, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

চীনে সাপ থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস” পরিস্থিতি ভয়াবহ

প্রকাশ: ২০২০-০১-২৩ ২৩:৪০:২৯ || আপডেট: ২০২০-০১-২৩ ২৩:৪০:২৯

Spread the love

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনের শহর উহানসহ পাশের আরও একটি নগরীকে কার্যত এখন বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ এই দুটি নগরী থেকে বহির্গামী সব বাস-ট্রেন এবং বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিবেদন বিবিসি বাংলার ।

উহান শহরের মেয়র এই বলে কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছেন যে তারা এই ভাইরাস যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা মোটেই উপলব্ধি করতে পারেন নি।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন মারা গেছে এবং ৬০০-এরও বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছে।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এখনও পর্যন্ত কোন চিকিৎসা নেই, তাই এটি প্রতিরোধের ওপরেই সর্বাত্মক জোর দেওয়া হচ্ছে।

সাপ থেকে উৎপত্তি?
ধারণা করা হয় উহান নগরীতেই করোনাভাইরাসের উৎপত্তি। সেটি এখন এক অবরুদ্ধ আতঙ্কের নগরী। একজন বাসিন্দা বলেছেন, “পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে এই পৃথিবী বুঝি এখানেই শেষ হয়ে গেল।”

উহান শহরকে এমন এক সময়ে অবরুদ্ধ করা হলো যখন চীনের নববর্ষ উপলক্ষে কোটি কোটি মানুষ দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ভ্রমণ করছে।

বলা হচ্ছে, এই শহরের একটি সি ফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হয়।
অনেক গবেষক বলছেন, সম্ভবত এই ভাইরাসটি সাপ থেকে এসেছে।

বুধবার জর্নাল অব মেডিকেল ভাইরোলজিতে একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে যাতে বলা হয়েছে, সাপের জিনগত বিশ্লেষণে দেখা যায় সাপের মধ্যেই করোনাভাইরাসটি থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

আতঙ্কে লোকজন বাজার থেকে খাদ্য কিনে বাড়িতে মজুদ করতে শুরু করেছে।
অন্যান্য গবেষকরা অবশ্য এই দাবির ব্যাপারে সন্দিহান। তারা বলছেন, এই ধারণা এখনও প্রমাণিত নয়। এজন্যে আরো গবেষণার প্রয়োজন।

মানুষ থেকে মানুষে
ভাইরাসটির প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর ধারণা করা হয়েছিল এটি শুধু প্রাণীর কাছ থেকে ছড়াতে পারে। কিন্তু পরে এই ভাইরাস একজন মানুষের কাছে আরেকজন মানুষের শরীরেও সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তবে এটি কিভাবে মানবদেহ থেকে আরেক মানবদেহে ছড়ায় সেটি এখনও রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে এটি তার পরিবারের সদস্য এবং স্বাস্থ্য-কর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উহানে এক কোটি দশ লাখ মানুষের বাস। এই শহরটি থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশের বড় বড় শহরে বিমান চলাচল করে।

ফলে এখান থেকে ভাইরাসটি বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আশঙ্কা করা হচ্ছে আর একারণেই এই শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল দশটা থেকেই বিশাল এই নগরীর গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়। ব্যস্ত বাস ও ট্রেন স্টেশন এবং বিমানবন্দরগুলো ছিল ফাঁকা, জনশূন্য।

শহরের লোকজনকে আগেই বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরে চলাফেরা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

শহরে গ্লাভস ও মাস্কের চাহিদা হুট করেই মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।

বেইজিং-এও লোকজন মুখোশ পরে বাইরে বের হচ্ছেন সতর্কতা হিসেবে।
আতংকিত লোকজন খাবার কিনে ঘরে মওজুদ করতে ছুটে গেছে দোকানে। পেট্রোল স্টেশনগুলোতেও পড়ে যায় গাড়ির দীর্ঘ লাইন।

উহানের পার্শ্ববর্তী নগরী হুয়াংগাংয়েও একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কফি শপ, সিনেমা হল, থিয়েটার এবং সব ধরনের প্রদর্শনী বন্ধ রাখা হয়েছে দুটো শহরেই।

এঝো, শিয়ানতাও ও চিবি নামের আরো তিনটি শহরেও যথাক্রমে ট্রেন স্টেশন, সমাবেশ ও গণ-পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এসব সত্ত্বেও এই ভাইরাসটি এখন ছড়িয়ে পড়ছে বিপদজনক গতিতে, হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়।

উহান শহরের একজন ডাক্তার বিবিসিকে বলেছেন, ভাইরাসটির কারণে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের আতঙ্ক।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ মিলেছে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার থেকে জরুরী বৈঠকে বসেছে কিভাবে এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো যায় তা নিয়ে কথা বলতে। আজও এই আলোচনা চলছে।

এই ভাইরাসটি মানুষের ফুসফুসে আক্রমণ করে। এর ফলে শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়।

Logo-orginal