admin
প্রকাশ: ২০২০-০২-১৮ ১৬:৪৭:৫২ || আপডেট: ২০২০-০২-১৮ ১৬:৪৭:৫২
ইসমাঈল হোসেন নয়ন, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ
জম্মের ৫বছর বয়সে প্রতিবন্ধী হওয়া আব্বাস আলীর সংগ্রামী জীবন শুরু হয় ছোট বেলা থেকেই। যখন তার বয়স ১১ তার বাবা কাঠ সংগ্রহ করতে যায় পাহাড়ে আর সেখানেই সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হন তিনি।
পরবর্তীতে হন্য হন্য হয়ে খুঁজে লাশ ও পাওয়া যায়নি তার। সে থেকেই জীবনের তাগিদে পরিবারের হাল ধরার ভার পড়ে প্রতিবন্ধী আব্বাস আলীর উপর৷ পা দুটি বিকলাঙ্গ হওয়ার কারণে কাজ তো দূরের কথা স্বাভাবিক চলাফেরা ও করতে পারেনা সে৷ তবে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে কখনও ভিক্ষা বৃত্তি করেনি।
বরং মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইট ভাঙ্গার কাজ করেছেন দীর্ঘ ১০বছর। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় নিয়মিত মজুরী ও পেতো না সে। একটা সময় গিয়ে ইট ভাঙার আধুনিক যন্ত্র বের হলে তাকে আর কাজে ডাকতোনা কেউ। এর মধ্যে মা, বউ আর ২ বাচ্চা নিয়ে পড়ে চরম বিপদে। এরপর শুরু হয় তার জীবনের কঠিন সংগ্রাম। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতো একটা কাজের আশায় কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় কেউ কাজ দিত না।
এক পর্যায়ে কয়েকটি ছাগল কিনে পালন শুরু করে। কিন্তু তা দিয়ে সংসার চলে না। জীবন হয়ে উঠে কঠিন থেকে কঠিনতম। এরপর সামান্য টাকা কিস্তি নিয়ে স্থানীয় ধামাইরহাট বাজারে ছোট্ট পান সিগারেটের দোকান দেয়। এক বছরের ব্যবধানে তার পরিশ্রমে দোকানের পরিসর বৃদ্ধি হতে থাকে।
কিন্তু ১৩জানুয়ারী কিছু দুষ্কৃতিকারী তার দোকান ভেঙে দেয়। স্বপ্ন যেনো ভেঙে যায় আব্বাস আলীর। এরপর ঘটনাটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমানের নজরে আসে।
তিনি ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্থানীয় প্রতিনিধিদের একই স্থানে আবারো আব্বাস আলীকে দোকান তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এর কয়েকদিনে পরে আব্বাস আলী নতুন দোকান পায় এবং ইউএনও মহোদয়কে ধন্যবাদ জানান। সে সাথে নতুন দোকান পেতে যারা সাহায্য করেছে তাদের প্রতি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, আব্বাস আলী একজন প্রতিবন্ধী। সে ভিক্ষা বৃত্তি করে না সুতরাং তাকে সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব। তাই তাকে নতুন দোকানের ব্যবস্থা করেছি আশা করি সে আবারো ঘুরে দাড়াবে।