jamil Ahamed
প্রকাশ: ২০২০-০৩-২৫ ২৩:৫১:২০ || আপডেট: ২০২০-০৩-২৫ ২৩:৫১:২০
নিজের বৃত্তির টাকা বাচিয়ে তা দিয়ে এক শ করোনা টেস্টিং কিট কিনে দেশে পাঠালেন চীনে অধ্যয়নরত এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। মিজানুর রহমান নামের ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানায়।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এক ফেসবুক পোস্টে এমনটা জানিয়েছেন। পোস্টটিতে ৬ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে চার হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই দেশের মানুষের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য মিজানুরকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ফেসবুকে লিখেছেন,
মানবিকতা ও অভিবাদন……
একটি ছেলে চায়না থেকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে যে, সে জয়পুরহাটে কিছু করোনা টেস্টিং কিট পাঠাতে চায়। জয়পুরহাটের দায়িত্বশীল কেউ যেন যোগাযোগ করে। আমার চোখে পড়ায় আমি তাকে তার ফোন নম্বর দিতে বলি। সে নম্বর দিলে আমি ফোন করি।
সে চায়নার নানথোং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে প্রায় গৃহবন্দী। বাইরে বেরুতে পারে না। কিন্তু দেশের জন্য, এলাকার জন্য তার হৃদয়ের আকুতি অনুভব করে আমি অভিভূত। সে মানুষের জন্য কিছু করতে ছটফট করছে। সে কিছু করোনা টেস্টিং কিট পাঠাতে চায়। কোনো উপায় পাচ্ছে না, রাস্তা পাচ্ছে না।
আমি তাকে পুনরায় ফোন করার প্রতিশ্রুতি দিলাম। রাত পোহালে বিমান প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের সহযোগিতা নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষকে রাজি করিয়ে তাকে ফোন দিলাম। আমার ফিরতি ফোন পেয়ে আনন্দে তরুণটির চোখ ঝাপসা হয়ে গেছে তা একজন পিতা হিসেবে হাজার মাইল দূরে বসেও অনুভব করলাম।
তাকে ঠিকানা দিলাম, চায়নার গোয়াংজুতে ইউএস বাংলার জিএসএ অফিসে মালামাল পৌঁছানোর জন্য। সে যে কি খুশী। এই খুশী মিলিয়ন ডলারে কেনা সম্ভব নয়।
সে তার বৃত্তির টাকা বাঁচিয়ে অনেক কষ্ট করে ১০০টি টেস্টিং কিট, টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় এসিড ও ড্রপ কিনে কুরিয়ারে করে গোয়াংজু পৌঁছিয়ে দিয়েছে।
খুব লজ্জা নিয়ে বলেছে, আমি ছাত্র মানুষ মাত্র ১০০টি দিতে পারলাম। ইচ্ছে ছিল কমপক্ষে ৫০০ দেবার। আমি বললাম, তোমার এই ১০০ আমাদের কাছে ১ লাখের সমান। আশা করছি ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ আগামীকাল ও গুলো দেশে আনবে।
ছেলেটির মানবিকতা আমাকে অভিভুত করেছে। এরই নাম দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ।
সূত্রঃ কালের কন্ঠ ।