, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

আওয়ামীলীগ নেতাদের গাড়ী পার্কিং ঢাবিতে”ভিপি ইমির পোস্ট ভাইরাল

প্রকাশ: ২০১৯-১২-২১ ১৯:৩৯:৩৪ || আপডেট: ২০১৯-১২-২১ ১৯:৩৯:৩৪

Spread the love

আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশেপাশের এলাকায় আজ বেশ জনসমাগম হয়েছে। এরমধ্যে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের গাড়ি পার্কিং এবং অতিরিক্ত জনসমাগমের কারণে এখানকার স্থানীয় সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিড়ম্বনা দেখা দেয়।

নেতাকর্মীদের এসব গাড়িগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকা ও এর আশপাসের এলাকায় পার্কিং করা হয়েছে। এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে শামসুন নাহার হলের ভিপি এসকে তাসনিম আফরোজ ইমির ফেসবুক স্ট্যাটাসে। তার হলের সামনেও সম্মেলনের গাড়ি পার্কিং করা হয়েছিল।

ইমি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘না ভাই, এটা গুলিস্তান না। এটা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ‘ছাত্রী’ হলের বাইরের পরিবেশ। এ কথা বলাই বাহুল্য যে প্রচুর হ্যাডমওয়ালা মানুষজন এইসব গাড়ির মালিক। তারা নেতা হতে এসেছেন আজকে! তো, একটা মেয়েদের হলের সামনের পরিবেশ এরকম করে রেখার মতো কমনসেন্স বিশিষ্ট মহান নেতারা দায়িত্ব পেয়ে কি চুলটা ছিঁড়বেন, সে প্রশ্ন করলে আবার তুলে নিয়ে যেতে পারে হলের সামনে থেকে। তাই আর করলাম না।

সকালে প্রোক্টোরিয়াল টিমকে ফোন দেওয়া হয়েছিল। স্বাভাবিক ‘উনাদের’ সম্মেলন দেখে তারা আর সাহস পাননাই আরকি কিছু বলতে। হলের দাদুদেরকে হ্যাডম ওয়ালা ড্রাইভাররা মারতেও এসেছেন কেউ কেউ। আমি তো ‘বিশেষ কারোর’ পছন্দে কিংবা দয়ায় দায়িত্ব পাইনাই। আমারে আমার হলের মেয়েরা নির্বাচিত করছে। কাউরে খুশি করে চলার দায় না থাকলেও মেয়েদের এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে অবশ্যই আমি দায়বদ্ধ।

প্রথমে ৯৯৯ এ কল দিলাম। আমাকে বলা হলো আশেপাশে পুলিশ থাকলে কথা বলতে। তারপর আশেপাশে কাওকে না পেয়ে আবারও কল দেবার পরে আমাকে ডিউটি অফিসারের নাম্বার দেয়া হলো। উনাকে ফোন দেবার পরে উনি আরেকজনের কাছে ধরিয়ে দিতে চাচ্ছিলেন। আমি চিল্লাচিল্লি করাতে আর দিতে পারেন নাই। ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন।

আমি হলের সামনে দাঁড়ানো। যেই গাড়ি গুলার ড্রাইভার ছিল, তাদেরকে গাড়ি সরাইতে বললাম। একেকজনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা। মগের মুল্লুকে তাদের গাড়ি সরানোর স্পর্ধাও কেউ করতে পারে। এরমধ্যে ডিবির দুইজনকে দেখলাম ফুচকার দোকানের সামনে। আমি ভাবলাম হয়ত তাদেরকে এখানে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞেস করলাম তাদের এখানে ডিউটি কিনা। হ্যাঁ বলার পরে বললাম হলের সামনের গাড়ি সরাইতে হেল্প করার জন্য।

তারা বললো এটা তাদের কাজ না। আমি কাদের কাজ জিজ্ঞেস করলাম। তখন আমার যা বলার তাদের স্যারকে বলতে বলা হলো। আমি ‘স্যারের’ কাছে গেলে তিনি চোখ কুঁচকায়ে ডিউটি অফিসারকে ফোন দিতে বললেন। আমি ডিউটি অফিসারের নাম্বার চাইলে তিনি আমাকে এপস থেকে নাম্বার নিতে বলে মোবাইলের গেম খেলায় মনোযোগ দিলেন।

আমি আবার নাম্বার চাইলে পাশের একজনকে নাম্বার আছে কিনা দিতে বলে আবার মোবাইলে মনোযোগ দিলেন। সে বহুত মেহেরবানি করে আমাকে টেলিফোন নাম্বার দিল। যোগাযোগ করার পরে বললো ব্যবস্থা নেওয়া হবে একটু সময় দিতে।

শামসুন নাহার হল গেট
শামসুন নাহার হল গেট
তার পাঁচ মিনিটের মাথায় ডিউটি অফিসার এলেন। ডিবির প্রিয় ভাইয়েরা চা-বিড়ি খেতে খেতে তামাশা দেখতে লাগলেন। যা দায়িত্ব তার বাহিরে কোনো সমস্যা সমাধান করা পাপ হলেও বিড়ি টানা জায়েজ। তো আমি আর অফিসার ভাই মিলে সরাতে বলতে লাগলাম গাড়িগুলো। মানুষটার ধৈর্য দেখে অবাক হয়ে গেলাম। এরকম ফালতু সিচুয়েশনেও তিনি মাথা ঠাণ্ডা রেখে অনেক ভদ্রভাবে সবাইকে বোঝাতে লাগলেন। তার সাথে তর্ক শুরু করে দিলে আমাকে গিয়ে চিল্লানো লাগলো। কম করে হলেও ৩০টা গাড়ির ড্রাইভারের সাথে ডিল করতে এবং তাদের পাইজলামি দেখতে আর যাই হোক সুখ লাগছিল না আমার। মাথা চরম গরম হয়ে গেল।

এরমধ্যে নিউজ২৪’র তিনজন আপু বারবার বাঁকা চোখে তাকাতে লাগলেন আমার দিকে। আমি চিল্লাচ্ছিলাম দেখে একজন বলেই বসলেন আমি এরকম চিল্লাচ্ছি কেন। তখন জিজ্ঞেস করলাম তারা ক্যাম্পাসের কিনা। সাথে সাথে আরেকজন তেড়ে এলেন। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমাকে সাইকো বলার পরেও হজম করতে হলো। উনাদের নেতা হলে মারামারি করা যায়, আমিতো মারামারি করলেই ছাত্রত্ব নাই হয়ে যাবে। আরেকজন মহান নেতা বহুত কষ্টে হলের সামনে ফাঁকা করার পরে গাড়ি পার্ক করতে এলেন। তাকে বলা হলো এখানে গাড়ি রাখা যাবেনা। আমি হলের ভিপি বলার পরে আমার নাম, চোদ্দগুষ্টি আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো।

আমি বললাম বলব না, হলের সামনে থেকে যেন গাড়ি সরায়। তিনি ক্ষ্যাপে গেলেন। সাবেক ছাত্রনেতা, ইগোতে খুব লাগলো তার। আমার সাথে চিল্লাতে লাগলেন। তিনি আমার কি করতে পারেন, বলতে লাগলেন। আমি বললাম মেরে ফেলবেন? কয়েকদিন আগে বুয়েটের একজনকে পিটায়ে মারসে না? মারার বাইরে আর কি করবেন? আসেন মারেন! তখন সে আমাকে বেয়াদব বললো।

সিনিয়রদের আমি রেসপেক্ট দিতে জানিনা। আমি বললাম রেসপেক্ট দিয়েছি দেখেই গাড়ি ভাঙিনাই। সে আরও ক্ষেপে গেল। আমাকে দেখে নেওয়ার কথা বলতে বলতে গাড়ি পেছাতে লাগলো। এরপর যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তিনি অফিসারের সাথে কথা বলতে এলেন। আমি বললাম, ভাই মামলা দিতে আসছে মনে হয়। মামলা নেন। বলে হলের ভেতরে চলে এলাম।

#নিউজটি দ্যা ক্যাম্পাস থেকে সংগৃহীত ।

Logo-orginal