, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

খালেদা জিয়াকে দেখে কাঁদলেন সাংসদ হারুন”

প্রকাশ: ২০১৯-১০-০২ ১৭:২০:৩৯ || আপডেট: ২০১৯-১০-০২ ১৭:২০:৩৯

Spread the love

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার দেখা করেছেন বিএনপির তিন সংসদ সদস্য। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বর্ণনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন হারুন অর রশিদ এমপি। তিনি বলেন, নেত্রী ভীষণ অসুস্থ। তার অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তিনি নিজ হাতে খেতেও পারেন না। জরুরিভিত্তিতে তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।

মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বিএসএমএমইউতে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেন হারুনসহ দলটির তিন সাংসদ।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা শেষে হারুনুর রশীদ এসব কথা বলেন। তার সঙ্গে বিএসএমএমইউতে যাওয়া অপর দুই সংসদ সদস্য হলেন- উকিল আবদুস সাত্তার ও মো. আমিনুল ইসলাম।

সেখান থেকে বেরিয়ে এসে হারুন অর রশীদ বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুব বেদনাদায়ক, হাত ফুলে আছে, ব্যথা। খাওয়াটাও নিজের হাতে খেতে পারেন না। সঙ্গে যিনি আছেন, তিনি খাইয়ে দেন। তার পোশাকও আরেকজনকে পরিয়ে দিতে হয়। এ অবস্থায় তাকে জেলে বন্দি রাখাটা অত্যন্ত অমানবিক।

জামিনে মুক্তি না দিয়ে সরকার খালেদা জিযার প্রতি জুলুম করছে বলেও অভিযোগ করেন হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, জামিনে মুক্তি পেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন তিনি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হারুন অর রশীদ বলেন, খালেদা জিয়া চরম জুলুমের শিকার। তিনি কী কষ্টে আছেন তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এই জুলুম থেকে যেন আল্লাহপাক তাকে মুক্ত করে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

হারুন অর রশিদ বলেন, দেশবাসীর কাছে উনি দোয়া চেয়েছেন। বিদেশে চিকিৎসা দরকার। উন্নত বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দরকার। সুযোগ দিলে তো অবশ্যই বিদেশে যাবেন। আজকে জামিন পেলে কালই বিদেশে যাবেন।

প্যারোলের আবেদন করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে হারুন বলেন, প্যারোলের বিষয় আসছে কেন? উনি তো জামিন পাওয়ারই যোগ্য।

সরকারের তরফ থেকে প্যারোলের কোনো প্রস্তাবনা আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘প্যারোলের বিষয়ে কোনো প্রস্তাবনা নেই। এ বিষয়টি আসবে কেন? তিনি তো জামিন পাওয়ার যোগ্য।’

ওবায়দুল কাদেরকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, এমন উদাহরণ টেনে বিএনপির এ এমপি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কেন এই চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? এটি সারা দেশের মানুষ জানতে চায়।

সাংগঠনিক বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তিনি দলের খোঁজখবর নিয়েছেন। এক মাসে সারা দেশে বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। সরকারের বাধাবিপত্তির পরও লাখ লাখ লোক ওইসব সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) শুধু বললেন, তোমরা সবাইকে নিয়ে দেখেশুনে একসঙ্গে থাক। দেশে গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরে এলে মানুষ যেন মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারে, তাদের ভোটাধিকার ফিরে পায়, সে জন্য কাজ কর।’

সংসদে যোগদান নিয়ে দলের ভেতরে বিভক্তি থাকলেও আপনারা আপনাদের নেত্রীর মুক্তির বিষয়টি সামনে রেখেই সংসদে গেছেন- এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা বা কোনো বার্তা নিয়ে আপনারা এসেছেন কিনা- প্রশ্ন করা হলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা সংসদে যোগদান করার পর যে কয়বার কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, তাতে নেত্রীর মুক্তির বিষয়টি অন্যতম ছিল। দলনেতা হিসেবে ইতিমধ্যে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দুই-এক জায়গায় কথাও বলেছি, তার মুক্তির দাবিও জানিয়েছি। কিন্তু তারা আইনি ব্যাপার বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর উদ্দেশে জানাচ্ছি, খালেদা জিয়ার জামিনের যে অধিকার, সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যত দ্রুত সরকার জামিন দেবে আইনের শাসনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

জানতে চাইলে উকিল আবদুস সাত্তার যুগান্তরকে বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) খুবই অসুস্থ। আধা ঘণ্টা তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে আমরা দেখা করতে যাইনি। এতদিন দেখা করতে যাইনি, আমরা তো অমানবিক কাজ করেছি। আসলে আমাদের তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি।’ মুক্তি প্রসঙ্গে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমরা মুক্তির বিষয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করছি বলে তাকে বলেছি।’

দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১ এপ্রিল থেকে কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি চিকিৎসাধীন। সুত্রঃ যুগান্তর।

Logo-orginal