jamil Ahamed
প্রকাশ: ২০২০-০২-২১ ১০:৩৭:০৫ || আপডেট: ২০২০-০২-২১ ১০:৩৭:০৫
পঙ্গপালের আক্রমণের শিকার হয়েছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের প্রায় সব কয়টি অঞ্চলেই হানা দিয়েছে পঙ্গপালরা। পঙ্গপালের আক্রমণে ইতোমধ্যে দেশটির জাজান, আসির, আল-বাহা, আল-লেখ, কুনফোদাহ ও মক্কার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সৌদি সংবাদ মাধ্যম আরব নিউজ এ খবর দিয়েছে।
সৌদি আরবের পরিবেশ, কৃষি এবং পানি মন্ত্রণালয়ের পঙ্গপাল ও প্লেগের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আল শামমারি বলেন, পূর্ব আফ্রিকা থেকে এই পঙ্গপাল এসেছে। আমরা জানুয়ারির শুরু থেকে প্রতিদিন পঙ্গপালের সাথে লড়াই করেছি। ঝাঁকের প্রথম প্রজন্মকে নির্মূল করেছি, যা মক্কা অঞ্চলে জাজানকে আক্রমণ করেছিল। আমরা কুনফোদাহ ও আল-লেইথে দুঝাঁক পঙ্গপাল লক্ষ্য করেছিলাম।
এর আগে, পঙ্গপালের হানায় আফ্রিকার সোমালিয়া, ইথিওপিয়া এবং কেনিয়াসহ কয়েকটি দেশের ফসলী জমি উজাড় হয়ে যায়। পাকিস্তান থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল ছড়িয়ে পড়েছিল ইয়েমেনে। আর সেখান থেকে লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে এসব কীট আফ্রিকার ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়ায় ঘাঁটি গাঁড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্ব আফ্রিকা থেকে আসা এসব পঙ্গপাল ইতিমধ্যে সৌদির বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সৌদির মরুতে পঙ্গপালের দ্রুত বিস্তার ঘটবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা।
তারা বলছেন, সৌদির আবহাওয়া পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। এছাড়া এসব পতঙ্গের ডিম দেয়ার সময় হয়ে এসেছে। দ্রুত এদের বিস্তার রোধ করা না গেলে সমস্যা আরো বাড়বে।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ জর্ডান পঙ্গপালের কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সৌদি আরব থেকে আসা পঙ্গপালই সেখানে তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়। যে কোনো সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ইসরায়েলেও পঙ্গপাল প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হঠাৎ করে পঙ্গপালের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে অস্বাভাবিক ভাবে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন অনেকেই।
এবার প্রথমবারে মতো পঙ্গপালের তাণ্ডব শুরু হয় পাকিস্তানে। গত ২০ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় পঙ্গপালের আক্রমণে পড়েছে পাকিস্তান। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে পাক সরকার। পঙ্গপালের ঝাঁক দেশটির তুলা, গম, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। দেশটির সীমান্তবর্তী ভারত-চীনেও ক্ষতিকর এই পোকা প্রবেশের জোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে, একা থাকলে এই পতঙ্গ বেশ নিরীহ প্রাণী, কিন্তু দলবদ্ধ অবস্থায় এরা হয়ে ওঠে বিধ্বংসী।
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন- ফাও বলছে, এক বর্গকিলোমিটার আকারের পঙ্গপাল একসঙ্গে যে খাবার খায় তা দিয়ে ৩৫ হাজার মানুষকে এক বছর খাওয়ানো সম্ভব। একটি বড় পঙ্গপালের ঝাঁক দিনে ১২০ মাইল পর্যন্ত জমির ফসল খেয়ে ফেলতে পারে। কেবল খাবারই খায় না তারা, একই সঙ্গে প্রজননের কাজটিও করে।
সূত্রঃ কালের কন্ঠ ।