, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

রাঙ্গুনিয়ায় ঘরে থেকে দুই পুলিশ অফিসারের করোনা জয়ের গল্প

প্রকাশ: ২০২০-০৬-০২ ২১:০১:২৪ || আপডেট: ২০২০-০৬-০২ ২১:০১:২৫

Spread the love

ইসমাঈল হোসেন নয়ন,রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ ঘরে থেকেই করোনা জয় করলেন রাঙ্গুনিয়া থানার দুই অফিসার এ এসআই নুরুল করিম ও এ এসআই শওকত আলী। সোমবার (১জুন) তাদের দ্বিতীয় নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে মনোবল শক্ত রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়ে করোনাজয়ী এ এসআই শওকত আলী বলেন, জ্বর,সর্দি, কাশি সহ করোনার কিছু উপসর্গ ছিল তাই গতমাসের ১৬মে নমুনা জমা দিয়েছিলাম। ২০তারিখ জানতে পারলাম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এক মুহূর্তের জন্যও কোনো প্রকার অস্বস্তি বোধ করিনি। চিকিৎসক ও প্রশাসনের মানুষ সহায়তা করেছেন। ওষুধ সেবনের পাশাপাশি গরম পানি পান করতাম, গরম পানির ভাপ নিতাম। গার্গল করতাম। এরপর চিকিৎসাসেবায় ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকি। ২৭মে দ্বিতীয় নমুনা জমা দিই। গতকাল (১জুন) জানতে পারি, ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। পুরেপুরি সুস্থ আছি মনে সাহস বেড়েছে। আজ তৃতীয় নমুনা জমা দিলাম আশা করি তৃতীয় নমুনায় ও নেগেটিভ আসবে।

করোনাজয়ী এ এসআই মো. নুরুল করিম চৌধুরী জানান, গত মাসের ১৩তারিখের দিকে শরীরে করোনার উপসর্গ খুসখুসে কাশি, পাতলা পায়খানা এবং শরীর ব্যাথা দেখা দেয়। অফিসার ইনচার্জ মহোদয়ের অনুমতিক্রমে ১৫ মে নমুনা জমা দিয়ে হোমকোয়ারেন্টানে চলে যায়। ১৯মে জানতে পারি করোনা পজিটিভ। মনোবল হারায়নি বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিলাম। এর পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছি মসলাযুক্ত গরম পানি ব্যবহারে করে। যেমন লং, এলাচি, দারচিনি,লেবু, আদা, রসুন এই সমস্ত মসলা দুই-আড়াই গ্লাস পরিমাণ পানির মধ্যে মিশিয়ে পানিগুলো ১০-১৫মিনিট উত্তপ্ত নাক দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস নিতাম। পাশাপাশি গার্গল, ব্যায়াম সহ প্রতিদিন দুইটা করে জিংক ট্যাবলেট সেবন করেছি। ধীরে ধীরে শরীরের অবস্থা উন্নত হতে থাকলো। ২৭মে দ্বিতীয় নমুনা জমা দিই। সোমবার (১জুন) ফলাফল আসে নেগেটিভ। আজ মঙ্গলবার (২জুন) তৃতীয় নমুনা জমা দিলাম। আশাকরি তৃতীয় নমুনার ফলাফলও নেগেটিভ আসবে।

উল্লেখ্য রাঙ্গুনিয়া থানার এই দুই অফিসার একই বাসায় থাকেন। দুজনের করোনা পজিটিভের ফলাফল একদিনের ব্যবধানে আসলেও গতকাল দ্বিতীয় নমুনার ফলাফল নেগেটিভ একই দিনে আসে। তারা নিয়মিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হেল্পলাইনে যোগাযোগ রেখে নির্দেশ মোতাবেক ঔষধ সেবন করেন। যেমন পাতলা পায়খানার জন্য ওরস্যালাইন ও ফিলমেট ৪০০এমজি, খুসখুসে কাঁশির জন্য এজিথ্রোমাইসিন ৩ দিনে ৩ টা এবং পাশাপাশি এমব্রক্স সিরাপ সেবন করে। শরীরে ব্যথা অনুভূত হওয়ায় নাপা এক্সট্রা এবং প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি’র পাশাপাশি ডিম, দুধ ও শাকসবজি খেয়েছিল। তারা দুজনেই বর্তমানে সুস্থ আছে এবং তৃতীয় নমুনার ফলাফল পাওয়ার পর পুনরায় জনসাধারণকে সচেতন করা তথা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সরকারি দায়িত্ব পালনে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখবে বলে জানায়। বাসায় আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তাদের পরিবারের সদস্য, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, সাংবাদিক, ডাক্তার, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী, শ্রদ্ধেয় জন যারা নিয়মিত শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, চলমান করোনাযুদ্ধে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে এ পর্যন্ত রাঙ্গুনিয়া থানার ৫জন, ওয়াসার ২জন সহ মোট ৭জন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তারা প্রত্যেকে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে ২জনের দ্বিতীয় নমুনার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। বাকী ৫জন চিকিৎসাধীন। সার্বক্ষণিক তাদের খবর নিচ্ছি। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাচ্ছি। আশা করি বাকীরাও সুস্থ হয়ে উঠবে।

Logo-orginal