, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

শুরু হলো দেশের সর্ববৃহৎ ফ্যাশন ইভেন্ট ‘ট্রেসেমে বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক-২০’

প্রকাশ: ২০২০-০১-২৪ ১২:৪৯:৩৬ || আপডেট: ২০২০-০১-২৪ ১২:৪৯:৩৬

Spread the love

রাকিবউদ্দিন, বিনোদন ডেস্কঃ তখনো গোধূলি লগ্ন মিলিয়ে যায়নি, পশ্চিমাকাশে সূর্যের শেষ আভা ছড়িয়ে পড়েছে। আলো-আঁধারির এই মিলন-বিরহের ক্ষণটিতেই বেশ লোকসমাগম দেখা গেল ইন্টারন্যাশনাল বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির রাজদর্শন হলের সামনে? ভেতরে অনুষ্ঠান শুরুর আগ দিয়ে এখানে-সেখানে উন্মুক্ত এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন মডেলরা। বৈচিত্র্যময় পোশাকে প্রত্যেকেই উদ্ভাসিত আপন আপন মহিমায়। ট্রেসেমে বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক ২০২০ শুরু হওয়ার আগমুহূর্তের দৃশ্য এটি। গত বছর বাংলাদেশে এই আয়োজনটি প্রথম অনুষ্ঠিত হয়। গত আয়োজনের সাফল্যের রেশ ধরে এবার দ্বিতীয় আসরে ডিজাইনার ও ফ্যাশনসচেতন লোকজনের উপস্থিতিতে মুখর পুরো এলাকা। তিন দিনের এ আয়োজনের প্রথম দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার।

ফ্যাশন শো শুরু হতে তখনো বেশ কিছুটা সময় হাতে আছে। মডেলদের অনেকেই উৎসাহী ফটোগ্রাফারদের সামনে নানা ভঙ্গিতে পোজ দিচ্ছেন, ক্যামেরার শাটারের ক্লিক ক্লিক আর ফ্লাশের ঝলসে ওঠা আলো তাঁদের উৎসাহ ও সৌন্দর্যকে যেন বারবার উচ্ছল করে তুলছিল।

রাজদর্শন হলের প্রধান প্রবেশদ্বারের বিপরীতে এক মডেলকে দেখা গেল অভিনব সাজে। প্লাস্টিকের ফেলে দেওয়া গ্লাস, থালা, কফির কাপ, পেপসির কাপ দিয়ে বানানো বৈচিত্র্যময় পোশাক পরেছেন তিনি। ঠিক একইভাবে আরো কয়েকজন মডেলকে দেখা গেল ঘুরে বেড়াতে। শো শুরুর আগের মানসিক চাপ ভুলে গিয়ে হালকা মুডে মডেলদের এই ঘোরাঘুরি কেন? প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ফ্যাশন কাউন্সিলের সহসভাপতি এমদাদ হক বললেন, ‘ফ্যাশন উইকে অংশ নিচ্ছেন প্রথিতযশা ও ইতিমধ্যে যাঁরা আস্থা অর্জন করেছেন সেসব ডিজাইনারই। আর নতুন যাঁরা ভালো করছেন তাঁরা হলঘরের বাইরেই প্রদর্শন করছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই পরের আসরে মূল আয়োজনে অংশ নেবেন।’ অর্থাৎ এটা অনুষ্ঠানের আগের অনুষ্ঠান! বেশ চমকপ্রদ ব্যাপারই বটে।

বাইরে সন্ধ্যার আলো মিলিয়ে যাওয়ার পরপরই আগত অতিথিরা হলে প্রবেশ করতে শুরু করেন। অতিথিরাও যেমন তেমন নন—রুহি, স্পর্শিয়ার মতো চিত্রতারকারা এসেছেন যেমন, তেমনি নামি মডেল ও ডিজাইনারদের অনেকেই ছিলেন। এ ছাড়া বেশ কিছু বিদেশি ফ্যাশন অনুরাগীও অনুষ্ঠানে ছিলেন।

তিন দিনের এই আয়োজনে প্রতিদিন ১০ জন করে ডিজাইনার অংশ নেবেন। এর মধ্যে সাতজন বাংলাদেশি ও তিনজন বিদেশি। গতকাল ফ্যাশন উইকের প্রথম দিন বাংলাদেশের নওশীন খায়ের, রিমা নাজ, তেনজিং চাকমা, রিফাত রহমান, তাসফিয়া আহমেদ, সাদিয়া হোসেন মিশু, আফসানা ফেরদৌসি, ভারতের অনুজ শর্মা, রিধি জেইন, নেপালের অজয় গুরুং অংশ নেন।

র‍্যাম্প ঘিরে দুই ভাগে দর্শক ও অতিথিরা আসন গ্রহণ করে র‍্যাম্প মডেলদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তখনই জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে ওঠে আফসানা মিমির মুখ, মুখে নারী জাগরণের কবিতা। ঝলমলে আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো হলঘর। একে একে র‍্যাম্পে আসেন অভিনেত্রী ও মডেল মাসুমা রহমান নাবিলা, সাদিয়া নাবিলা, রাখি, কণ্ঠশিল্পী জেফার ও অন্যরা। র‍্যাম্পে দেশীয় ফ্যাব্রিকসের পোশাকে আফসানা মিমির আবৃত্তির সঙ্গে ছন্দোবদ্ধ তালে হেঁটে দর্শকদের মুগ্ধ করেন তাঁরা।

এরপর বাংলাদেশ ফ্যাশন কাউন্সিলের সভাপতি মঞ্চে আসেন। এটি ছিল মূল আয়োজনে যাওয়ার আগে বত্তৃদ্ধতা পর্ব। মাহিন বললেন, ‘দেশীয় ফ্যাশন এখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হচ্ছে। আমাদের দেশের ডিজাইনাররা বাংলাদেশ নামটিকে পোশাকের মাধ্যমে বিশ্বের আনাচকানাচে পৌঁছে দিচ্ছেন। এ ছাড়াও ক্রমশ দেশীয় নকশা ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টির অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।’

মাহিন খানের বক্তব্য শেষ হতেই বর্ণিল আলো ছড়িয়ে পড়ে র‍্যাম্পের ওপর। এবার বাংলাদেশের সাত, ভারতের দুই ও নেপালের একজন ডিজাইনারের পোশাক পরে র‍্যাম্পে হাঁটেন মডেলরা; যেখানে দেশীয় জামদানি, নকশি কাঁথা যেমন স্থান পায়, তেমনি সুন্দরবন, দেশীয় কৃষ্টি, জীববৈচিত্র্য, প্রকৃতি, প্রাণী স্থান পায় পোশাকে। ভারতের ডিজাইনারদের পোশাকে নিজ দেশের সংস্কৃতি ছাড়াও উঠে আসে সমসাময়িক ফ্যাশন অনুষঙ্গ।

Logo-orginal