, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

দেশে জঙ্গিবাদে জড়িত বেশীর ভাগই ‘আহলে হাদিস’র সদস্য

প্রকাশ: ২০১৯-১২-১১ ০০:১১:৫৯ || আপডেট: ২০১৯-১২-১১ ০০:১১:৫৯

Spread the love

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্তদের ৯০ শতাংশের বেশি ধর্মীয় সংগঠন ‘আহলে হাদিস’র সদস্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

বাংলাদেশে জঙ্গি দমনে নিয়োজিত পুলিশের বিশেষায়িত শাখা এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধানের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থেকে এই তথ্য দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ‘উগ্রবাদবিরোধী জাতীয় সম্মেলন-২০১৯’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “কিছু দিন এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। কাজ করার সময় যে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে লক্ষ করেছি, সেটি হল পুলিশ যেসব জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করছে এবং যাদের বিচারের মুখোমুখি করছে, তাদের ৯০ শতাংশের উপরে একটি নির্দিষ্ট মতবাদে বিশ্বাসী, যেটিকে আমরা বাংলাদেশে আহলে হাদিস বলে চিনে থাকি।”

জঙ্গিবাদ নির্মূলে এই গোষ্ঠীর দিকে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন ঢাকার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “আহলে হাদিসপন্থি যেসব মুসলমান এই উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে আমি মনে করি, মূল টার্গেট তাদের দিকে থাকা উচিত। কারণ আমি যদি উৎপাদনটা বন্ধ করতে না পারি, তাহলে আমাদের সন্তানদের বুঝিয়ে শুনিয়ে খুব বেশি দিন ধরে রাখতে পারব না।

“এরা (আহলে হাদিস) বাংলাদেশে সর্বত্র সমানভাবে নাই। দক্ষিণবঙ্গের ও উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে।”

শফিকুল ইসলাম বলেন, “এদের সাথে কথা বলে আমরা যেটা বুঝেছি যে, ওদের বুঝাতে হলে আহলে হাদিসের বড় হুজুরকে দিয়ে বুঝাতে হবে। সুন্নি সম্প্রদায়ের হুজুরদের তারা (আহলে হাদিস) বলেন যে, তারা ইসলামের প্রকৃত রাস্তায় নেই।”

জঙ্গিদের সুপথে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রমে ঘাটতি থাকার কথা বলেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার।

তিনি বলেন, “একটি বিষয়ে আমরা পিছিয়ে রয়েছি, তা হল যাদের (জঙ্গি) আমরা ধরছি, তাদের আসলে আমরা প্রকৃতপক্ষে ডি-রেডিক্যালাইজড যে প্রক্রিয়া আছে, সে প্রক্রিয়ায় আমরা অত্যন্ত পিছিয়ে আছি। তাদের (জঙ্গি) বুঝিয়ে শুনিয়ে ভালো রাস্তায় নিয়ে আসার মতো মেকানিজম আমাদের প্রায় নেই বললেই চলে।

“জেল কর্তৃপক্ষ কিছু চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদেরও সামর্থ্য সীমিত এবং যারা আলেম সমাজের একটি অংশকে কাফের বলতে পারে, তাদের বুঝানোর মতো ধর্মীয় জ্ঞানও‌আমাদের জেলখানায় বা পুলিশের যারা আছেন, তাদের ততো গভীর জ্ঞানও থাকার কথা নয়।

“সেটির জন্য বিশেষ টিম তৈরি করে, এদের যদি জেলখানায় বুঝাতে পারি এবং ডি-রেডিক্যালাইজ প্রক্রিয়ার ভেতরে এনে সংশোধনের ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে কিছুটা কাজ করতে পারে।”

পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, “উগ্রবাদ প্রতিরোধে সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন। সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে জঙ্গি নির্মূলে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ।”

‘ফিকে হয়ে যাওয়া’ পারিবারিক বন্ধন ফিরিয়ে আনতে পরিবারকেও দায়িত্ব নেওয়ারও আহ্বান জানান পুলিশ প্রধান।

নিজের ছেলে-মেয়েরা কে কী করছে, সেদিকে প্রত্যেক অভিভাবককে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “নিঃসঙ্গতা, একাকিত্ব ও বিষণ্নতা আমাদের সন্তানদের বিপথে যাওয়ার প্রধান কারণ বলে আমি মনে করি।

“যাতে জঙ্গিবাদের পথে না বাড়ায় সেজন্য আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে একাকিত্ব, বিষণ্নতা থেকে বের করে বিভিন্ন কার্যক্রমে এনগেইজ করতে হবে।”

দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বিভিন্ন পেশার প্রায় পাঁচশ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন।

Logo-orginal