, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

আধুনিক পৌরসভা গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছি: বান্দরবানের মেয়র

প্রকাশ: ২০১৯-০৯-১৬ ১৪:০৫:৩২ || আপডেট: ২০১৯-০৯-১৬ ১৪:০৫:৩২

Spread the love

সবুজ পাহাড় ঘেরা বান্দরবান পৌরসভার যাত্রা ১৯৮৪ সালে। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার আয়তন ২৫.৮৮ বর্গকিলোমিটার। এখানে ৭০ হাজার মানুষের বসবাস। মোট ভোটার সংখ্যা ২৮,৯৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬,৩৬২ ও নারী ভোটার ১২,৫৭৫ জন।

২০০১ সালে পৌরসভাটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত হয়। বর্তমানে পৌরসভাটিতে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন মো. ইসলাম বেবী। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও তিনি। এর আগে তিনি কয়েকবার কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রতিবেদন দৈনিক যুগান্তরের।

সাড়ে তিন বছরে মেয়র রাস্তাঘাট সম্প্রসারণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সড়ক সজ্জিতকরণসহ অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। কিন্তু এরপরও রয়ে গেছে অনেক সমস্যা। জলাবদ্ধতা, ত্রুটিপূর্ণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানজট, যত্রতত্র পার্কিং, মাদকাসক্তদের দৌরাত্ম্য, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন পৌরবাসী। এ নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা কমিটির সহসভাপতি অংচমং মারমার অভিযোগ, ‘প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও পৌরবাসী প্রত্যাশিত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ত্রুটি রয়েছে। দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা নেই। পৌরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা তিনি করতে পারেননি।’

এসব অভিযোগের জবাব দিতে যুগান্তরের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেয়র মো. ইসলাম বেবী। তিনি বলেন, ‘পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আশানুরূপ উন্নয়ন হয়েছে। অগোছাল পৌরশহরটি অনেকখানি বদলে দিতে সক্ষম হয়েছি। সমস্যাগুলোর ৮০ শতাংশ সমাধান করেছি। ৭ নম্বর এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে।’

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আধুনিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসমৃদ্ধ পৌরসভা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেটা করতে পেরেছি। বৈদ্যুতিক সাজসজ্জায় সজ্জিত করেছি পৌর এলাকা। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে। রাজনৈতিক কোনো সহিংসতা নেই; যে কারণে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়নি।’

জলাবদ্ধতা নিরসন সম্পর্কে মেয়র বলেন, ‘এ সমস্যা সমাধানে খাল দখলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। ইতিমধ্যে ফুটপাত শতভাগ দখলমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনো দখলদারকে ছাড় দেয়া হয়নি। পৌরবাসীর নাগরিক সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে কখনও পিছু হটিনি।’

তিনি বলেন, ‘মাদক, ছিনতাই, সন্ত্রাস এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান কঠোর। এ কারণেই এ ধরনের অপরাধ আমার পৌরসভায় খুব কম হয়। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।’

পৌরসভায় দুর্নীতি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়েই পৌরসভাকে দুর্নীতি মুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ নেই। বর্তমানে আমার অফিস দুর্নীতি মুক্ত।

নাগরিক সেবা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পৌরবাসীর নাগরিক সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। সবাইকে সন্তুষ্ট করা তো সম্ভব নয়, তবে আমার কাজে অধিকাংশ মানুষ সন্তুষ্ট বলে আমার বিশ্বাস।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা আমার অধীনে নয়। এগুলো পার্বত্য জেলা পরিষদের হাতে ন্যস্ত। তারপরও পৌর এলাকার মধ্যে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক আর হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব করছি।’

মেয়র বলেন, ‘আমি উন্নয়ন কাজে বিশ্বাসী। কী কী কাজ করেছি তা পৌরবাসীর সামনে দৃশ্যমান। আধুনিক পৌরসভা গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছি। দীর্ঘদিন কাউন্সিলর থাকার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পৌরবাসীর সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি। কতটুকু পেরেছি, কতটুকু পারিনি- সেই মূল্যায়ন জনগণ করবে।’

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা- জানতে চাইলে মো. ইসলাম বেবী বলেন, এটি দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। দল মনোনয়ন দিলে প্রার্থী হব।

Logo-orginal