, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

মহেশখালীর কালামারছড়ায় গৃহবধূ নিখোঁজ, স্বামী পলাতক

প্রকাশ: ২০২০-১০-১৫ ১৩:২২:৪৯ || আপডেট: ২০২০-১০-১৫ ১৩:২২:৫১

Spread the love

জয়নাল আবেদীন,মহেশখালীঃ- মহেশখালীর উপজেলার নলবিলা এলাকায় আফরোজা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূ তিনদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে।

তার বাপের বাড়ির লোকজন বিভিন্নভাবে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাচ্ছে না। কিন্তু ওই গৃহবধূ নিখোঁজের পর থেকে স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পী পলাতক রয়েছে।

আফরোজার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় তার বাবা-মাসহ অন্যান্যরা চরম উৎন্ঠায় রয়েছে। এই ঘটনায় থানায় নিখোঁজ যায়নি করা হয়েছে।

আফরোজা বেগমের বড়ভাই মিজানুর রহমান জানান, উত্তর নলবিলা হাসান বশিরের পুত্র রাকিব হাসান বাপ্পীর সাথে হোয়ানক পুঁছড়ার মোঃ ইসহাকের  এর মেয়ে আফরোজার পারাবারিকভাবে বিয়ে হয়। এটি দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। এর মধ্যে আফরোজার স্বামী মারা যায় এবং হাসান প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলো।

মিজান জানান, রাকিব হাসান বাপ্পীর মা রোকেয়া হাসান গত ১২ অক্টোবর বিকালে আফরোজার বাবাকে ফোন করে জানান, আফরোজা নিখোঁজ হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে আফরোজার বাপের বাড়ির লোকজন তৎপর হয় এবং খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তার খোঁজ পায়নি। কিন্তু আফরোজার নিখোঁজের সাথে সাথেই পলাতক হয়ে যায় স্বামী হাসান। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে স্থানীয় কালারমারছড়া ফাঁড়ির দায়িত্বশীল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শেষে থানার ওসির পরামর্শে  বুধবার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন আফরোজার বাবা মোঃ ইসহাক।

থানায় করা ডায়রি সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই হাসান ও তার মা রোকেয়া হাসান গৃহবধূ আফরোজা আকতারের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। কয়েকবার অমানুষিক নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়েছিলো। এই ঘটনায় আফরোজা আকতার বাদি হয়ে গত ১২ মার্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলো। কিন্তু মামলার পর দু’পক্ষের মীমাংসার ভিত্তিতে সংসার শুরু করে তারা। কিন্তু বাপের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকে আবারো আফরোজা আকতারকে নির্যাতন করে স্বামী হাসান ও শ্বাশুড়ি রোকেয়া হাসান।

আফরোজার বড়ভাই মিজান দাবি করেন, হাসানের প্রথম স্ত্রীর বাড়ি রাজবাড়ি। তাদের ওই সংসারে একটি মেয়ে রয়েছে। কলহের কারণে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়। কিন্তু হাসান আফরোজাকে বিয়ে করার পর আবারো তালাক দেয়া প্রথম স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ শুরু করে। তার (প্রথম স্ত্রী) ইন্ধনেই আফরোজাকে নির্যাতন করে বলে দাবি মিজানের। প্রথম স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ হওয়ায় মূলত অশান্তি শুরু হয়। এমনকি তালাক স্ত্রীর দেয়ার ইন্ধনেই আফরোজার নিখোঁজ ও কোনো অঘটন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে হাসানের মা সাবেক ইউপি সদস্য নানা জনের কথা বলে উল্টো আফরোজার বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের নানা ধরণের হুমকি দিচ্ছে। এমনি আসল ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

আফরোজার পরিবারের আশঙ্কা, আফরোজার কোনো অঘটন ঘটেছে বা বিপদের মধ্যে রয়েছে। তা না হলে কোনোভাবেই তার খোঁজ মিলতো। আফরোজা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। অজানা শঙ্কা তাদের মধ্যে ভর করছে। তারা বলছেন, স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পীর মা রোকেয়া হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ওসির প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্বাশুড়ি রোকেয়া হাসান বলেন, বউ আগেও কয়েকবার কাউকে না বলে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলো। আমাদের মনে হচ্ছে সে এবারও বাপের বাড়ি চলে গেছে। তবে আমার ছেলের সন্ধান পাচ্ছি না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আবদুল হাই বলেন, স্বামী ও স্ত্রী দুজনই নিখোঁজ থাকায় বিষয়টি জটিল দেখা যাচ্ছে। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। ওই গৃহবধূর খোঁজ পেতে যা যা দরকার সব করা হবে।

Logo-orginal