দিকে নাযিল হয়েছে। অতএব, নবম হিজরীর শেষ দিকে হজ্ব ফরজ হয়েছে। দেখুন যাদুল মাআদ (৩/৫৯৫)।
হজ্জ ফরয হওয়ার শর্ত পাঁচটি
আলেমগণ হজ্ব ফরজ হওয়ার শর্তগুলো উল্লেখ করেছেন। কোন ব্যক্তির মধ্যে এ শর্তগুলোপাওয়া গেলে তার উপর হজ্ব ফরজ হবে; আর পাওয়া না গেলে হজ্ব ফরজ হবে না। এমন শর্ত- পাঁচটি। সেগুলো হচ্ছে- ইসলাম, আকল (বুদ্ধিমত্তা), বালেগ হওয়া, স্বাধীন হওয়া, সামর্থ্য থাকা।
হজ্জের ফরয ৩টি
১. ইহরাম বাঁধা: হজ্জের নিয়ত করতঃ তালবিয়া পাঠ এর অন্তর্ভুক্ত।
২. ‘উকুফে ‘আরাফা (আরাফাতের ময়দানে অবস্থান): ৯ই জিলহজ্জের সূর্য হেলার পর থেকে ১০ই জিলহজ্জের সুবেহ সাদেক পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা।
৩. তাওয়াফে যিয়ারাত: বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করা। কিন্তু আরাফায়ে অবস্থানের পূর্বে যে তাওয়াফ করা হয় তা ফরয বলে গণ্য হবে না।
হজ্জের ওয়াজিব ৬টি
১. ‘সাফা ও মারওয়া’ পাহাড় দ্বয়ের মাঝে ৭ বার সায়ী করা।
২. ‘অকুফে মুযদালিফায় ৯ই জিলহজ্জ অর্থাৎ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত এক মুহূর্তের জন্য হলেও অবস্থান করা।
৩. মিনায় তিনটি জামারাতে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করা।
৪. ‘হজ্জে তামাত্তু’ ও ‘কিরান’কারীগণ ‘হজ্জ’ সমাপনের জন্য দমে শোকর করা।
৫. এহরাম খোলার পূর্বে মাথার চুল মুন্ডানো বা ছাটা।
৬. মক্কার বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে বিদা অর্থাৎ মক্কা থেকে বিদায়কালীন তাওয়াফ করা।
এছাড়া আর যে সমস্ত আমল রয়েছে সব সুন্নাত অথবা মুস্তাহাব।
ওমরাহর ফরয, ওয়াজিব
দুইটি-ফরয:১.ইহরাম পরিধান করা ২.বাইতুল্লাহর তাওয়াফ।
দুইটি -ওয়াজিব: ১. সাফা ও মারওয়া মধ্যবর্তী (সবুজ বাতি) স্থানে সাতবার সায়ী করা ২. মাথার চুল মুন্ডানো বা ছাটা।
তালবিয়া
‘লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক, লাব্বাঈক, লা-শারীকা-লাকা লাব্বাঈক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল-মুল্ক, লা শারীকালাক।’
অর্থ: আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত! আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোন অংশীদার নেই। নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার। আপনার কোন অংশীদার নেই।
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ
১. সেলাইযুক্ত যে কোন কাপড় বা জুতা ব্যবহার, এক্ষেত্রে স্পঞ্জ সেন্ডেলের ব্যবহার করা। ২. মস্তক ও মুখমণ্ডল (ইহরামের কাপড়সহ যে কোন কাপড় দ্বারা) ঢাকা, ৩. পায়ের পিঠ ঢেকে যায় এমন জুতা পরা। ৪. চুলকাটা বা ছিঁড়ে ফেলা, ৫. নখকাটা, ৬. ঘ্রাণযুক্ত তৈল বা আতর লাগানো। ৭. স্ত্রী-সহবাস করা। ৮. যৌন উত্তেজনামূলক কোন আচরণ বা কোন কথা বলা। ৯. শিকার করা। ১০. ঝগড়া বিবাদ বা যুদ্ধ করা। ১১. চুল দাড়িতে চিরুনী বা আঙ্গুলী চালনা করা, যাতে ছিড়ার আশঙ্কা থাকে। ১২. শরীরে সাবান লাগানো। ১৩. উকুন, ছারপোকা, মশা ও মাছিসহ কোন জীবজন্তু হত্যা করা বা মারা। ১৪. কোন গুনাহের কাজ করা, ইত্যাদি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সামর্থবানদেরকে দেরি না করে হজ সম্পাদনের তাওফিক দান করুন। তাদেরকে হজে মাবরুর দান করুন। আমিন।
সঙ্কলনেঃ আবুল কাশেম (প্রবাসী কলামিস্ট)

Logo-orginal