, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

পাকিস্তানের সঙ্গে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ শুরু করেছে ভারত

প্রকাশ: ২০১৯-০৮-২১ ১৯:৫৪:২০ || আপডেট: ২০১৯-০৮-২১ ১৯:৫৪:২০

Spread the love

পাকিস্তানের সঙ্গে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ শুরু করেছে ভারত। ইসলামাবাদের অর্থনীতি ধসে পানিকেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে দিল্লি। কোনো ধরনের আলোচনা-ঘোষণা ছাড়াই পাঞ্জাব থেকে প্রবাহিত পাকিস্তানমুখী সুলতেজ নদীর একটি বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। এতে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এরপরই সোমবার এ অভিযোগ তুলল ইসলামাবাদ। চুক্তিবিরোধী এ পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত একতরফাভাবে সর্বমুখী যুদ্ধ শুরু করেছে বলে মনে করছে পাকিস্তান সরকার।

পাকিস্তানের পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোজাম্মিল হোসেন এ অভিযোগ করেছেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ডন।

মোজাম্মিল হোসেন বলেছেন, ভারত এখন পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধ শুরু করেছে। তারা পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে একঘরে করার চেষ্টা করছে এবং অর্থনীতিকেও চেপে ধরতে চাইছে। তারা আমাদের বিরুদ্ধে পানিকে ব্যবহার করছে।

তিনি আরও বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর আগেই সুস্পষ্টভাবে পাকিস্তানে পানি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন, তবে তিনি এ সংক্রান্ত চুক্তিগুলোকে অমান্য করতে পারেন না।

পাকিস্তানের পানিবিষয়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘ভারত হঠাৎ উজানে বাঁধ খুলে দেয়ায় সুতলেজ নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে এবং বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দীর্ঘদিনের চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ভারত।’

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক খুররম শাহজাদ বলেছেন, ভারত বাঁধ খুলে দেয়ার বিষয়টি আমাদেরকে অবহিত করেনি। তবে ভারত এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, বন্যা মৌসুমে এটা দিল্লির একটা রুটিন ওয়ার্ক। এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই এবং এতে কোনো চুক্তি লঙ্ঘন হয়নি।

চলতি মাসের শুরুর দিকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে ভারত। এর পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে নেমেছে।

চীনের ভয়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি সংরক্ষণ করছে ভারত : ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ ঘুরিয়ে ভারতকে পানিশূন্য করার ছক কষছে চীন। কিন্তু চীনের এই পরিকল্পনা যাতে বাস্তবায়ন না হয় সেই কারণে ভারত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা নিয়েছে।

মোদি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার সময়ই সেই পানি ভারত নিজেদের জলাধারে সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করছে। ভারতকে পানিশূন্য করার পরিকল্পনা যাতে চীনের কোনোভাবেই বাস্তবায়িত না হয় সেই কারণেই এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। বছরখানেক আগে এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১.৮ বিলিয়ন কিউবিক পানি ভারত সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

কারণ এই ব্রহ্মপুত্র নদের পানি থেকেই চারটি হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্টের কাজ চলে। যেগুলো রয়েছে অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত সিয়াং, লোহিত, সুবানসিরি এবং দিবাং নদীর উপরে। প্রাথমিকভাবে সিয়াংয়ে ১০ হাজার মেগাওয়াট প্রোজেক্টের উপর নজর দিচ্ছে কেন্দ্র। যেখানে ৯.২ বিলিয়ন পানি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এ রিজারভার আসামের বন্যা নিয়ন্ত্রণে বহুল পরিমাণে সহায়তা করে।

তিব্বত থেকে চীনের জিনজিয়াং এলাকা পর্যন্ত খোঁড়া হচ্ছে লম্বা ১০০০ কিলোমিটার সুড়ঙ্গ। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চীনের তাকলামাকান মরুভূমিতে প্রবেশ করানোই এর মূল লক্ষ্য। তাই ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে এটিই হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুড়ঙ্গ।

এমনই একটি বিষয় নিয়ে কয়েক দিন আগেই বিতর্ক শুরু হয়। কিন্তু চীন এই বিষয়টিকে একেবারেই অস্বীকার করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল এই ধরনের কোনো পরিকল্পনাই করেনি চীন। এটিকে একেবারেই মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে এশিয়ার ক্ষমতাধর দেশটি। সূত্রঃ যুগান্তর ।

Logo-orginal