, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

আলোচিত সুন্দরী জুঁইয়ের ভয়াবহ প্রতরণা” বাদ যায়নি স্বামী ও ভাই

প্রকাশ: ২০১৯-০৯-০৭ ০৮:৪৭:২৪ || আপডেট: ২০১৯-০৯-০৭ ০৮:৪৭:৪১

Spread the love

খুলনায় ফারহানা নাসরিন ওরফে জুঁই নামে এক নারীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে সহোদর ও দুই স্বামীর এক কোটি ৬২ লাখ টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে খুলনার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনায় পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নালিশি মামলার আমলি আদালতে (দৌলতপুর থানা) মামলাটি দায়ের করেন ওই নারীর বড় ভাই মোস্তফা ফয়সাল। তিনি নগরীর গোয়ালখালী মেইন রোড এলাকার এস এম বাবর আলীর ছেলে।

আদালত সূত্র জানায়, বাদিপক্ষে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল মালেক আদালতে মামলাটি দাখিল করেছেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মো: শাহীদুল ইসলাম মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণের নির্দেশ দেন। একই সাথে আগামী ১৫ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্যসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন। এজাহারে বাদি মোস্তফা ফয়সাল উল্লেখ করেন, তিনি ২০১২ সালে সরকারিভাবে চাকরি পেয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যান। যাওয়ার সময় তার বোন ফারহানা নাসরিন জুঁই বিদেশ থেকে অর্জিত অর্থ তার নামে প্রেরণ করতে বিভিন্নভাবে ফয়সালকে উদ্বুদ্ধ করেন। এমনকি বলেন, বাবা ও মায়ের নামে টাকা পাঠালে তারা সব টাকা খরচ করে ফেলবে, দেশে ফিরে কিছুই পাবে না।

সে কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চার বছরে বিভিন্ন সময়ে ইসলামী ব্যাংক দৌলতপুর শাখায় জুঁইর নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে ৬০ লাখ টাকা প্রেরণ করেন। ২০১৬ সালে দেশে ফিরে তিনি জুঁইর কাছে নিজের পাঠানো টাকা ফেরত চান; কিন্তু টাকা ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে সে টালবাহানা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিকবার আলোচনা হলেও নানা অজুহাতে সে সময় ক্ষেপণ করে। সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সে রাখেনি। উপরন্তু ওই দিন সে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে।

বাদি আরো উল্লেখ করেন, ২০০৬ সালে আয়ারল্যান্ড প্রবাসী জিয়াউর রহমানের সাথে ফারহানা নাসরিন জুঁইয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই জমি কেনার কথা বলে জুঁই তার কাছ থেকে তিন দফায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সে সময় জুঁই মো: ইমরান নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে স্বামী জিয়াউর রহমান আয়ারল্যান্ডেই স্ট্রোক করে মারা যান। পরে ২০০৭ সালের ১১ অক্টোবর ঢাকার ব্যবসায়ী মো: হুমায়ুন কবিরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে জুঁই। বিয়ের পর তার কাছ থেকে বিভিন্ন মালামাল ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ৮৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আর্থিক বিষয় নিয়ে একপর্যায়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

বিপুল অঙ্কের এ অর্থ-সম্পদ স্থায়ীভাবে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে জুঁই স্বামী হুমায়ুন কবিরের স্বাক্ষর জাল করে ২০০৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একটি ভুয়া খোলা তালাকনামা তৈরি করে। ওই ঘটনায় হুমায়ুন কবির স্ত্রী জুঁইসহ কয়েকজনকে আসামি করে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জুঁইসহ আসামিরা এক মাস কারাবাস করেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। এ ছাড়া জুঁই তার স্বামী হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধেও যৌতুক ও নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলা এবং হুমায়ুন কবিরও তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেন।

বাদি মোস্তফা ফয়সাল অভিযোগ করেন, তার এবং দই ভগ্নীপতির বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেই ক্ষান্ত হয়নি জুঁই। সে জহিরুল ইসলাম জনি, সাইফুল ইসলাম সাকিল, সায়মন ও মোস্তাফিজসহ একাধিক পুরুষের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করার কারণে সে তার টাকা ফেরত না দিয়ে বরং সন্ত্রাসীদের দিয়ে তার ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করছে। উৎসঃ নয়া দিগন্ত ।

Logo-orginal