, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

দূর্নীতিই থমকে দিচ্ছে দেশের অর্থনীতি: কায়সার সিকদার।

প্রকাশ: ২০২০-০৬-২৭ ২৩:১৫:৩৫ || আপডেট: ২০২০-০৬-২৭ ২৩:১৫:৩৬

Spread the love

কায়সার সিকদারঃ একটি দেশকে সম্পূর্ণরূপে বিকল করে দিতে পারে বিষধর দুর্নীতি। উন্নয়নের জয়যাত্রার পিছনে হাজারো রহস্য কুটে কুটে খাচ্ছে সচেতন মহলকে। জিম্বাবুয়ে দেশের সাথে আমরা সবাই পরিচিত।যারা ক্রিকেট নিয়ে বসে থাকেন তারা হয়তো জানেন ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা দিতে পারতে ছিল না জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড।কারণ- জিম্বাবুয়ে সরকারের আমলাদের দুর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছিল যা ক্রিকেট বোর্ড পর্যন্ত এসে দাঁড়াইছিল। জিম্বাবুয়ে সরকার ক্রিকেটে নাক গলাতেই আইসিসি জিম্বাবুয়েকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছিল।
বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন এই ব্যাপারে। ব্রিটিশ আমলেও এমপি–এমএলএদের কেনাবেচা হতো। তরুণ শেখ সাহেব এমএলএদের পাহারা দিয়েও আটকে রাখতে পারতেন না। তারা বলে, টাকা যখন দিচ্ছে, নিই। ভোট না হয় ওদের দিলাম না। শেখ সাহেব লিখেছেন, “এর পূর্বে আমার ধারণা ছিল না যে এমএলএরা এইভাবে টাকা নিতে পারে। এরাই দেশের ও জনগণের প্রতিনিধি!

একটা চক্র বলি-একজন সরকারি কর্মকর্তা সরকারি জায়গায় পুকুর খনন বাবদ ২কোটির ১টা টেন্ডার করল।তার সাক্ষরে তার কয়েকজন সহকর্মী মিলে টাকাটা খেয়ে নিলো।নামেমাত্র পুকুর খনন হলো।তার কিছুদিন পর পুকুরে মাছ চাষ করা বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা আসল।তাও তারা ভাগবাটোয়ারা করে নিলো।মাছ চাষে কি লাভ হলো তার প্রতিবেদনে তারা মাছ সব মরে গেছে বলে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের কিছু দিয়ে সাক্ষর করে নিলো।তার কয়েকদিন পর ওরা প্রতিবেদন দিলো পুকুর পাড়ের বিল্ডিং ভেঙে পুকুরটা ভরাট হয়ে গেলো।
আমাদের দেশে এরকম চক্র অহরহ। এই যেমন কয়েকমাস আগে বালিশ কান্ড।২টা বালিশের দাম কয়েক লক্ষ.. মেডিকেলে ল্যাবের যন্ত্র নিয়ে কতই না দুর্নীতি। আজ সেইসব কর্মকাণ্ডের চরম মূল্য দিচ্ছে জনগণ। করোনার মহামারীর দিনে চিকিৎসা ব্যবস্থার হাল দেখে বলে উঠবে সবাই সরকার চিকিৎসা ক্ষেত্রে নজরেই দেয়নি।কিন্তু সরকারি হিসাবে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।

যেকোনো দুর্যোগ জনগণের চিন্তার কারণ হলেও জনপ্রতিনিধিদের খুশির বার্তা বয়ে আনে।সরকারি দপ্তর থেকে কোটি কোটি টাকা ত্রাণ প্রদান করা হলো, নামে মাত্র জণগণ হয়ে সব ত্রাণ জনপ্রতিনিধিদের গুদাম ভরাট হলো।করোনা মহামারীর দিনে ত্রাণের নয়ছয়ের খবর তো সবারই জানা।প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে দেওয়া ঈদ উপহার নামে আড়াই হাজার টাকার কারসাজি এতোদিনে সবাই ভুলে গেছে।১টা নাম্বার শতবার, তবে খুশির বার্তা হচ্ছে এরকম ৯৮ জন জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে খুঁজ নিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

আকবর হোসাইন, (সাংবাদিক বিবিসি) সে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলল -বাংলাদেশীদের জন্য আগামী ২০ বছর ইউরোপ-আমেরিকার ভিসা বন্ধ করে দিলে দেশের দুর্নীতি ৯৫% বন্ধ হয়ে যাবে।

যাদের সুযোগ আছে তাদের বেশির ভাগ মনে করে এই দেশটা প্রথমে দুধেল গাই,তারপর ডাস্টবিন। আগে খেয়ে নেয়, তারপর উচ্ছিষ্ট ফেলে চলে যায়। বছরে চৌদ্দবার জিনিসের দাম বাড়ে।আমরা বিদ্যুতের বিল বেশি দিবো,গ্যাস বিল বেশি দিবো,গাড়ি ভাড়া বেশি দিবো।কেন বেশি দিবো?তারা যেনো লুটেপুটে খেতে পারে।আর আমাদের জায়গা হয় না হাসপাতালে, মরতে হয় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে।তারা এই দেশটা চুষে খেয়ে নিজ সন্তানের জন্য ইউরোপ-আমেরিকায় সপ্ন গড়ে।যদি সেই সুযোগ না থাকে তাহলে দুর্নীতি এমনিতেই কমে যাবে।

সবশেষে বলতে চাই দুর্নীতির বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলে দেশের অর্থনীতি হোক চাঙ্গা। সরকার যেনো মাদকবিরোধী অভিযানের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে।দেশের ফসল দেশের জনগণই ভোগ করার ব্যবস্থা করে।

Logo-orginal