, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ঈদে মিলাদুন্নবি : প্রাসঙ্গিকতার অনুসন্ধান পুরো টা পড়ুন বুঝতে সুবিধা হবে

প্রকাশ: ২০১৯-১১-১০ ০৯:৫৫:০৩ || আপডেট: ২০১৯-১১-১০ ০৯:৫৫:০৩

Spread the love

রাসুল (সা.) এর জন্ম দিবস প্রকাশ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয় প্রতি বছরের ১২ রবিউল আউয়াল। আমরা এখন এই আয়োজনকে ঈদে মিলাদুন্নবি হিসেবেই অভিহিত করছি। জানা যায়, প্রথমবারের মতো এই আয়োজন যখন পালিত হয়, তারপর থেকে বিদ্যুৎ বেগে এই সংস্কৃতিটি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। ১২ রবিউল আউয়াল দিনটি রাসুলের (সা.) জন্ম দিবস হিসেবে এবং একই সঙ্গে ঈদে মিলাদুন্নবি পালনের জন্য অনেকটাই যেন নির্ধারিতই হয়ে যায়।

ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি—ঈদে মিলাদুন্নবি সর্বপ্রথম পালন হয় ৫১৭ হিজরিতে। অর্থাৎ আরব ভূখণ্ডে ইসলামের উত্থানের প্রায় ৬ শতাব্দী পর এই চর্চার সূত্রপাত। তার মানে, ওফাতের পর প্রায় ৫শ বছর পর্যন্ত রাসুলের (সা.) জন্মদিন পালনের সাথে মুসলমানরা পরিচিত ছিল না। এর কারণ হলো, জন্মদিন পালন করা ইসলামি সংস্কৃতির কোনো অংশ নয়। আমি এই সংস্কৃতিকে হারাম বলছি না। তবে, যা বলতে চাইছি তাহলো আরবরা দীর্ঘ সময় অবধি জন্মদিন পালনের সংস্কৃতির অনুশীলন করেনি। আরবরা কখনোই জন্মদিন মনে রাখা কিংবা সংরক্ষন করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিত না।

আমরা যারা এখন মুসলমান হিসেবে দাবি করছি, আমাদেরও দাদা, নানা বা দুই-এক প্রজন্ম আগের তথ্য যদি সংগ্রহ করেন, তাহলে দেখবেন—তারা কেউই নিজেদের জন্মদিন, এমনকি জন্মের মাসটিও নিশ্চিত করে বলতে পারে না। ভাসাভাসা একটা ধারনা রাখেন মাত্র। কারণ, জন্মদিনকে এত আলাদাভাবে মনে রাখার মতো গুরুত্ব তারা কখনোই দেননি। জন্মদিন পালনের সংস্কৃতি মূলত এসেছে পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে। যদিও আধুনিক সময়ে এসে আমরা জন্মদিনের রেকর্ড রাখছি বা সংরক্ষন করছি। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এই সংস্কৃতির চর্চা বা অনুশীলন একেবারেই ছিল না।

ঠিক একই কারণে, রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন পালনের চর্চাটাও শুরু হয়েছে অনেক বছর পরে এসে। মিশরের ফাতিমিয় বংশের প্রতিনিধিরা প্রথম এই ঈদে মিলাদুন্নবির আয়োজন করে। আজকের দিনে এসে যাদেরকে আমরা আগা খান বা ঈসমাইলিয়া বলে চিনি, ফাতিমিয়রা ছিলেন তাদের পূর্বপুরুষ। ফাতিমিয়রা বেশ লম্বা একটি সময়ে মিসর শাসন করেছিল। তৎকালিন সময়ে, মিসর শাসন করতে গিয়ে ফাতিমিয়রা বছরে প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি উৎসবের আয়োজন করত। উৎসব আয়োজন কেন হয়? কেন মানুষকে উৎসব পালনে উদ্বুদ্ধ করা হয়? কেনই বা উৎসবের প্রচলন করা হয়? এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আমাদের একটু ভাবা দরকার।

মূলত, উৎসব আয়োজনের প্রথম উদ্দেশ্য হলো—জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক। উৎসবের আয়োজন হলে অসংখ্য মানুষ এক জায়গায় সমবেত হয়, তারা পন্য ক্রয়-বিক্রয় করে; ফলত দেশের অর্থনীতি বেগবান হয়। তৃতীয়ত, উৎসব ঘনঘন হলে শাসক মহলের জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতাও বেড়ে যায়। এই কারণেই শাসক মহল স্বপ্রণোদিত হয়েই ঘটা করে উৎসব আয়োজন করতে আগ্রহী হয়। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বোঝা যায়— বছরে ৩০/৪০টি উৎসব আয়োজনের নেপথ্যে ফাতিমিয় শাসকদেরও ভিন্ন কিছু কারণ ছিল। তৎকালিন সময়ে কয়েক সপ্তাহ পর পরই নানা অযুহাতে, নানা নামে বড়ো করে উৎসবের আয়োজন করা হতো। এভাবেই ফাতিমিয়দের হাত ধরে ঘাদির খুম, ১০ মুহাররাম, শিয়াদের অন্যান্য উৎসব, কিংবা আজ এই ইমামের জন্ম দিবস, দুদিন পর অন্য আরেক ইমামের ওফাত দিবস পালন শুরু হয়ে যায়। ঠিক, এরকম চর্চার ধারাবাহিকতায় একসময় রাসুল (সা.)-এর জন্মদিবস পালনের সংস্কৃতিও শুরু হয়। যেমনটা আগেও বলেছি—হিজরতের ৫১৭ বছর পর প্রথমবারের মতো রাসুলের (সা.) জন্মদিবস পালন শুরু হয়।

ফাতিমিয়রা রাসুল (সা.)-এর জন্মদিবস পালন শুরু করার ১৫০ বছর পর কিছু কিছু সুন্নি গভর্নর এই সংস্কৃতির পক্ষে অবস্থান নেন। তাদের কাছে এই উৎসবের চিন্তাটাকে নিজেদের স্বার্থের খুবই উপযোগী ও ফলপ্রসূ বলে মনে হয়। ফলে, তারা ফাতিমিয়দের আবিস্কৃত এই উৎসব নিজেদের অঞ্চলেও আমদানি করেন। ফাতিময়রা মিশরে ১২ রবিউল আউয়ালকে ঘটা করে ঈদে মিলাদুন্নবি হিসেবে পালন করত। আর সুন্নিরা প্রথমবারের মতো এই আয়োজন করে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের নিকটবর্তি মসুল নামক এলাকায়। সেখানকার সুন্নি গভর্নর (এটা মনে রাখতে হবে যে, সুন্নি গভর্নর এই প্রথা প্রথম শুরু করেছিলেন। কোনো খলিফা নন) ৬৭০ হিজরীতে প্রথম ঈদে মিলাদুন্নবির আয়োজন করেন। অর্থাৎ হিজরতের পর দীর্ঘ ৬৭০ বছর পর্যন্ত সুন্নি মুসলমানদের কাছে এই দিবসটি মোটামুটি অজানাই ছিল। যদিও সুন্নিরা ফাতিমিয়দের অনেক পরে ঈদে মিলাদুন্নবি আয়োজন শুরু করে, কিন্তু তাদের আয়োজনটি ছিল ভীষণরকম জাঁকজমকপূর্ণ, বিলাসী ও ব্যয়বহুল। শুধু তাই নয়, তৎকালীন সময়ের সুন্নি গভর্নরবৃন্দ বড়ো আকারে এই উৎসব আয়োজন করতে গিয়ে একে অপরের সাথে রীতিমত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। উৎসব উপলক্ষে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনামুল্যে রুটি ও গোশত বিতরণ করা হতো। তাই, বিপুল সংখ্যক মানুষ এই উৎসবে অংশ নিতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে এই ঈদে মিলাদুন্নবি জাতীয় উৎসবের রূপ লাভ করে।

একটু আগেই যেমনটা বললাম—শাসকরা নিজেদের ও দেশের স্বার্থে এই উৎসবগুলোর আয়োজন করত। একেকটি উৎসবকে কেন্দ্র করে বড়ো আকারে ব্যবসা-বানিজ্য হতো। ফলত, দেশের অর্থনীতি বিপুল পরিমান মুদ্রা অর্জন করত। এখনকার সময়েও যেমন বিভিন্ন দেশের শাসকরা তাদের দেশে অলিম্পিক বা বিশ্বকাপ ফুটবল বা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মতো আয়োজন নিজ দেশে নেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়; এমনকি বিপুল পরিমান অর্থও বিনিয়োগ করে।

আবার ফিরে যাই সুন্নি গভর্নরদের উৎসব আয়োজন প্রসঙ্গে। এই গভর্নররাও নিজেদের অঞ্চলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য এবং নিজেদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঈদে মিলাদুন্নবি নামক উৎসবকে লুফে নিয়েছিল। আর এই উৎসবের কারণ যেহেতু রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন; তাই আয়োজনটি বর্ণাঢ্য হলেও সবাই বেশ স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিত। এভাবে হিজরী ৬৬০ বর্ষ থেকে ধীরেধীরে সুন্নি অঞ্চলগুলোতে ঈদে মিলাদুন্নবির চর্চা শুরু হয়। প্রথম দিকে, অনেক ফিকাহবিদ ও চিন্তাবিদরা এই উৎসব পালনের বিরোধিতা করেছিলেন। কেউ কেউ আবার শর্তসাপেক্ষে উৎসবের অনুমোদনও দিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই উৎসবটি এত বড়ো আকার ধারণ করে যে, শর্তগুলো পালন করা আর সম্ভব হয় না। বন্যার পানির মতো লাখ লাখ মানুষ এসে এই উৎসবের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়।

যেভাবে বর্তমানে রাসুল (সা.)-এর জন্মদিবস পালিত হচ্ছে, সে বিষয়ে আমার সতর্ক অবস্থান রয়েছে এবং আপনাদের অনেকেই তা জানেন। আমি মনে করি, যদি আপনি সত্যিকারেই রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন পালন করতে চান, তাহলে আপনি সোমবারে রোজা রাখতে শুরু করুন। কারণ, রাসুল (সা.)-কে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল—কেন আপনি সোমবার রোজা রাখেন? নবিজি (সা.) উত্তর দিয়েছিলেন—’আমি সোমবার রোজা রাখি, কারণ সোমবারেই আমি জন্মগ্রহন করেছিলাম।’

রাসুল (সা.)-এর এই হাদিস অনুযায়ী তাই তার জন্মদিবস পালনের জন্য আমাদের সোমবারে রোজা রাখার চর্চা শুরু করা উচিত। আমি খুব রুক্ষভাবে কিছু বলতে চাই না। তবে, এটুকু বলতে চাই—বছরে একদিন জন্মদিবস পালন করে রাসুল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করা অনেক সহজ। কিন্তু প্রকৃত ভালোবাসা কখনো একটিমাত্র দিনে সীমিত থাকতে পারে ন; বরং সারা বছরই সেই ভালোবাসা ধরে রাখতে হয়। বছরে একদিন আপনি কিছু টাকা খরচ করবেন বা একটি উৎসবে অংশ নিবেন, এটা কখনোই প্রকৃত ভালোবাসার বহি:প্রকাশ হতে পারে না।

প্রথমবার যেহেতু ১২ রবিউল আউয়ালেই ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করা হয় তাই স্বাভাবিকভাবেই এই দিনটি মুসলমানদের মনে ভালোভাবে গেঁথে যায়। কিন্তু রাসুল (সা.)-এর ওফাতের পর প্রথম ৬শ বছরে কোনো ইসলামি চিন্তাবিদ, ফিকাহবিদ, ধর্মতাত্বিক, খলিফা কিংবা হাদিস বিশারদদের কেউ রাসুল (সা.)-এর জন্মদিবস পালন করেননি। কারণ, এই জন্মদিন পালনের বিষয়টি তাদের চিন্তায়ই আসেনি। ইসলামের এতদিনের সংস্কৃতিতে জন্মদিন পালনের কোনো বিধানও ছিল না। হিজরতের ৬শ বছর পর খৃষ্টানদের ক্রিসমাসের আদলে মুসলমানরা এই দিবসটি পালন করতে শুরু করে। ইমাম বুখারি (র.) বা ইমাম মুসলিম (র.)-এর মতো প্রথিতযশা ইসলামি ব্যক্তিত্বরাও এই ধরনের কোনো চর্চার পক্ষে সুপারিশ করেননি। এমনকি, এই বিষয়ে এই ইমামদের কোনো আপত্তিও পাওয়া যায় না। কারণ, যে চর্চার সূত্রপাতই হয়নি, কিংবা যেই উৎসবের কোনো অস্তিত্বই আগে ছিল না, তারা কীভাবে তার বিরোধিতা করবেন বা আপত্তি তুলবেন? মুসলমানরা যে এই জাতীয় কোনো কিছুর প্রচলন করতে পারে—এমনটাও তাদের ধারনা ছিল না। থাকলে তারা নিশ্চয়ই আগাম কোনো মতামত দিয়ে যেতেন।

এমনই এক বাস্তবতায় ৬২০ হিজরিতে এসে খোরাসানের একটি সুফি সম্প্রদায় রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন পালন শুরু করে। কিছু কিছু আলিম তখনই বলেছিলেন—এটা খৃষ্টানদের ক্রিসমাসের নকল উৎসব। কেউ কেউ আবার এমনও বলেছিলেন—খৃষ্টানরা যদি ক্রিসমাস পালন করে যিশুখৃষ্টের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করতে পারে, তাহলে মুসলমানরা কেন জন্মদিন পালন করে রাসুল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা দেখাতে পারবে না? এভাবেই মুসলিম উম্মাহর খুব ছোট্ট একটি অংশ এই উৎসবের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। পরবর্তী ২০০ বছরে দাবানলের গতিতে উৎসবটি সমগ্র মুসলিম জাহানে ছড়িয়ে পড়ে।

অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ আগাগোড়াই এই উৎসব আয়োজনের বিরোধিতা করেছিলেন। অনেকে তো ফতোয়াও প্রদান করেছিলেন। কেউ কেউ সরাসরি এই উৎসবকে বিদাআত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আবার ইবনে হাজারের (র.) বলে গেছেন—এই উৎসবটি বিদাআত হলেও এর কিছু ভালো দিকও আছে। অনেক মুসলমান এই উৎসব উপলক্ষে একত্রিত হয়। রাসুল (সা.)-এর নামে দুরুদ পেশ করে। রাসুল (সা.)-কে নিয়ে আলোচনা করে। আবার ইবনে হাজারের মতের বিরুদ্ধে গিয়েও কেউ কেউ বলেছেন—এটা যদি বিদাআত হয়, তাহলে এর মাঝে কল্যান থাকতে পারে না। বর্তমান সময়ে এসেও ঈদে মিলাদুন্নবি নিয়ে অনেক কথা শোনা যায়। যারা পক্ষে বলে, তারা যেমন উগ্র মন্তব্য করে, আবার যারা এর বিপক্ষে বলেন, তারাও বেশ কড়া মন্তব্যই করেন।

তবে, সকল মতের বাইরে গিয়ে আমি একটি সাদামাটা প্রশ্ন রাখতে চাই। এই উৎসবটি হারাম, শিরক, বিদাআত না কুফরি, আমি সেই প্রসঙ্গেই যেতে চাই না। শুধু একটি প্রশ্নই করতে চাই। আর তাহলো—আমাদের মধ্যে কেউ কি সাহাবিদের তুলনায় রাসুল (সা.)-কে বেশি ভালোবাসতে পারবে? আমাদের মধ্যে কেউ কি এই দাবি করতে পারব যে, আমি আবুবকর (রা.) বা উমরের (রা.) তুলনায় রাসুল (সা.)-কে বেশি ভালোবাসি? যদি তা না হয়, তাহলে সাহাবিদের অনুশীলন ও চর্চাগুলোকে ধারন করে থাকাই কি বেশি নিরাপদ নয়? যে বিষয়টি নিয়ে এত বিতর্ক, তার ব্যপারে খোলাফায়ে রাশেদা এবং প্রাথমিক যুগের সর্বজনবিদিত স্কলারদের সিদ্ধান্ত ও প্র্যাকটিসকে মেনে নেওয়াই কি বেশি যৌক্তিক নয়?

এই সাহাবিরা কিংবা প্রাথমিক যুগের ইসলামি চিন্তাবিদরা কী করেছে, জানেন? তারা একনিষ্ঠভাবে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহকে অনুসরণ করে গেছেন। তাদের কাছে সিরাতকে মেনে চলাই ছিল রাসুল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করার উৎকৃষ্টতম পথ।

যারা উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাসুল (সা.)-এর জন্মদিবস পালন করে, তারা মূলত এর মাধ্যমে নবিজি (সা.)-এর প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখাতে চায়। আমি এর সাথে একমত নই। কেন আপনি রাসুলকে (সা.) বছরে মাত্র একদিন ভালোবাসবেন? বরং আপনার উচিত বছরের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মূহুর্তে রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসা।

আর সেই ভালোবাসার একটা মাত্র উপায় আছে; আর তাহলো রাসুল (সা.)-এর শিক্ষাকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা। রাসুল (সা.) আমাদেরকে যা করতে বলে গেছেন, আমরা যদি তা করতে পারি, তাহলেই আমরা রাসুল (সা.)-এর জন্মদিবসকে সবচেয়ে স্বার্থকভাবে পালন করতে পারব, তার প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রমান করতে পারব।

আমরা কাউকে ভালোবাসার দাবি করব, তার জন্য একদিন উৎসব আয়োজন করব, আর বছরের সবদিন তার শিক্ষা ও দর্শনকে অগ্রাহ্য করব, তাহলে তা কেমন ভালোবাসা হলো? সত্যিকারের ভালোবাসার দাবি আমরা তখনই করতে পারব, যখন আমরা আমাদের গোটা জীবনকে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহর আলোকে ঢেলে সাজাতে পারব।

মূল:
ডঃ ইয়াসির ক্বাদি,
মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ১৯৯৬ সালে প্রথমে হাদিস ও ইসলামি শাস্ত্র অনুষদ থেকে আরবি ভাষার ওপর ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন, পরে দাওয়াহ অনুষদ থেকে ইসলামি ধর্মতত্ত্বের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

★ অনুবাদ করেছেনঃ আলী আহমাদ মাবরুর
তিনি পেশায় সাংবাদিক। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
* মামুন আবদুল্লাহ ( কলাউজান, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম)

Logo-orginal