, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

ভিআইপি দের আরাম আয়েশ, সাধারণদের ঠেলাঠেলি”

প্রকাশ: ২০২০-১০-১৭ ২৩:৪৭:৪৫ || আপডেট: ২০২০-১০-১৭ ২৩:৪৭:৪৬

Spread the love

জয়নাল আবেদীন, মহেশখালীঃ- কক্সবাজারের মহেশখালী ঘাটের ভিআইপি প্রথা বিলুপ্ত করার দাবী যাত্রীদের,কারণ ঘাট পারাপারে নির্দ্বিধায় চলছে নৈরাজ্য ।

ছবিটি ৬নং ঘাটের। এরকম ছবি প্রায় দেখা যায়। তবে এটি খুবই কষ্টদায়ক। যাত্রীদের অভিযোগ, এই নৌরুটে চলাচল করে যাদের উপর ভিআইপি নামের তকমা এমন রাজনীতিবীদ এবং প্রশাসনের শীর্ষ আমল‍া আরাম আয়েশে বোটে ‌উঠার ব্যবস্থা থাকে।

কিন্তু সাধারণ যাত্রীদের প্রতিযোগিতামূলক ঠেলাঠেলি দিয়ে বোটে উঠতে হয। যার ফলে ঘটে দুর্ঘটনা।
যাত্রীদের আরো অভিযোগ একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও নিশ্চুপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রতিদিন বোটে উঠতে গিয়ে কোন না কোন যাত্রী দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মহেশখালী ও কক্সবাজার জেটিঘাটে। ঘাটের অব্যবস্থাপনার কারণে মহিলা, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু থেকে শুরু করে সবশ্রেণী পেশার মানুষ এই তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মূখিন হয়েছে। নানান দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রাণীর বিষয়ে ঘাটে দায়িত্বরতদের কাছে অভিযোগ করে উল্টো দ্বিগুণ হয়রাণীতে পড়তে হয় বলে একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন।
জানা যায়, মহেশখালী উপজেলা থেকে জেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম এই নৌপথ। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও কক্সবাজার ৬নং ও মহেশখালী নৌঘাটে কোন ধরণের পরিবর্তন আসেনি। বরং দিন দিন নতুন নতুন পন্থায় যাত্রীদের হয়রাণী করা হচ্ছে। মনগড়া ঘাট ভাড়া, মালামাল ভাড়া সহ বোট ভাড়া আদায় করে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এদিকে স্পীডবোট প্রতিজন ৭৫ টাকা এবং কাঠের বোট প্রতিজন ৩০ টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও অনেক সময় যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা প্রতিদিনের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

এই ব্যাপারে সমাজকর্মী ফারুক ইকবাল জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি সুক্ষ্মভাবে দুর্নীতি করার একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হলে টিকেট কাউন্টার স্থাপন করতে হবে। যাত্রীরা কাউন্টারে ভাড়া পরিশোধ করে বোটে উঠবে। সেক্ষেত্রে চালকদের হাতে টাকার লেনদেন থাকবেনা। আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতেও পারবেনা। এই দুই ঘাটে টিকেট কাউন্টার স্থাপন করা অতিব জরুরী হয়ে পড়েছে।

শনিবার (১৭অক্টোবর) বিকেল ৪টায় কক্সবাজার ৬নং ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বোট সংকটের কারণে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছে। মহেশখালী ঘাট থেকে বোট আসলে তাতে ঠেলাঠেলি করে অনেকটা প্রতিযোগীতার মত করে যাত্রীরা বোটে উঠার চেষ্টা করে। এসময় বোটে উঠতে গিয়ে ৪/৫ জন যাত্রী কাদায় পড়ে কোমর সমান পানিতে ডুবে যায়। এতে মোবাইল সহ মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। আশেপাশে থাকা যাত্রীরা জানান, এরকম ঘটনা এই ঘাটে নতুন নয়। প্রতিদিন যাত্রীদের অনেকেই এভাবে পানিতে পড়ে যায়। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে- এতসব অনিয়ম ঘটলেও এতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা আমাদের জনপ্রতিনিধিদের কোন মাথাব্যাথা নেই। কারণ যুগ যুগ ধরে তাদেরকে বিশেষ ভিআইপি সুবিধা দেয়া হয় ঘাটে। এই ভিআইপি প্রথা বিলুপ্ত করা হলে ঘাটের অনিয়ম কিছুটা কমবে বলেও জানান তারা। এদিকে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- কক্সবাজার ৬নং ঘাটে খালী বোট বাঁধা থাকলেও চালক সংকটের কারণে মহেশখালী যাচ্ছেনা বলে যাত্রীরা আরো জানান।

এরশাদ, রহিম, ফয়সাল সহ একাধিক যাত্রী জানান, ঘাটে বোট চলাচলের সমন্বয় না থাকায় যাত্রীদের ভীড় বেড়েছে। এছাড়াও চালক না থাকার অযুহাতে ঘাটে কৃত্রিম ভাবে বোট সংকট দেখানো হচ্ছে। কারণ বোট সংকট দেখিয়ে যাত্রীদের হয়রাণী করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। আর ঘাটে অভিযোগবক্স বা অভিযোগ কেন্দ্র না থাকায় এইসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাচ্ছেনা। মহেশখালী ও কক্সবাজার জেটিঘাটে যাত্রীদের অভিযোগ শুনতে অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা জরুরী

Logo-orginal