, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

চট্টগ্রাম নগরীতে জন সমাগম সবখানে”

প্রকাশ: ২০২০-০৩-২৬ ০৮:৫৭:১০ || আপডেট: ২০২০-০৩-২৬ ০৮:৫৭:১০

Spread the love

চট্টগ্রামঃ নগরীতে ৫-৭ জনের বেশি জড়ো হওয়া ঠেকাতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে মাঠে কাজ করবেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। পুলিশও লোক সমাগমে কড়াকড়ি আরোপের কথা জানায়। কিন্তু বাজার, যানবাহনের স্টেশন, আড্ডার স্থল ও জুয়ার আসর কোথায় নেই লোক সমাগম?

কেউ মানছে না নির্দেশনা, জন সমাগম সবখানে, বাজার কিংবা নিত্যপণ্যের দোকানে মানুষ আর মানুষ। জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে কোন কোন ক্ষেত্রে রীতিমত গায়ের উপর পড়ছেন মানুষ। গতকাল এ দৃশ্য দেখা গেছে নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট ও সিরাজ উদ্দৌলা রোডস্থ বাজারসনহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের বাজারে। এখানে বড়বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পণ্য কিনতে রীতিমত ‘গায়ের ওপর উঠে’ যাওয়ার অবস্থা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটা আশংকার বিষয় বলে জানিয়েছেন সচেতন নগরবাসী। অথচ এ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিত্যপণ্য পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থাপনায় বিক্রি করার কথা।

মঙ্গলবার মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন জানিয়েছিলেন, ‘কোনো জায়গায় অধিক লোক যাতে জড়ো হতে না পারে, ৫-৭ জনের বেশি লোক যাতে জড়ো না হয় এবং জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজন যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলাফেরা করে- সেটা নিশ্চিত করবে সেনাবাহিনী। প্রতিবেশি দেশ ভারতের পশ্চিম বাংলায় যেখানে মেরে মেরে লোকজনকে ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে সেখানে আমাদের অবস্থান কোথায়? প্রশ্নটি করেছেন সচেতন লোকজন।

এদিকে একসাথে সরকারি বন্ধ পেয়ে ঈদে ঘরে ফেরার মতো মানুষ ফিরছেন গ্রামে। এ উপলক্ষে একসাথে জড়ো হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। গাদাগাদি করে যানবাহনে চড়ছে। এতে কোন আক্রান্ত ব্যক্তি থাকলে তার সংস্পর্শে আসবে লোকজন। যার পরিণতি শুধু ক্ষতি আর ক্ষতি। বলছেন কনজুমার এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন। অথচ সরকারি নির্দেশনা রয়েছে অন্য ধরনের। চিরচেনা চেরাগী পাহাড় এলাকার আড্ডা আগের মতো জনসমক্ষে না চললেও আড্ডাবাজরা আড্ডার স্থল পরিবর্তন করেছেন। তারা এখন ঢুকে পড়েছেন পার্শ্ববর্তী গলিগুলোতে। যাতে নিরাপত্তা বাহিনীর নজর এড়ানো যায়। গতকাল চেরাগী পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায় এ ধরনের চিত্র। এতে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আড্ডার জায়গা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আড্ডা বন্ধ করেনি আড্ডাবাজরা। নগরীর বিভিন্নস্থান থেকে আসা আড্ডাবাজরা প্রতিমুহূর্তে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁিক বাড়াচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।

৫-৭ জন একসাথে জড়ো হওয়ার নির্দেশনা উপেক্ষা করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রীতিমত বাসাভাড়া নিয়ে চলছে জুয়ার আসর। করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের এ অবস্থায় জুয়ার আসরের নামে লোক সমাগম মারাত্মক ঝুঁিক বাড়াচ্ছে জুয়াডিরা। যে যে এলাকায় অবাধে জুয়ার আসর চলছে সেখানে জুয়া খেলার জন্য বাইরের লোকজনও জড়ো হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আসা লোকজনও এসব জুয়ার আসরে যুক্ত হচ্ছে। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি বাড়ছে। যা সকলের জন্য ভয়ানক হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

নগরীর বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে থানা পুলিশের জ্ঞাতসারেই জুয়ার আসরগুলো চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এক্ষেত্রে স্থানীয়রা থানা পুলিশের পরিবর্তে নগর গোয়েন্দা পুলিশ কিংবা র‌্যাবের শরণাপন্ন হচ্ছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। নাম প্রকাশ না করে লিখিত দরখাস্তও দিচ্ছেন এসব সংস্থার কাছে।

সর্বশেষ গতকাল বুধবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসরগুলো জমজমাট থাকে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। নগরীর হালিশহর, চকবাজার, বন্দরটিলা ও আমবাগান এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অবাধে চলছে জুয়ার আসর। এক একটি জুয়ার বোর্ডে ৩০/৩৫ জড়ো হচ্ছে। অথচ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জনসমাগম বারণ করা হয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে।

এ বিষয়ে সিএমপির সহকারী কমিশনার কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রম রোধ করতে যেকোন ধরনের জন সমাগম বারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জুয়ার আসরসহ উল্লেখিত ক্ষেত্রগুলো অত্যধিক ঝুঁিকর্পূণ। কারণ এখানে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাইরের লোকজন যোগ দেয়। অনেকক্ষেত্রে বিদেশ ফেরত প্রবাসিরাও যোগ দিচ্ছেন এসব ক্ষেত্রে।সূত্রঃ দৈনিক আজাদী ।

Logo-orginal