, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

Ismail hossain Ismail hossain

রাঙ্গুনিয়ার রাজানগরে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর

প্রকাশ: ২০১৯-০৯-১৫ ২০:৪৫:১১ || আপডেট: ২০১৯-০৯-১৫ ২০:৪৫:১১

Spread the love

ইসমাঈল হোসেন নয়ন, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় রাতের আঁধারে সনাতন সম্প্রদায়ের মন্দিরে ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে দক্ষিণ রাজা নগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কর্মকার পাড়ায় দুর্বৃত্তরা সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের ফটকের তালা ভেঙ্গে দুইটি প্রতিমা, দানবাক্স ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাংচুর করে। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এই বিষয়ে থানায় মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।

সূত্রে জানা যায়, কর্মকার পাড়া শ্মশান কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় প্রতিপক্ষের দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। শনিবার দিনগত রাত ২টার দিকে দেশীয় অস্ত্র সহ একদল ব্যক্তি শ্মশানের জায়গা দখলের পায়তারা শুরু করেন। তারা সেখানে ইট-বালি ফেলে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা চালালে স্থানীয় হিন্দু ধর্মালম্বিরা সংগঠিত হয়ে তাদের প্রতিরোধ করতে আসে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রাতভর এই পরিস্থিতে ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে শ্মশান থেকে ৫শত গজ দূরে দক্ষিণ রাজানগর কর্মকার পাড়া সার্বজনীন মন্দিরে প্রবেশ করে দুটি প্রতিমা ও পূজার সামগ্রী ভাংচুরের ঘটনা ঘটায় প্রতিপক্ষের লোকজন।

শ্মশান পরিচালনা কমিটির সভাপতি দিলীপ কর্মকার বলেন, অভিযুক্তদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরের পাশে শশ্মানের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই নিয়ে একটি মামলা চলছে। শশ্মানের জায়গা দখলের জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁরা। রাতের আঁধারে মন্দিরে ঢুকে বিশ্বকর্মা ও স্বরস্বতী প্রতিমা, দানবাক্স ও আলমিরাতে দূর্গাপূজার জন্য রাখা টাকা ও প্রতিমার গায়ের স্বর্নালংকার নিয়ে যায়। এই বিষয়ে ৪ জন চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা এজাহার দিয়েছি।’

মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি হারাধন কর্মকার বলেন, ‘দক্ষিণ রাজানগর কর্মকার পাড়া মহাশ্মশানের জায়গা রাতের আঁধারে দখলের পায়তারা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তারা মন্দিরের স্থায়ী প্রতিমা স্বরস্বতী ও বিশ্বকর্মা মূর্তি দুটি ভাংচুর করে। একটি কাটের ও একটি স্টিলের দান বাক্স ভেঙ্গে আনুমানিক ১ লাখ ১০হাজার টাকার নগদ অর্থ নিয়ে যায়। এছাড়া মন্দিরের স্টিলের আলমারি ভেঙ্গে সেখানের মূল্যবান কাগজপত্র নষ্ট করে দেয় এবং প্রতিমার জন্য রাখা দামী গহনা নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পূজার জন্য রাখা মন্দিরের সমস্ত সামগ্রী ঢোল-তবলা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন তারা।’

রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভুঞা বলেন “মন্দিরের ভাংচুরের ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। মন্দিরের পাশে শশ্মানের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে জেনেছি। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। এই বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রতিমা ভাংচুরের বিষয়টি খতিয়া দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় রাঙ্গুনিয়ার হিন্দুধর্মালম্বিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রীয়া সৃষ্টি হয়। হিন্দুধর্মালম্বিদের বিভিন্ন শ্রেণির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্ঠা নির্মল কান্তি দাশ ও সভাপতি বিভূতি ভূষন সেন বলেন, “ মন্দিরে ভাংচুরের ঘটনায় সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন পর দূর্গাপূজা শুরু হবে। দূর্গাপূজা পালন করতে পারব কিনা সংশয়ে আছি। আমরা ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার দাবি করছি। ”

Logo-orginal