, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

চাকুরীর পরীক্ষা বাদ দিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধাকে নিয়ে ছুটল এক যুবক

প্রকাশ: ২০২০-০১-২১ ২০:৪০:৩১ || আপডেট: ২০২০-০১-২১ ২০:৪০:৩১

Spread the love

জানতেন দুর্ঘটনায় আহত বৃদ্ধকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে আর চাকরির পরীক্ষা দেওয়া হবে না। দুর্ঘটনায় জখম বৃদ্ধের শুশ্রূষায় ছুটে যেতে এক মুহূর্তও ভাবেননি।

ভাবেননি, পরীক্ষা কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছলে কী হবে। এরপরও ভিন্ন কিছু ভাবেননি শেখ ওয়ালিদ আলী। ছুটে গেলেন হাসপাতালেই। শেষ পর্যন্ত দেরিই হয়ে গেল। এ জন্য শেখ ওয়ালিদ আলীকে বসতে দেওয়া হলো না কলেজশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায়।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেচেদায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার। ঘটনার একটি ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

জানা গেছে, কাঁথির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা ওয়ালিদ প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর। অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস্‌ ইসলামিক অর্গানাইজেশনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি এই যুবক সাত বছর ধরে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার আল আমিন মিশন কলেজে অতিথি শিক্ষক।

অধ্যাপক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ সার্ভিস কমিশনের ‘সেট’ দিতে। পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে।

ওয়ালিদ বলেন, সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মেচেদায় ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের আন্ডারপাসে নামেন। তখনই পথচারী এক বৃদ্ধ বাইকের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যান।

তিনি বলেন, ‘কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। ১০০-তে ফোন করেও পুলিশের সাড়া না মেলায় নিজেই বৃদ্ধকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাই।’

পরে ওই বৃদ্ধের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর জোগাড় করে তার পরিজনকে খবর দেন ওয়ালিদ। ততক্ষণে ৯টা বেজে গেছে। পরীক্ষা শুরু সাড়ে ৯টায়। পাঁশকুড়ার ট্রেন ধরতে ছোটেন মেচেদা স্টেশনে। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছান ১০টারও পরে।

ওয়ালিদ জানান, দেরি হওয়ায় তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মোবাইল ক্যামেরায় তোলা বৃদ্ধের ছবি দেখিয়ে ওয়ালিদ বোঝানোর চেষ্টা করেন, কেন তার দেরি হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ পর্যন্ত বিষয়টি পৌঁছালেও পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাননি।

তিনি বলেন, ‘নার্সিংহোমে ঢোকার সময় একজন ছবিটি তোলেন। নার্সিংহোম থেকে বেরোনোর সময় বুঝতে পারি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে। এ জন্য ওই ভদ্রলোকের কাছ থেকে ছবিটি নিই।’

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাঁচ মিনিট দেরিতে এলেই পরীক্ষার্থীকে ঢুকতে দেওয়া যায় না। ওয়ালিদের বিষয়টি তাঁরা বুঝেছিলেন। কিন্তু তাদের কিছু করার ছিল না।

পরীক্ষা দিতে না পারায় ওয়ালিদের তেমন আক্ষেপ নেই। আহত বৃদ্ধ শেখ নুরজামানকে দেখতে সোমবার তিনি কাঁথির মুকুন্দপুরেও গিয়েছিলেন। রবিবার নাতির জন্য ওষুধ কিনতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন নুরজামান। এখন তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

ওয়ালিদ বলেন, ‘চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ তো আবার আসবে। কিন্তু মানুষ হিসেবে জীবনের একটা বড় পরীক্ষায় তো উতরে গেলাম! সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ।

.

Logo-orginal