, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

মসজিদে কিবলাতাইন” আল্লাহ’র নির্দেশে যেভাবে কেবলা পরিবর্তন করেন নবী (সঃ)

প্রকাশ: ২০২০-০২-২৩ ১৪:০৮:৩২ || আপডেট: ২০২০-০২-২৩ ১৪:০৮:৩২

Spread the love

মদীন থেকে লন্ডন প্রবাসী আবদুল মুকিতঃ
কিবলা’ আরবি শব্দ। নামাজ আদায়ের দিকনির্দেশকে কিবলা বলা হয়। আর দু’টি কিবলা বুঝানো হয় ‘কিবলাতাইন’ শব্দ দ্বারা। ‘মসজিদ আল কিবলাতাইনে’ রাসূলুল্লাহ সাঃ-এর নামাজ আদায়ের মাঝামাঝি সময়ে কিবলা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে।

‘কিবলা’ আরবি শব্দ। নামাজ আদায়ের দিকনির্দেশকে কিবলা বলা হয়। আর দু’টি কিবলা বুঝানো হয় ‘কিবলাতাইন’ শব্দ দ্বারা। ‘মসজিদ আল কিবলাতাইনে’ রাসূলুল্লাহ সাঃ-এর নামাজ আদায়ের মাঝামাঝি সময়ে কিবলা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। এজন্য মসজিদটির নাম ‘মসজিদ আল কিবলাতাইন’। অর্থাৎ দুই কিবলার মসজিদ।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ সেপ্টেম্বর। হিজরতের দ্বিতীয় বছরের রজব মাসের মাঝামাঝি সময়ে কিবলা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে।

গবেষকদের মতে, কিবলা পরিবর্তনের দিন হজরত মুহাম্মদ সাঃ এই মসজিদে জোহর কারো কারো মতে আসরের নামাজ আদায় করছিলেন। জেরুজালেম নগরীর বায়তুল মুকাদ্দাস মসজিদমুখি হয়ে নামাজ আদায় করছিলেন তিনি। দুই রাকাত নামাজ শেষ করেছেন। ঠিক এমন সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে হজরত জিবরাইল আঃ-এর মাধ্যমে নির্দেশ আসে কিবলা পরিবর্তনের। রাসূল সাঃ-কে মক্কা নগরীর পবিত্র কাবামুখি হয়ে নামাজ আদায়ের নির্দেশ জানিয়ে দেন হজরত জিবরাইল আঃ। এই নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে রাসূল সাঃ নামাজের মধ্যেই কিবলা পরিবর্তন করেন। সাথে সাথে পরিবর্তন করেন তার পেছনে নামাজ আদায় করতে থাকা সাহাবিরা। এ ঘটনার পর থেকেই মসজিদটি পরিচিতি লাভ করে ‘মসজিদ আল কিবলাতাইন’ বা দুই কিবলার মসজিদ হিসেবে।

কিবলা পরিবর্তনের নির্দেশ ঘটনাটি উল্লেখ আছে সূরা বাকারার ১৪৪ নম্বর আয়াতে। সেখানে ইরশাদ হচ্ছে, ‘নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল হারামের (কাবা শরীফের) দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই জানে যে, (এ ধর্মগ্রন্থ) তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে প্রেরিত সত্য। তারা যা করে তা আল্লাহর অজানা নেই।’

মসজিদ আল কিবলাতাইন পৃথিবীর প্রাচীনতম মসজিদগুলোর অন্যতম। দীর্ঘদিন এই মসজিদে দু’টি মিহরাব বা ইমামের দাঁড়ানোর স্থান ছিল। যার একটি বায়তুল মুকাদ্দাসমুখি, অন্যটি ছিল কাবাঘরমুখি। পরে মসজিদটি ব্যাপক সংস্কার করা হয়। এ সময় কাবামুখি মিহরাবটি রাখা হয়। অন্যটি ভেঙে ফেলা হয়।

মসজিদ আল কিবলাতাইন বছরজুড়ে দেশ-বিদেশের মুসলমানদের আগমনে মুখরিত থাকে। হজের সময় এই ভিড় আরো বাড়ে।

ইহুদিরা সাধারণত কিবলা হিসেবে জেরুজালেমের দিকে মুখ করে প্রার্থনা করে। মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কাবার দিকে কিবলা পরিবর্তন করে মুসলমানদের স্বাতন্ত্র্যতা দান করেন। এ ছাড়া নামাজরত অবস্থায় কিবলা পরিবর্তন করে হজরত মুহাম্মদ সাঃ ও সাহাবাগণ আনুগত্যের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।

লেখকঃ জনাব আবদুল মুকিত।
ছবি, লেখক।
মদিনায় আগমনকারী দেশ-বিদেশের মুসলমানরা মসজিদটি পরিদর্শন ও এখানে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মনে আলাদা একটি প্রশান্তি অনুভব করেন। ইসলামের ইতিহাসে মসজিদ আল কিবলাতাইনের আবেদন চির ভাস্বর ও অমলিন।

Logo-orginal