jamil Ahamed
প্রকাশ: ২০২০-০২-২৭ ১৯:২৩:৫২ || আপডেট: ২০২০-০২-২৭ ১৯:২৩:৫২
সম্প্রতি ভারতের দিল্লীতে মুসলমানদের হত্যা-নির্যাতন এবং মসজিদ ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমির আল্লামা আহমদ শফী দা.বা.।
আজ বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। মোদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গুজরাট, কাশ্মীর দিল্লীসহ অনেক রাজ্য মুসলমানদের খুন করা হয়েছে। চরম নির্যাতন নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাই যার হাতে এখনো মুসলিম গণহত্যার দাগ লেগে আছে। তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না। অবিলম্বে মোদির রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক!
আল্লামা আহমদ শফী আরো বলেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের ওপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে তা পরিস্কার রাষ্ট্রীয় নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
শুধু ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতায় ৩০জনের অধিক মুসলমান নিহত হয়েছে। মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। খুঁজে খুঁজে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও হামলা করা হয়েছে। এরপরও মুসলমান প্রচণ্ড ধৈর্যধারণ করছে। তবে একথা ভুলে গেলে চলবে না, মুসলমান ধৈর্যশীল তবে ভীরু নয়। মুসলমানগণ প্রতিরোধ গড়ে তুললে মোদির মসনদ তছনছ হয়ে যাবে।
আমিরে হেফাজত আরো বলেন, ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য-অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে অাছে। ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরোবিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।
আল্লাম আহমদ শফী আরো বলেন, কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দেশ দাবী করলেও তা শুধু কথায়, কাজে নয়। শুধু মুসলিম হবার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে প্রতিদিন। কাশ্মীরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের একথা জেনে রাখা উচিৎ, জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
আমিরে হেফাজত বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকারের কথা বলে। শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে।অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর আমরা দেখিয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। শুধু মুসলমান হবার অপরাধে ঘরবাড়ি, দোকান-পাটে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, টাকা পয়সা লুট করা হচ্ছে।ভারতের উচিৎ হবে নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।
আমিরে হেফাজত আরো বলেন, অামি বাংলাদেশ সরকার ও মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুরোধ করছি, ভারতীয় মুসলমানদের জান মাল ও পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে আসুন। নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধে কার্যকরি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করুন। সব দেশে সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিতকরণ, জানমালের নিরাপত্তায় একতাবদ্ধ হওয়া আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব। কারণ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এক ও অভিন্ন বন্ধনে অাবদ্ধ। সাথে সাথে আগামীকাল শুক্রবার জুমুয়ার নামাজের পর সকল মসজিদে ভারতের মুসলমানসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য বিশেষ দোয়া করার জন্য জনগণের প্রতি অনুরোধ করছি! প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।