, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

admin admin

বেয়াদব রব্বানী ফৌজদারি অপরাধেে আটক হয় না কেন! পীর হাবিবুর রহমান

প্রকাশ: ২০১৯-১২-২৫ ০০:৪২:২৬ || আপডেট: ২০১৯-১২-২৫ ০০:৪২:২৬

Spread the love

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্কঃ বর্তমানে বাংলাদেশের টক অফ দা টাউন ডাকসু। বেশ কয়েকদিন ধরেই এই ডাকসু নিয়ে চলছে নানা ধরনের সহিংসতা আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি কে নিয়ে কেন্দ্র করে নানা ধরনের জল ঘোলা করা হচ্ছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছে ডাকসু ভিপি।

সম্প্রতি এ নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করে বেশ সমালোচনার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি গোলাম রব্বানী। ডাকসু ভিপির ঘটনায় তিনি বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করে জনরোষে পরিণত হয়েছেন।এবার তাকে নিয়ে কথা বললেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক হাবিবুর রহমান। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার লেখনি তুলে ধরা হলো:-

যে ডাকসু নির্বাচনের জন্য নিরন্তর লিখেছি, টকশোতে কথা বলেছি, মানে দেশের রাজননৈতিক নেতৃত্ব তৈরি না হওয়ায় দেশ জুড়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন চেয়েছি তা আর চাই না।

ডাকসু নির্বাচন ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারিত্তের নেতৃত্ব উপহার দেয়া দূরে থাক, যেমন দেশের দেউলিয়া রাজনীতি, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন,তেমন ছাত্ররাজনীতির করুণ রুগ্নদশাই তুলে ধরেছে। এখন ভিক্ষে চাই না কুত্তা সামলাও অবস্থা।

ডাকসু ভিপি নুরকে আমার কখনোই অতীতে যারা এই পদে এসেছেন তাদের ধারাবাহিকতার সাথে তাল লয় রেখে উঠে আসা কেউ মনে হয়নি। আনকোড়া অনভিজ্ঞ এক ছাত্ররাজনীতির প্রতি অনাগ্রহ সময়ের ফসল মনে হয়েছে। ডাকসু সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তো ছাত্রলীগের মতোন এদেশের রাষ্ট্র নির্মাণের ইতিহাসের আবেগে মোড়া গৌরবের ছাত্রলীগের নষ্ট রাজনীতির সর্বশেষ ভয়ংকর কলংকের উন্মোচিত বেয়াদব মুখ, যে চাঁদাবাজির জন্য বহিস্কৃত হয়েছে। সাহসী আর বেয়াদব এতটাই বিপরীতমুখী যে প্রথমটার কষ্ট নির্যাতন ভোগ করতে হলেও বেঁচে থাকে সম্মানে প্রেমে, শেষেরটা ঘৃণিত ধ্বংস হয়।

রাব্বানী যে অভিযোগে বহিষ্কার তাতে, সে ফৌজদারি মামলায় থাকবে জেলে। এখনো উগ্র দম্ভ নিয়ে কিভাবে ডাকসু জিএস থাকে? কিভাবে বলে ’ডাকসু ভিপি নুর বাঁচলো না মরলো ডাজ নট ম্যাটার’! মেরুদণ্ডহীন দলকানাই নয় দলদাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর এমন ব্যক্তিত্বহীন ভিসি এদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে আসেনি। এমন আদর্শহীন জাতীয় রাজনীতির ছায়ায় অসুস্থ ছাত্ররাজনীতির এই জমানায় এমন পরিবেশ দেখে আমি আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন চাইছি না।

কিন্তু যে প্রতিকূল পরিবেশে ক্ষমতা নির্ভর রাজনীতির ছায়ায় সকল শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের মুখে, ভোটের পাহারা নিশ্চিত করে নুর ডাকসু ভিপির বিজয় ছিনিয়ে এনেছে সেটা চমকে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ তাকে নির্বাচিত করেছেন। এ কালের নির্বাচনের এমন যুগে ব্যালট বিপ্লবের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হয়। গণতন্ত্রের প্রতি প্রবল আবেগ অনুভূতি থাকার কারণে ডাকসুর ভিপিসহ নির্বাচিতদের সম্মান দিতে হয়, যে তবু তারা বদ্ধ দুয়ার খুলেছে বলে।

কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী গোলাম রব্বানী যখন চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের মত ইতিহাসের মহান ছাত্র সংগঠনের সাধারন সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি পেয়েছে, সেখানে তার ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থাকার নৈতিক দায়িত্ব আর আছে কিনা সেটা ছাত্র সমাজ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু ভবন ঘিরে যে রক্তপাত ঘটছে, যে সহিংতা তা,কখনোই গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না। সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠন, ছাত্রদল যেখানে দাঁড়াতে পারছে না সেখানে ডাকসু ভিপি নূরের ওপর একের পর এক হামলা ঘটিয়ে যারা বীরত্বের দম্ভ করছে তারা তাকে নেতা হিসেবেই তৈরি করছে না, প্রশাসনের দেউলিয়াত্ব উন্মুক্ত করেছে। তারা কার হয়ে খেলছে জানি না। তবে সরকারের পক্ষে নয়। এরা দেশকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সমাজকে অশান্ত করে কী যেনো ঘাটাতে চায়!

মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় বীর, বীরযোদ্ধা ও শহীদদের সন্তানরা বিনয়ী হয়ে সমাজে চলে, উন্নাসিক দম্ভ, ক্ষমতানির্ভর বাড়াবাড়ি করে না। সমাজ দেশ আবেগ অনুভূতিতে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতায় থাকে। অথচ বীরদের নামে একদল নব্য সুবিধাবাদীরা তাদের মহান বীরযোদ্ধা পিতাদের অহংকারকে ধুলোয় মিশিয়ে,তাদের নামে যে সন্ত্রাস অরাজকতা করছে তা চরম আইনের লংঘন। শাহবাগের গণজাগরন ছিলো দেশবাসীর আবেগ অনুভূতি প্রতিবাদের নাম। সেখানেও মতলববাজরা অতিবিপ্লবী হয়ে কেউ বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে, কেউবা দেশে শেষ। এবার এক নতুন দোকানের নামে ছাত্রদের সাথে, ভিপির উপর হামলায় নেতৃত্ব দেয় ঢাবি শিক্ষক! নুর অপরাধী হলে ডাকসু, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে। আইন শৃংখলাবাহিনী দেখবে! এদের ঔদ্ধত্য ও আইন হাতে তুলে নেবার সাহস কে দিলো?

প্রধানমন্ত্রী আহত নুরসহ রক্তাক্তদের দেখতে দলের নেতাদের পাঠালে ভিসিও পরে যান! তিনি তো আগেই ছুটে যাবেন! প্রধানমন্ত্রী নড়লে সবাই নড়েন। তাছাড়া কারো বোধোদয় হয় না। রোজ ঘটনা ঘটছে, ডাকসু ভিপি হামলার শিকার হচ্ছে,অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ উঠছে,পরিস্থিতি অশান্ত হচ্ছে, তবু কেনো সবাইকে নিয়ে বসে সমস্যার সমাধান করেননি? ভিসি ও তার প্রশাসন কি ক্যাম্পাসে লাশ দেখতে চেয়েছিলেন?

সরকার অভিযুক্তদের আটক করেছে। চিকিৎসার জন্য মেডিকেলবোর্ড গঠন করেছে। ডাকসুর নায়ক জীবন্ত কিংবদন্তী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন,সবাইকে দায়িত্বশীল ও সতর্ক হতে হবে কথায়,চলাফেরায়।ঢাবি থেকে ওঠে আসা সরকারের মুখপাত্র ওবায়দুল কাদেরও হামলার নিন্দা করে বলেছেন,ভিন্নমত হলেও হামলা জঘন্ন নিন্দার,তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে।মুক্তিযুদ্ধের নামেই হোক, আর যে কোন নামে অন্য পক্ষই হোক,ক্যাম্পাস রাজনীতির সমস্যার সমাধান ডাকসু,সব ছাত্র সংগঠন,ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বের সাথে আলোচনা করে সমাধান করাই উত্তম।

জাতীয় রাজনীতিকে আদর্শিক গণতান্ত্রীক ধারায় ফিরিয়ে আনতে না পারলে, ছাত্ররাজনীতি থেকে কিছু আশা করা যায় না। ছাত্রসংসদ নির্বাচনও সমস্যার সমাধান আনবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ও দায়িত্বশীল প্রশাসন পাবে না। আর জাতীয় রাজনীতির দেউলিয়াত্ব থাকলে যে কোনো সময়, যে কোনো ঘটনায় গণবিক্ষোভ ও ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে।রাজনীতিবিদ ও সরকারকে এটা ভাবতেই হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ কিছুদিন আগে নিজ ঘর থেকে শুরু করেছিল একটি শুদ্ধি অভিযান।শুদ্ধি অভিযানে মূলত দলের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের নানা ধরনের নেতিবাচক সমালোচনা মূলক কর্মকান্ড যারা জড়িত রয়েছেন তাদেরকে শাস্তি দেওয়া মূল লক্ষ্য ছিল। আরে শুদ্ধি অভিযানের প্রথম শুরু হয় ছাত্রলীগকে নিয়ে। সে সময় ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত দুইজন সভাপতি ও সম্পাদককে চারিদিকে শুরু হয় নানা সমালোচনা। তাদের নামে দীর্ঘদিন ধরে আসতে থাকে নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা।এছাড়াও গোলাম রব্বানীর ক্ষমতা আমলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।এরপরই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরক্তি প্রকাশ করেন এবং ছাত্রলীগের দায়িত্বে থেকে তাদের দুজনকে অব্যাহতি দিয়ে দেন। #সংগৃহীত।

Logo-orginal