, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বরিশালে বিএনপির সমাবেশ মানুষের ঢল

প্রকাশ: ২০১৯-০৭-১৮ ২১:১৩:০২ || আপডেট: ২০১৯-০৭-১৮ ২১:১৩:০২

Spread the love

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে দেশের বিরোধী দলগুলোকে আলোচনায় ডাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বিকেল বরিশাল নগরীর হেমায়েত উদ্দিন ঈদগা মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশ দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন কোন কমিশনই না, তারা ব্যর্থ। তাই অবিলম্বে এই কমিশন বাতিল করে নিরপেক্ষ ব্যক্তি দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নির্বাচন দিয়ে নতুন সংসদ তৈরি করুন। সময় পার হওয়ার আগে এই কাজগুলো করুন। আর বিরোধীদলগুলোকে ডেকে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিকভাবে আলোচনা করে একটি রাস্তা বের করুন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার ভাগ্য আমি পরিবর্তন করবো। অন্য কেউ করে দেবে না। এই দেশের মানুষের ভাগ্য দেশের মানুষকেই পরিবর্তন করতে হবে।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের বলতে এসেছি, আপনারা সবাই চান আন্দোলন হোক। বেগম জিয়াকে বের করে আনতে হবে। কিন্তু সেই আন্দোলন থেকে যেন ফিরে আসতে না হয়। সেই আন্দোলন থেকে যেন পিছনে আসতে না হয়। তাই গ্রামে-গ্রামে যান, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেন। আর মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আসতে পারলে আমরা অবশ্যই জয়ী হবো।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অবিলম্বে এবং কাল বিলম্ব না করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। আর তাকে যদি মুক্তি না দেন তাহলে আপনাদেরও রক্ষা হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সাহেবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছি। একটি পার্টির সভাপতির মৃত্যুতে আমরা শোক প্রকাশ করেছি। কিন্তু এটা সত্য, এরশাদ সাহেবের শাসন আমলেই এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল। আর এটাও সত্য, এরশাদের আমলে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। জনগণের উত্তাল আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তাকে সরানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ তাদের (জাতীয় পার্টি) সঙ্গে আপস এবং তাদের সাথে জোট বেঁধে ও গণতন্ত্রের বিরোধীতা করে জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়। কিন্তু যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেন তাকে কারাগারে রাখা হয়।

বরিশালবাসীর উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বরিশাল থেকে নতুন আন্দোলনের সূচনা শুরু হলো। এই আন্দোলনে বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। আর আমরা আমাদের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি আছি।

দেশে অব্যাহত হত্যা, গুম ও ধর্ষণের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আদালতও আজকে নিরাপদ জায়গা নয়। আদালতেও প্রকাশ্যে বিচারকের সামনে খুন করা হচ্ছে। কোথায় যাবেন-কার কাছে যাবেন?

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমাদের অধিকার আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। আমাদের অধিকার অন্য কেউ এসে রক্ষা করে দেবে? আর আমাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য কেউ আন্দোলন করবে? বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ আন্দোলন করবে? তাই আজকে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এদেশের মানুষ যদি তাদের অধিকার, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চায় তাহলে আজকে সকলকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

সমাবেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ওপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছে। আর স্বৈরাচার সরকার কখনো ইচ্ছেকৃতভাবে ক্ষমতা ছাড়ে না। তাই বিএনপি আন্দোলনে যাবে, আপনারা জেগে উঠুন। বিএনপি আপনাদের নেতৃত্ব দেবে। কারণ আওয়ামী লীগ আর কখনো গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবে না। তাই আসুন, দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে বেগম জিয়াকে মুক্ত করি।

দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হয়েছে। কারণ বাংলাদেশ ধর্ষণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, বিচারহীনতা এবং ছাত্র ও যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না। এই অবস্থা থেকে উত্তোলন ঘটাতে হবে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মুজিবর রহমান সরোয়ারের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, একেএম রহমাতুল্লাহ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, আবুল হোসেন খান, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, হাসান মামুন, হায়দার আলী লেলিন প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন। উৎসঃ বাংলাদেশ জার্নাল ।

Logo-orginal