, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

আগে পাকিস্তান শোষণ করতো, এখন ভারত করছে: সুলতানা কামাল

প্রকাশ: ২০১৯-১০-০৫ ১৮:৪৭:০২ || আপডেট: ২০১৯-১০-০৫ ১৮:৪৭:০২

Spread the love

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, স্বাধীনতার আগে সকল সুযোগ সুবিধা যেত পশ্চিম পাকিস্তানে আর শোষণ হতো পূর্ব পাকিস্তান, যত ক্ষতিকর প্রকল্প হতো পূর্ব পাকিস্তানে। তেমনিভাবে বাংলাদেশে যত ক্ষতিকর প্রকল্প তা যৌথভাবে করছে ভারত। সেটা করতে যে পণ্য ব্যবহৃত হবে তা হতে হবে ভারতীয়। এবং সমস্ত সুযোগ-সুবিধাও নিয়ে যাবে ভারত। এই জায়গায় মনে হয় চিন্তা-ভাবনার সময় এসেছে।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, স্বাধীনতার আগে সকল সুযোগ সুবিধা যেত পশ্চিম পাকিস্তানে আর শোষণ হতো পূর্ব পাকিস্তান, যত ক্ষতিকর প্রকল্প হতো পূর্ব পাকিস্তানে। তেমনিভাবে বাংলাদেশে যত ক্ষতিকর প্রকল্প তা যৌথভাবে করছে ভারত। সেটা করতে যে পণ্য ব্যবহৃত হবে তা হতে হবে ভারতের। এবং সমস্ত সুযোগ-সুবিধাও নিয়ে যাবে ভারত। এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে।

শনিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল লিখিত বক্তব্যে বলেন, রামপাল প্রকল্প নির্মাতা ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি তাদের নিজ দেশে সব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থগিত করেছে। ইকোনমিক টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনটিপিসি আগামী পাঁচ বছর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে না। কারণ তারা কার্বন তৈরির দায় কমাতে চায়। বরং এনটিপিসি গুজরাটে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সৌর শক্তি পার্ক তৈরি করতে ২৫ হাজার কোটি রুপি খরচ করছে। অথচ এই প্রতিষ্ঠান প্রবল গণআপত্তির মুখে বাংলাদেশে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে পিছপা হচ্ছে না। এটা নিঃসন্দেহে তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আচরণ।’

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সেটার পরিবর্তে আজকে বাংলাদেশকে একটা বাজারের জায়গা বানিয়েছে তারা (ভারত)। শিল্প কারখানার জায়গা বানিয়ে তারা নিজেদের স্বার্থ গুছিয়ে নেবে এ বিষয়টা কিন্তু আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ইউনেসকোর ৪৩তম সভায় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের দুরবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মূলত সুন্দরবন নিরাপদ ও ভালো রাখার ব্যাপারে আমাদের সফলতা নিয়ে ইউনেসকোর ৪১তম সভায় কিছু নেতিবাচক সঠিক পর্যবেক্ষণ ছিল। বাংলাদেশের যেসব বিষয়ে দায়িত্ব ছিল বা করণীয় ছিল তা গত জুনে ৪৩তম সভায় প্রতিবেদন আকারে দাখিল করা হয়। কিন্তু ওই সভায় কমিটি সন্তুষ্ট হয়েছে বলে মনে হয়নি। কারণ ২০১৭ সালের কাজগুলো সম্পন্ন করতে তাগাদা দেয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ইউনেসকোর পর্যবেক্ষণ দল সরেজমিনে দেখতে সুন্দরবনে আসবে। আর বাংলাদেশকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কৃতকাজের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। আগামী বছর এই সময় প্রতিবেদন মূল্যায়ন করা হবে। সেই সভায় সরকারের কাজে কমিটি সন্তুষ্ট না হলে আগামী বছরই সুন্দরবন আবারও বিপদাপন্ন ঐতিহ্য তালিকায় চলে যেতে পারে যা দেশ ও জনগণের জন্য অযোগ্যতা, ব্যর্থতা, দুঃখজনক, লজ্জার ও অপমানের একটি বিষয় হবে।’

সংগঠনের পক্ষে তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, ‘অবিলম্বে সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলজুড়ে সব কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করে বিকল্প জ্বালানি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সুন্দরবনের বাফার জোন করে বনের কাছাকাছি সব কলকারখানা ও এলপিজি কারখানা বন্ধ করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন, কমিটির সদস্য রুহীন হোসেন প্রিন্স ও শরীফ জামিল প্রমুখ।

Logo-orginal