, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

jamil Ahamed jamil Ahamed

কেনো পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির দাবানল জ্বলছে??

প্রকাশ: ২০২০-০৬-২৪ ১২:১৯:৫১ || আপডেট: ২০২০-০৬-২৪ ১২:১৯:৫২

Spread the love

পার্বত্য এলাকা হচ্ছে বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।যার আয়তন মোট দেশের এক দশমাংশ।এই এলাকাটি বাঙালিদের পূর্ব থেকে আবাসস্থল ছিল।যদিও সমতলের চেয়ে এখানে লোকজন কম ছিল। আর পাহাড়ীদের কথা যদি বলতে যাই তাহলে সত্যিকার অর্থে তারা পূর্ব থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী অধিবাসী ছিলনা। তারা জীবনের তাগিদে ছুটে এসেছিল দিকপালের মত ভারত ও মিয়ানমার থেকে। আস্তে আস্তে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে তাদের বস্তি গড়ে ওঠেছিল। যার প্রমান অনেক, প্রয়াত বোমাংরাজাই বলেছিলেন আমরা কেউ এখানের বাসিন্দা নয়,আমরা এসেছিলাম মিয়ানমার থেকে।সেখানে আমাদের রাজ্য ছিল।শুধু তাই নয় আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসনভার যাদের হাতে ন্যস্ত তাদের অনেকেরও পিতৃভিটা ও জন্ম পার্বত্য চট্টগ্রামে নয়। তাহলে কিভাবে তারা নিজেদের কে এখানকার আদিবাসী দাবী করে ?

আমরা তাদেরকে ক্ষুদ্রনৃগোষ্টী বা উপজাতি বলেই চিনি, তারা নিজেরাও একসময় নিজেদের উপজাতি বলে দাবী করত।কিন্তু সম্প্রতি তারা নিজেদেরকে আদিবাসী বলে যে ধোঁয়া তুলেছে তার পিছনে কিছু কারন আছে।কিছু সার্থন্বেষী উগ্রবাদী উপজাতীয় সন্ত্রাসী নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আজকে নিজেদের স্বজাতিদের মগজ ধোলায় করে ও বন্দুকের নলের থাবার হুমকি দেখিয়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে। যার প্রমান অত্যন্ত পরিষ্কার। স্বজাতিদের কে যখন মগজ ধোলায় করে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আনতে পারেনা তখন টাকা ও ধন-সম্পদের লোভ দেখায়। তখনও যদি সম্ভব না হয় বন্দুকের নলের মুখে তাদেরকে বাধ্য করানো হয়। আজ এভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্তিতিশীল করে তোলা হচ্ছে,পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঙালিরা তো রক্ষা পাচ্ছেইনা বরং ইদানিং ক্ষুদ্র নৃগোষ্টীর ভাই বোনেরাও নিরাপদ নয় এই জনপদে সন্ত্রাসীদের তান্ডবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্টীর সুশীল সমাজ ও দারিদ্র্যপীড়িতরাও আজ শান্তিতে নেই সবুজের সমারোহের এই পার্বত্য চট্টগ্রামে।যার অনেক করুণ প্রমাণ সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে মিডিয়ায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের এই ক্রান্তিলগ্নের পিছনে সবচেয়ে বেশি মদদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। এই আন্তর্জাতিক চক্রান্তের পিছনে সবচেয়ে যে দেশটি জোরালো ভূমিকা পালন করেছে এবং করতেছে সেটি হল আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত।ভারত চতুর্দিক থেকে এই বাংলাদেশের উপর ষড়যন্ত্রে মেতে আছে তা নতুন করে বলার দরকার আছে বলে আমি মনে করিনা। এই দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এমন কোনো ষড়যন্ত্র নেই যা ভারত করেনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। যদিও তা আমাদের অগোচরে, এই দেশের সার্বভৌমত্বকে তছনছ করার জন্য ভারত সরকার হাত দিয়েছে এই দেশের প্রধানত দুটি জিনিসের উপর। একটি রাজনৈতিক কোন্দল ও আরেকটি হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যু। আজকে দেখা যায় সন্ত্রাসীদের যত ক্যাম্প ও আস্তানা আছে সব ভারত সীমান্তে। নিত্যনৈমিত্তিক আধুনিক নতুন অস্ত্র-সরঞ্জাম, প্রশিক্ষন ও অর্থ দিয়ে তাদেরকে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। এত কিছুর পরেও আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক আগেই শান্তি আনতে পারতাম,অনেক আগেই এই জনপদে শান্তির সুবাতাস বিরাজ করতো। শান্তি আসার পেছনে সবচেয়ে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছিল এদেশের সরকার। রাষ্ট্রের সঠিক সিদ্ধান্ত ও পলিসির অভাবেই পার্বত্য সমস্যাটি প্রকট আকার ধারন করেছে। যতগুলো সরকার ক্ষমতায় গেছে কেউ এর জন্য জোরালো মাথা ঘামায়নি,গভীরভাবেও এই সমস্যা নিয়ে কেউ ভাবেনি। যার দরুন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।শুধু তাই নয় পশ্চিমা রাষ্ট্রের কিছু এনজিও সংস্থাও পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড করার পাঁয়তারা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে উপজাতি সন্ত্রাসীদের হয়ে।। আরেকটি গুরুত্ববহ সমস্যা হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশাসনের যারা আছে তারা বেশিরভাগই পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সম্পর্কে অনভিজ্ঞ,যার কারনে তারাও মাথা ঘামায়না এসব নিয়ে, তাদের মনের মধ্যে সবসময় ভয়ভীতি কাজ করে সন্ত্রাসীপ্রবণ এলাকায় কাজ করতে গিয়ে। তাছাড়া কখনোও সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে তড়িৎ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা প্রশাসনের লোকেরা, যার কারনে অনেক সময় তারা বেকায়দায় পড়ে যায়। সম্প্রতি আমরা রাঙামাটিতে দেখতে পাই সেনাবাহিনীর উপর কি অমানবিক নিষ্টুর মারধর করেছিল উপজাতীয় সন্ত্রাসী নারীরা, কিন্তু তার বিপরীতে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া করতে পারেনি সেনাবাহিনীর ভাইয়েরা। কারন উপরের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয় তাদের। সরকার একের পর এক শান্তিচুক্তি করেছে।ককিন্তু শান্তিচুক্তির মাধ্যমে কতটুকু শান্তি এসেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে ?

শান্তিচুক্তির আগে ছিল একটি মাত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন।আর শান্তিচুক্তির পরে হয়েছে প্রায় অবৈধ ৭/৮টির মতো উপজাতীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সংগঠন। বর্তমানে এসকল সংগঠনগুলোকে চাঁদা দিতে হয় কোনো কাজ করতে গেলে এই পার্বত্য চট্টগ্রামে, ব্যবসায়ী থেকে শুরু এমনকি সরকারি কাজে পর্যন্ত এমন কোনো খাত নেয় যেখানে সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে হয় না। এসব সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কিন্তু আবার অসংখ্য গ্রুপ ও গোষ্টীতে বিভক্ত, যার কারনে অনেক সময় চাঁদা নিতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো চাঁদাবাজি, অপহরণ,গুম,খুন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। যার কারনে পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হতে চলেছে।। তাই এখন সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার এবং রাষ্ট্রকর্তাদের সুদূর প্রসারী পলিসি গ্রহন করতে হবে, ভাবতে হবে রাষ্ট্রকর্তাদের। শান্তিচুক্তি এবং স্বাধীনতা – স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় কি ভূমিকা নেয়া যেতে পারে,তা না হলে এদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা যাবেনা।।

মোহাম্মদ তারেক খাঁন

কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ মোবাইল- ০১৫৮৬-১৩০৭৬৮

Logo-orginal